বিজ্ঞাপন

২২ মার্চের পর নয়াপল্টনে ‘জনতার উচ্চ আদালত’ বসাবেন নাসিম

February 22, 2022 | 6:19 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ২২ মার্চ থেকে ২ এপ্রিলের মধ্যে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘জনতার উচ্চ আদালত’ বসানোর ঘোষণা দিয়েছেন দলটির পুনর্গঠনের উদ্যোক্তা কামরুল হাসান নাসিম।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউব/ফেসবুকে ৫২ মিনিটের ভিডিওবার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ, রাজনীতি, রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক সমীকরণ, রাজনৈতিক অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের আদ্যোপান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অন্ধকারে নয়, দিনের আলোয় ২২ মার্চ থেকে ২ এপ্রিলের মধ্যে বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী জনতার উচ্চ আদালত বসাব। করা হবে দলীয় বিপ্লব এবং তাৎক্ষণিকভাবেই একটি ক্রেডিবল কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের নেতা নির্বাচন করা হবে।’

কামরুল হাসান নাসিম ভিডিওবার্তায় পুনরায় তাগিদ রেখে বলেন, ‘রক্তপাত নয়, সহযোগিতার রাজনীতি করে বেগম জিয়া ও তারেক রহমানসহ সবাইকে এই উচ্চ আদালত বসানোর জন্য রাজি হতে হবে। কারণ, দলটির পুনর্গঠন সেরে ফেলার পর আমাদের সরকারের অনৈতিক দিকগুলোকে মোকাবিলা করে একটি কার্যকর আন্দোলন করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’, ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী)’, ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপ (মোজাফফর)’ এবং কর্নেল তাহের-সিরাজুল আলম খানের ‘জাসদ’কে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল হিসেবে উল্লেখ করে নাসিম বলেন, ‘এই চারটি দলের বিকাশ সাধিত হলে আমাদের আজকের দিনে ৪০টি রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন হতো না। দেশে রাজনীতি থাকত, এখন কিচ্ছু নেই। জনস্বার্থ নিয়ে রাজনীতি নেই। সবাই ক্ষমতায় যেতে চায়, থাকতে চায়।’

চারু মজুমদার, মওলানা ভাসানী ও যাদু মিয়ার ত্রিভুজ রাজনীতির সমীকরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে চ্যালেঞ্জ করার মতো রাজনীতিক তারাই কেবল ছিলেন। কিন্তু, এখন কি শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কেউ আছে? কাজেই বাংলাদেশের স্বার্থ নিশ্চিত করতে হলে এমন কিছু করা যাবে না, যার খেসারত বাংলাদেশকে দিতে হয়। যদি শেখ হাসিনার কাছে দেশ নিরাপদে থাকে, তবে দেশের স্বার্থকেই বড় করে দেখতে হবে।’

নাসিম বলছেন, ‘বর্তমান সরকারের উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ বলার বাস্তবতা আসলে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কাগজে-কলমে নেই। থাকার কথাও না। বললেই বা ঘোষণা করলেই আজকের দিনের পাউরুটির দাম ৬০ টাকা থাকলে কাল তা ১৩০ টাকা হতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন বা প্রক্রিয়ায় তাই করতে হবে। কিন্তু, সে ঝুঁকি নেয়নি বাংলাদেশ। তবে যেভাবে সরকার বলছে, দেশ এগোচ্ছে, প্রকৃত বাস্তবতা তা নয়। এখনো হাত পাততে হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর দাম বেড়েই চলেছে, জনগণের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সমন্বয় সাধনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আমাদেরকে ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। এই ফাঁকির অনুসন্ধানে যেতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি মনে করিয়ে দেন, মৌলবাদী শক্তির উত্থানকে বিনষ্ট করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যেই ক্ষমতা সীমাবদ্ধ থাকুক। তবে সেই বিএনপির নেতৃত্বে বেগম জিয়া কিংবা তারেক রহমান নয়, যোগ্য কাউকে গণতান্ত্রিক পন্থায় শীর্ষ নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে।

তারেক রহমানের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গত ১২ বছরে যেহেতু বাংলাদেশে এসে কারাবন্দিত্ব নেওয়ার ঝুঁকি তারেক রহমান নিতে পারেননি, তাকে বিএনপির সব সর্বস্ব নেতা মানার কিছু নেই।’

২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারি নাসিম দলের পুনর্গঠন চেয়ে আলোচনায় আসেন। অতপর ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী জনতার নিম্ন আদালত বসাতে তিনি সক্ষম হন। দলের পাঁচটি অসুখ হয়েছে বলে তিনি বাদী হিসাবে সে সময় দাঁড়িয়ে উপস্থিত জাতীয়তাবাদী জনতার কাছে দুইটি রায় চান। একটি হলো— দলের গঠনতন্ত্র স্থগিত করা, আরেকটি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই বসবে জাতীয়তাবাদী জনতার উচ্চ প্রতীকী আদালত। অসুখগুলো হলো— দল জাতীয়তাবাদী থেকে জামায়াতেবাদী হয়ে পড়েছে, দলটি নাশকতাকে সঙ্গী করেছে, বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, দল পরিচালনায় বেগম জিয়া ও তারেক রহমান ব্যর্থ এবং জনস্বার্থ সংরক্ষণের রাজনীতি করা হচ্ছে না।

নাসিম এরপরই তার আহুত কর্মসূচিকে দলীয় বলে ঘোষণা করেন এবং বিপ্লবের মহড়া হিসেবে দল ও তার অনুসারীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২০১৬ সালে ২ জানুয়ারি, ১৭ জানুয়ারি, ৫ সেপ্টেম্বর ও ১৭ নভেম্বর চারবার করে গেলে প্রত্যেকবারই প্রতিহত হয়ে ফিরে আসেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন