‘শুধু ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি চাকরিজীবী দিয়ে দেশ চলবে না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো : শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের পড়ালেখার বাইরেও বিশেষ দক্ষতা অর্জনের তাগিদ দিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ‘শুধুমাত্র ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি চাকরিজীবী দিয়ে দেশ চলবে না। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রয়োজন। সরকারের পক্ষে সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়।’

রোববার (৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের আওতাধীন দক্ষিণ বাকলিয়ার চর চাক্তাই সিটি করপোরেশন স্কুলে এক অনুষ্ঠানে উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্থানীয় সাংসদ হিসেবে ওই স্কুলের ১৫০ শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ছাত্রজীবনেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভবিষ্যতে আপনারা কি করবেন। জীবনে সফল হতে হলে ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা এখনই নির্ধারণ করতে হবে। শুধুমাত্র স্কুলের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষার মাঝে আটকে থাকলে হবে না। পাঠ্যপুস্তকের পড়ালেখার দরকার অবশ্যই আছে, কিন্তু এর বাইরেও কোনো একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’

‘আমরা বাগান করতে পারি, সেটার একটা দক্ষতার প্রয়োজন আছে। কৃষিভিত্তিক কাজ করতে পারি, সেটারও একটা দক্ষতার দরকার আছে। হাঁস, মুরগি, গরু পালন করবেন ? দক্ষতা ছাড়া সেটাও পারবেন না। শুধুমাত্র ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি চাকরিজীবী দিয়ে দেশ চলবে না। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রয়োজন আছে। সরকারের পক্ষে সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। এটি বিশ্বের কোনো দেশের সরকারের পক্ষেই সম্ভব নয়।’

বেসরকারি বিভিন্ন খাতে দক্ষ মানবসম্পদের চাহিদার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এগুলো সব সরকারি চাকরি নয়, অনেক বেসরকারি চাকরিও আছে। ইন্টারনেট শুধু বিনোদনের জন্য ব্যবহার করলে হবে না। ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেওয়া যায় এবং সেটা নিতে হবে। কোনো কাজই ছোট নয়। ছোট-বড় বিবেচনা না করে যে কোনো কাজেই যদি আমরা প্রশিক্ষিত ও দক্ষ হই, তাহলে কাজের অভাব হবে না।’

‘ব্যবসা করতে গেলেও দক্ষতার প্রয়োজন আছে। কোন পণ্য ভালো হবে, কোন পণ্য কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করা যাবে, সেটার দক্ষতা না থাকলে ব্যবসায় সফল হওয়া যাবে না। কর্মজীবনে সফল হতে হলে বিশেষ কাজের দক্ষতা ও কর্মমুখী শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।’

প্রসঙ্গক্রমে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিয়েও কথা বলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জলবদ্ধতা থেকে রেহাই পেতে হলে নালা-খালে পলিথিন,পানির বোতল, ময়লা ফেলে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। নালা ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গা নয়। নালা হচ্ছে পানি যাওয়ার জন্য। আমাদের ফেলা ময়লা-পলিথিনের কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে তাতে আমরাই দুর্ভোগে পড়বো। আমরা যদি সচেতন না হই, তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে হাজার কোটি টাকার যে প্রকল্প দিয়েছেন তার সুফল আমরা পাব না।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার বিষয় তুলে ধরে সবাইকে মাস্ক পরিধান এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেন উপমন্ত্রী নওফেল।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়ার সভাপতিত্বে এবং নগর যুবলীগের সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান সম্পাদক বখতিয়ার ফারুকের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন- নগর আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, ব্যবসায়ী সৈয়দ ছগীর আহমেদ, বক্সিরহাট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ বাহাদুর, চসিক কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী, বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হক এবং বাকলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সদস্য ইসমাইল চৌধুরী সেলিম।

সারাবাংলা/আরডি/একে