বিজ্ঞাপন

মেয়েদের নিয়ে প্রস্তুত ১০ বছরের অভিজ্ঞ পালশিখর

April 11, 2018 | 4:11 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চলতি বছরের মে থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ নারী জাতীয় দল। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষে মালয়েশিয়া যাবে নারী ক্রিকেট দল। এরপর জুন-জুলাইয়ে আছে আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস সফর। জাহানারা-রুমানারা তার আগে দুই সপ্তাহের প্রস্তুতি ক্যাম্প করবে সিলেটে। বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) থেকে হবে বাঘিনীদের প্রস্তুতির লড়াই।

১২ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত প্রস্তুতি নিয়ে ২৮ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবে মেয়েরা। এ সফরে পাঁচটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলবে রুমানারা। আগামী ৪ মে পচেফস্ট্রুমে ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দলের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের নারীরা। আর ১৭ মে থেকে কিম্বারলিতে শুরু হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

বাংলাদেশ নারী দলের সহকারী কোচ দেবিকা পালশিখর জানালেন নিজের লক্ষ্যের কথা, জানালেন নিজের ছাত্রীদের কথা। দেশের বাইরে আপনার প্রথম দায়িত্ব। কী ধরনের উন্নতি করতে চান? এমন প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে ৩৮ বছর বয়সী পালশিখর জানালেন, ‘গত ছয়-সাত বছর ধরে আমি বাংলাদেশ দলকে দেখেছি। তাদের মধ্যে শক্তি ও আত্মবিশ্বাস আছে। আমার মনে তাদের মধ্যে কিছুটা কৌশলগত ও দলীয় প্রচেষ্টার অভাব আছে। আপনি যখন আরো বড় জায়গায় খেলতে যাবেন, আপনাকে মানসিকভাবে আরো শক্ত হতে হবে। গত ছয় সাত বছরে তারা যা করেছে, তা ভালো। তবে আরো উঁচু পর্যায়ে যেতে তাদের আরো সময় দরকার।’

বিজ্ঞাপন

বোলিং-ফিল্ডিংয়ে নারী দল বরাবরই ভালো করছে। তবে, ব্যাটিং বিভাগে কিছুটা পিছিয়ে টাইগ্রেসরা। মানলেন ভারতীয় এই কোচও, ‘এতো বছর আমি তাদেরকে দূর থেকে দেখেছি। এখন দেখবো কাছ থেকে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, এখনই তাদের বিষয়ে মন্তব্য করলে সেটা অনেক দ্রুত হয়ে যায়। একটা বা দুইটা বছর কাজ করলে হয়তো বুঝতে পারবো।’

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশি নারী খেলোয়াড়দের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেছেন পালশিখর, ‘আমার মনে হয় তাদের মধ্যে খুব ভালো সম্ভাবনা আছে। তাদেরকে এখন কেবল সঠিক পথটা দেখিয়ে দিতে হবে, যাতে তারা সামনে এগোতে পারে। সালমা আছে, জাহানারা আছে, সে অধিনায়কত্বও করেছে। দুই-তিনজন ভালোমানের ক্রিকেটার আছে। আরো যারা আছে, তাদের সাথে মিশতে হবে। তাদেরকে দেখতে হবে।’

সহকারী কোচ হলেও কোন বিভাগে জোর দেবেন পালশিখর, ব্যাটিং নিয়ে যে বড় দুশ্চিন্তা আছে, সেটাতে কী ধরনের পরিবর্তন আনতে পারবেন বলে মনে হয়? এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ‘ভারতে আমি তিনটি বিভাগ নিয়েই কাজ করেছি। এখানে প্রধান কোচ ডেভিড ক্যাপেল আছেন। উনি যে জায়গায় মনে করবেন যে আমার সাহায্য দরকার, আমি তা করতে প্রস্তুত আছি। আমি তিনটি বিভাগেই কাজ করতে প্রস্তুত। যদি এমন হয় ব্যাটিংয়ে তারা বল ৩০ গজও পার করতে পারছে না, তার মানে তাদের পাওয়ার হিটিং দক্ষতা প্রয়োজন। এখানেও সেই ফিটনেসের কথা চলে আসে। তাদের ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

ভারতীয় এই কোচ আপাতত এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করবেন রুমানা-জাহানারা-সালমাদের নিয়ে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তার ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই-বাছাই করেই তাকে নিয়োগ দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে পালশিখর জানালেন, ‘আমি ভারতের মহারাষ্ট্র পুনের। ১৯৯৮ থেকে আমি ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত। ২০১১ সাল পর্যন্ত আমি ক্রিকেট খেলেছি। ভারতের হয়ে খেলেছি ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত। প্রায় তিন বছর জাতীয় দলে খেলেছি। ২০০৯ সাল থেকে আমি কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করি। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আমি সহকারী কোচ হিসেবে ভারতীয় দলের সঙ্গে ছিলাম। আমি ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিনটি বিভাগের কোচিং নিয়েই কাজ করেছি। এর মধ্যে তিন বছর করে আসাম ও মুম্বাই দলের কোচও ছিলাম। বাংলাদেশে আসার আগে গোয়ার কোচ ছিলাম। দুই বছর তাদের সঙ্গে কাজ করেছি। সব মিলিয়ে নয় থেকে দশ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। দেখা যাক বাংলাদেশের মেয়েদের নিয়ে কতোটা কী করতে পারি।’

খুব সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে। চুক্তিতে অল্প সময়ের জন্য হলেও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উন্নতিতে যথেষ্ট করার ইচ্ছে আছে পালশিখরের, ‘আমি যদি দ্রুত মেয়েদের বুঝতে পারি, তাহলে পরিবর্তন আনতে খুব বেশি সময়ের দরকার নেই। তবে তাদের সঠিক কাজটা করার ইচ্ছে থাকতে হবে। সময় খুব বড় ব্যাপার নয়। তারা যদি প্রস্তুত থাকে, তাহলে উন্নতি হবে। সামনে চারটি আসর রয়েছে। পঞ্চম আসরটিই আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আমি ফোকাস করেছি সেটিকে। আমরা টি-টোয়েন্টির দিকেই বেশি মনোযোগ দেবো। নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দিয়ে বিশ্বকাপের দিকে যাত্রা শুরু হবে। সুতরাং সবগুলো স্টেপ নিয়ে না ভেবে আমরা আপাতত একটা একটা আসর ধরে এগোবো।’

বাংলাদেশকে বিশ্বকাপে উঠতে সহায়তা করবেন ভারতীয় এই কোচ। কতটা প্রস্তুত পালশিখর? প্রতিবেশি দেশের এই কোচ জানালেন, ‘উন্নতি যে হবে, সেটা আমি নিশ্চিতভাবেই আশা করতে পারি। ফলাফলটা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারবো না। তারা যদি প্রসেস ঠিক রাখে… ফলাফলটা আসলে কারো হাতে নেই। আমরা জানি, ক্রিকেট খুবই অনিশ্চিত খেলা। যা কিছু হতে পারে।’

সারাবাংলা/এএম/এমআরপি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন