বিজ্ঞাপন

আমীর খসরুর ফোনালাপ ফাঁসের মামলা পুনঃতদন্ত চান দস্তগীর

February 16, 2022 | 2:37 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: টেলিফোনের কথোপথন ফাঁসের মামলায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে আনা অভিযোগ থেকে বিএনপি নেতা আমীর মাহমুদ চৌধুরীকে অব্যাহতি দিয়ে দাখিল করা অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন দাখিল করা হয়েছে। মামলার বাদী নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর উচ্চতর নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে অথবা বিচার বিভাগের অধীনে পুনঃতদন্ত চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ এস কে এম তোফায়েল হাছানের আদালতে এ আবেদন করা হয়েছে।

বাদীর আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলাটি করা হয়েছিল বিশেষ ক্ষমতা ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে। তদন্তকারী কর্মকর্তা যে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগের প্রমাণ পেলেও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে পাননি। আমরা এর বিরুদ্ধে নারাজি দিয়ে বলেছি, এই অভিযোগপত্র সাংঘর্ষিক। যে উপাদানের ভিত্তিতে তিনি বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছেন, সেই উপাদান তথ্যপ্রযুক্তি আইনে না পাওয়ার কোনো যুক্তি নেই। এজন্য আমরা এটিকে একটি মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন হিসেবে উল্লেখ করেছি।’

আদালত প্রাথমিক শুনানি শেষে নারাজি আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন বলে জানিয়েছেন ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহিদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত হয়। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের মধ্যে আমীর খসরুর মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে কুমিল্লায় অবস্থানরত তৎকালীন ছাত্রদল নেতা মিলহানুর রহমান নাওমীর টেলিফোনে একটি কথোপকথন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আমীর খসরুর কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, তিনি ওই কর্মীকে বলছেন ঢাকায় এসে লোকজন নিয়ে নেমে পড়তে।

ওই বছরের ৪ আগস্ট বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। মামলায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত ও ষড়যন্ত্রের চেষ্টার অভিযোগ এনে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

বিজ্ঞাপন

মামলায় জাকারিয়া দস্তগীর দাবি করেন, আমীর খসরুর উসকানির জেরে নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তার কথার জেরেই ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা হয়।

ওই মামলায় পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে মিলহানুর রহমান নাওমীকেও আসামি করা হয়, যদিও মামলার এজাহারে তার নাম ছিল না। একই মামলায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও নাওমী দু’জনকেই কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

গত বছরের ২২ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপপরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় গুহ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মিলহানুর রহমান নাওমীকে অভিযুক্ত করা হয়।

টেলিফোনে কথোপকথনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এবং অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ধারায় অভিযোগপত্রটি দাখিল করা হয়। তবে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বাদী জাকারিয়া দস্তগীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ছাত্রদল নেতার কথোপকথনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। সমগ্র দেশবাসী শুনেছে। এর ফলে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে জনমনে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়। ঢাকা-চট্টগ্রামে বিশৃঙ্খলা হয়। অথচ তদন্তকারী কর্মকর্তা সেসব বিষয়কে আমলে না নিয়ে একপেশে, মনগড়া, ভিত্তিহীন প্রতিবেদন দিয়েছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’

নারাজি আবেদন দাখিলের সময় মামলার সাক্ষী চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইয়াছিন আরাফাত কচি ও জয়নাল উদ্দিন জাহেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মঈন শাহরিয়ার, উপ-প্রচার সম্পাদক আব্দুল হালিম মিথুন, এফ এম আনসারুল্লাহ সৌরভ ও শেখ শরফুদ্দিন সৌরভ আদালতে হাজির ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন