বিজ্ঞাপন

গণবিস্ফোরণের ‘আলামত’ দেখছেন হেফাজতের আমির

February 3, 2022 | 8:09 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

চট্টগ্রাম ব্যুরো: নানা ঘটনা পরম্পরায় বেশ কিছুদিন নীরব থাকার পর কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি নিয়ে সরব হয়েছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটির আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেছেন, ‘এক বছরেরও বেশি সময় ধরে হেফাজতে ইসলাম রাজপথে কোনো কর্মসূচি না দিয়ে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। তবে তৌহিদি জনতার পুঞ্জীভূত ক্ষোভ গণবিস্ফোরণে রূপ নিলে এর দায় সরকারকে বহন করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলামের আমির এসব কথা বলেন। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদরিস গণমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠিয়েছেন।

এর আগে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে গত বছরের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে হেফাজতের নেতাকর্মীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। দেশজুড়ে তাণ্ডবে জড়ান হেফাজতের নেতাকর্মীরা। এতে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর আসে গণমাধ্যমে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় হতাহত, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় তাণ্ডবের পর হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হন। অবশ্য গ্রেফতারের আগে গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের একটি রিসোর্টে কথিত স্ত্রীসহ অবকাশ যাপনে গিয়ে স্থানীয় জনতার হাতে অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। পরে ওই কথিত স্ত্রীর দায়ের করা ধর্ষণের মামলার আসামিও হন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এসব ঘটনা নিয়ে নানামুখী বিতর্কের মুখে পড়ে হেফাজত। একপর্যায়ে ওই বছরের ২৫ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেন তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। ৭ জুন আবার জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির এবং নুরুল ইসলামকে মহাসচিব করে ৩৩ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে দুই নেতাই পরে মারা যান। নেতৃত্বে আসেন মহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

গ্রেফতার হওয়া হেফাজতের নেতাকর্মীদের ‘আলেম-ওলামা, ছাত্র সমাজ ও সাধারণ মুসল্লি’ সম্বোধন করে মহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘আলেমরা কোনো অন্যায় অপরাধে জড়িত নন। ডজন-ডজন মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের কারারুদ্ধ করা হয়েছে। কারাগারে তাদের মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। বন্দিদের সঙ্গে এমন আচরণ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ এবং চরম মানবাধিকারের লঙ্ঘন।’

হেফাজতে ইসলাম দেশের স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলন করে— এমন নতুন লক্ষ্যের কথাও সামনে এনেছেন সংগঠনটির আমির। তার দাবি, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির মধ্যে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের কোনো কর্মসূচি নেই।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘আমার প্রবল ধারণা— প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা নাস্তিক্যবাদী এজেন্টরা সরকার ও হেফাজতের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও দূরত্ব তৈরি করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। তারা তৌহিদি জনতার মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করে দেশে গণবিস্ফোরণ ঘটাতে চায়। হেফাজতে ইসলাম দেশে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা চায় না। এর ফলে প্রায় এক বছরেরও বেশিসময় ধরে রাজপথে কোনো কর্মসূচি না দিয়ে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। তবে তৌহিদি জনতার পুঞ্জিভূত ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গণবিস্ফোরণে রূপ নিলে এর দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন