বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তাতেই দ্রুত ব্রিটেনের স্বীকৃতি পায় বাংলাদেশ

February 4, 2022 | 8:44 am

সারাবাংলা ডেস্ক

পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দিকেই বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতিদানকারীদের মধ্যে লন্ডন অন্যতম। ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ব্রিটেন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন জোটভুক্ত দেশগুলোর কাছে থেকে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি লাভ করার মুহূর্তেই ব্রিটিশ স্বীকৃতিটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

বিজ্ঞাপন

সিদ্ধান্তটি তৎকালীন বিশ্ব-রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ হওয়ার কারণ ছিল এই যে, স্বাধীনতা উত্তর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারকে সমসাময়িক ব্রিটিশ কূটনীতিক ও নীতিনির্ধারকরা জোটনিরপেক্ষ হিসেবেই জানতেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে বাসস এর কূটনৈতিক প্রতিনিধি তানজিম আনোয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি মনে করি লন্ডনে বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তার কারণে যুক্তরাজ্য (বাংলাদেশকে স্বীকৃতি) এ ভূমিকা পালন করে।’

ডিকসন স্মরণ করেন, মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের পক্ষে ব্রিটেনে রাজনৈতিক ও জনগণের অত্যন্ত জোরালো সমর্থন ছিল। ‘মুক্ত নেতা হিসেবে লন্ডনে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর আত্মবিশ্বাসী প্রথম পদক্ষেপ বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যেকে প্রভাবিত করেছিল।

বিজ্ঞাপন

পাকিস্তানি কারাগারে কারাবাস থেকে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ফেরার পথে প্রথমেই নিরপেক্ষ স্থান হিসেবে লন্ডনে যান।

বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থন সত্ত্বেও ঢাকা প্রধান শক্তিধর দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে জোট-নিরপেক্ষ নীতি অবলম্বন করেছিল। যদিও মস্কোর সহায়তার কারণে মনে করা হচ্ছিল যে, বাংলাদেশ মস্কোর পক্ষাবলম্বন করবে।

ড. কামাল তার ‘বাংলাদেশ: কোয়েস্ট ফর ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস’ বইয়ে লিখেছেন, বঙ্গবন্ধু ভারসাম্য রক্ষার জন্য অঞ্চলের বাইরে সেখানে গিয়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি লন্ডন পৌঁছান। সেখানে তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি সেখানে প্রথম সংবাদ সম্মেলন করেন। আর তার পরেই তিনি ১০ জানুয়ারি ব্রিটিশ রয়েল এয়ার ফোর্স কমেট জেট বিমানে করে দিল্লী হয়ে তাঁর প্রিয় স্বাধীন মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন।
ঢাকায় নিযুক্ত বর্তমান ব্রিটিশ দূত ডিকসন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে হিথের সাথে নতুন বাংলাদেশের নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর বৈঠকটিকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর আত্মবিশ্বাসী মনোভাব ও বক্তব্য ছিল অত্যন্ত দৃঢ়।

হাই কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাজ্যের অংশীদারিত্বের এই সূচনা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই শুরু হয়। তাই এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে আমরা একটি অত্যন্ত জোরালো ভিত্তি পেয়েছিলাম।’

ডিকসন বলেন, ওই সময় এটা অত্যন্ত স্পষ্ট ছিল যে, মুক্তিযুদ্ধের শেষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে এবং ভারতীয় সেনারা দ্রুত বাংলাদেশ থেকে চলে যাবে।

তিনি আরও বলেন, ‘এটা স্পষ্ট ছিল যে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে এবং এ জন্যই একটি স্বাধীন দেশের কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বালাদেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য তখন বাংলাদেশকে বিশ্বের স্বীকৃতি দেওয়ার সঠিক সময় ছিল।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন