বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ সুইচ নিজ হাতে বন্ধ করি, এতে সম্মান যায় না: প্রধানমন্ত্রী

April 12, 2018 | 11:43 am

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এক ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে খরচ হয় আমরা কিন্তু আপনাদের কাছ থেকে সেই দাম নিই না। বিদ্যুৎখাতে আমরা ভতুর্কি দিই। খরচের চেয়ে অনেক কম দামে আপনারা বিদ্যৎ পান। বিদ্যুৎ আমাদের মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ তাই উচিৎ হবে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন ও মিতব্যয়ী হওয়া।’

‘আমি যখন ঘর থেকে বের হই কিংবা বাথরুম থেকে বের হই তখন নিজের হাতে সুইচ বন্ধ করি। এতে আমার সম্মান যায় না। নিজের কাজ নিজে করার মধ্যে সম্মানহানির কিছু নাই। আপনারা যখন ঘর থেকে বের হবেন তখন সুইচটি বন্ধ করে যান। আপনার টেলিভিশন চালান, কম্পিউটার চালান এখানে যে লাল আলো জ্বলে থাকে তাতেও বিদ্যুৎ খরচ হয়। মোবাইল-ল্যাপটপ চার্জ শেষে অনেক সময় চার্জার রেখে দেন সেখানেও বিদ্যুৎ খরচ হয়। আপনারা যদি সুইচ বন্ধ করে রাখেন তাতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। এতে আপনাদেরই উপকার হবে, দেখবেন মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল কম আসছে।’

বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ১৫ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ, ভেড়ামারায় ৪১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন ও বিদ্যুৎখাতের কর্মচারীদের ই-লার্নিং ডিজিটাল সিস্টেম কুশলীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এ সব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ ব্যবহারে পরিমিতবোধের অভ্যাস গড়ে তোলার বিষয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল এই মনোভাব রাখলে হবে না। স্কুল কলেজে, অফিস-আদালতে ফ্যান চলে। আপনারা যখনই বাইরে যাবেন নিজ হাতে সুইচটি বন্ধ করে দিন। স্কুলগুলোয় অকারণে ফ্যান যাতে না চলে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেও এই অভ্যাসটা গড়ে তুলতে হবে। কোনোভাবেই বিদ্যুতের অপচয় যেন না হয় খেয়াল রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ বছর পর আমরা ক্ষমতায় আসি ৯৬ সালে। এসে দেখি মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। ৭৫ এর পর যারা ষড়যন্ত্র, ক্যু এর মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে তারা জনগণের ভাগ্যের কোনো উন্নয়ন করেনি। তারা নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন করেছে। মেধাবীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি। আমরা ১৬০০ মেগাওয়াট থেকে বিদ্যুৎ ৪৩০০ মেগাওয়াটে নামিয়ে এনেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ২০০১ সালে ক্ষমতায় অাসতে পারিনি। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে দেখি ৪৩০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ হয়ে গেছে ৩২০০ মেগাওয়াটে। মানুষ সামনের দিকে অগ্রসর হয়। আর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকলে দেশ পিছিয়ে যায়। মানুষ বিদ্যুৎ পায়নি কিন্তু খাম্বা পেয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় তারা খাম্বা নির্মাণ করেছিল। সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান খাম্বা নির্মাণের ব্যবসা করেছিলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আগে সরকারিভাবে বিদ্যুৎ উৎপান করা হতো, আমরা বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিই। এখন আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ১৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি এলাকা থেকে যাতে অন্ধকার দূর হয়, বিদ্যুতের আলো পৌঁছায় এ জন্য আমরা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর জোর দিয়েছি। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা দিনাজপুরে প্রথম কয়লাভিত্তিক প্রকল্প হাতে নিই। সেটির এখন তৃতীয় ফেজ নির্মাণ করা হচ্ছে।’

‘আমরা ১৫ উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় এনেছি। এ সব এলাকার মানুষ এখন বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করে নানা সুবিধা পাবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেওয়া। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করব। ওই সময়ে আমরা ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছি। মানুষের জীবনযাত্রার মান যত উন্নয়ন হবে, বিদ্যুতের চাহিদা তত বাড়বে। আমরা ১০০ টি শিল্পাঞ্চল করছি সেখানেও আমাদের বিদ্যুৎ দরকার হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। একটা মানুষও না খেয়ে থাকবে না, সবাই চিকিৎসার সুযোগ পাবে, ঘর পাবে এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা নির্মাণের স্বপ্নপূরণ হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন