বিজ্ঞাপন

সাংবাদিক এমদাদের ওপর হামলা, জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার চায় ক্র্যাব

January 27, 2022 | 10:07 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক অর্থ সম্পাদক সিনিয়র রিপোর্টার এমদাদুল হক খানের ওপর হামলা হয়েছে। তার বাসায় ঢুকে স্ত্রী ও দুই বাচ্চাদের সামনে তাকে মারধর করা হয়। এমদাদকে বাঁচাতে তার স্ত্রী ও বাচ্চারা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করে খোরশেদ আলম মাসুদ (৪০) ও আরও কয়েকজন।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এমদাদ। রাতে হাতিরঝিল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গতকাল বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে মগবাজারের ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে হাতিরঝিল থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা হয়। মামলায় মাসুদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, তিন বছরের চুক্তিতে প্রায় বছর খানেক আগে ৬৩৬, ফ্লাট নম্বর-২/বি, পেয়ারাবাগ মগবাজারের ফ্লাটটি ১৮ হাজার টাকায় ভাড়া নেন এমদাদ। ৪০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে তিন বছরের চুক্তি করেন তিনি। এর ছয় মাস যেতেই বাসার মালিকের স্বামী খোরশেদ আলম মাসুদ বাসাটি ছেড়ে দিতে বলেন। এমদাদ বলেন, যার কাছ থেকে বাসা ভাড়া নিয়েছি তিনি যেন তাকে বাসা ছাড়ার নোটিশ দেন। না হলে তিনি বাসা ছাড়বেন না। বিষয়টি বাসার মালিককে জানালে তিনি জানান, বাসা ছাড়তে হবে না।

বিজ্ঞাপন

এমদাদ জানান, গতকাল (২৬ জানুয়ারি) রাতে দুই তিন জন বহিরাগত লোকসহ খোরশেদ আলম মাসুদ বাসায় প্রথমে কলিং বেল চাপে। আমার স্ত্রী দরজা খুলে দিলে ধাক্কা মেরে আমার স্ত্রীকে ফেলে দেয়। এরপর বাচ্চাদের সামনে আমাকে এলোপাতারি কিল ঘুষি মারতে থাকে। বাচ্চারা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করে। আমার স্ত্রীর একটি এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেন ছিনিয়ে নেয়। আমাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে আশেপাশের ফ্ল্যাটের লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় তারা গ্যারেজে রাখা আমার একটি মোটরসাইকেল (হিরো হাঙ্ক) ভাঙচুর করেন।

বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকুসহ কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা এমদাদুল হক খানের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে তারা এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাাপাশি ক্র্যাব সদস্যদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও যত্নশীল হওয়ারও আহ্বান জানায় ক্র্যাব।

মাসুদ আলমের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। বর্তমানে খাদ্য পরিদর্শক হিসেবে টাঙ্গাইলে কর্মরত। পাশাপাশি তিনি যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের একজন সহ সভাপতি। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ছাত্রলীগ (রমনা) নেতা ছিলেন। খাদ্য পরিদর্শক কিশোরগঞ্জে থাকা অবস্থায় তিনি ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হন। মগবাজারেই শুধু বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট রয়েছে। যার একটি তার স্ত্রীর নামে। এছাড়া সেগুনবাগিচায় একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কিশোরগঞ্জে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি দুদকের মামলায় পড়েন। মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে। এরপর শাস্তিমূলক তাকে টাঙ্গাইলে বদলি করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে দুই রাইস মিল মালিকের কাছে ৪৭ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে শাস্তিমূলক বদলী করা হয় টাঙ্গাইলে।

খোরশেদ আলম মাসুদ প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জেলেও গিয়েছিলেন। এখন তিনি জামিনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। ক্যাসিনো কান্ডেও তার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

এসব বিষয়ে জানতে খোরশেদ আলম মাসুদের মোবাইলে বেশ কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন