বিজ্ঞাপন

কলাগাছের শহিদ মিনার

February 20, 2022 | 12:27 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বরিশাল: বরিশালের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই। আর যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার আছে, সেগুলো অযত্নে-অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। প্রায় প্রতিটি শহিদ মিনার ধুলায় মলিন হয়ে আছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে শহিদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনই করা হয় না।

বিজ্ঞাপন

শহিদ মিনার নেই এমন কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে অস্থায়ীভাবে কলাগাছের শহিদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার না বানিয়ে শুধু আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিল করে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে তাও করা হয় না।

তবে শিক্ষকরা জানান, শিক্ষা বিভাগ শহীদ মিনার নির্মাণের আদেশ দিলেও সরকারিভাবে বাজেট না থাকায় আদেশ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নগরীর ঐতিহ্যবাহী কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নেই শহিদ মিনার। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আর্থিক সংকট ও পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় এতদিন শহিদ মিনার নির্মাণ করতে পারিনি। তবে খুব শিগগিরই আমরা শহিদ মিনার নির্মাণের কাজ শুরু করব। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও শিক্ষার্থীদের র‍্যালি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে যাব।’

বিজ্ঞাপন

নগরীর মথুরানাথ পাবলিক স্কুল, আলেকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নব আদর্শ বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও নেই শহিদ মিনার।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী বরিশালে রয়েছে ৯২টি। এরমধ্যে ৬৮টিতে শহিদ মিনার আছে, ২৪টিতে নেই। স্কুল রয়েছে ৪৫২টি। এরমধ্যে ৩৭০টিতে শহিদ মিনার আছে, ৮২টিতে নেই। মাদরাসা আছে ২৩৫টি। এরমধ্যে ৩০টিতে শহিদ মিনার আছে। বাকি ২০৫ টিতে শহিদ মিনার নেই।

বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মজুমদার বলেন, ‘বর্তমানে বরিশাল জেলায় ১৫৯১টি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। এরমধ্যে শহিদ মিনার আছে মাত্র ২২১টি প্রতিষ্ঠানে।’

বিজ্ঞাপন

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘একটি শহিদ মিনার বানাতে কত টাকা লাগে! কমিটি কিংবা জনপ্রতিনিধি মিলেই বানাতে পারে। তারা তা না বানিয়ে করে সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৫২ সালে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবিতে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে শহিদ মিনারের প্রয়োজন। বর্তমান প্রজন্ম ২১ ফেব্রুয়ারি কেনো পালন করে সে সব বিষয়ে জানতে হবে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই, সেখানে শহিদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজন।’

বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. সোহেল মারুফ বলেন, ‘প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা বাধ্যতামূলক। তা বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয়ে করতে হবে। তাদের শহিদ মিনার নির্মাণ করতে যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, তাহলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন