বিজ্ঞাপন

গণফোরামের মোকাব্বির ও মন্টু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২

March 12, 2022 | 10:59 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণফোরামের দুই পক্ষ মোকাব্বির খান ও মোস্তফা মহসীন মন্টুর গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে দুইজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। শনিবার (১২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান গ্রুপের সম্মেলন ছিল জাতীয় প্রেস ক্লাবে। অন্যদিকে গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসীন মন্টুর গ্রুপের মানববন্ধন ছিল প্রেস ক্লাবের সামনে। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী প্রেস ক্লাবের ভেতরে ও বাইরে অবস্থান নেয় বিবদমান দুইপক্ষ। একপর্যায়ে মন্টু গ্রুপের নেতাকর্মীরা মোকাব্বির খানের সম্মেলন অবৈধ বলে ভেতরে ঢুকে পড়েন। তারা মঞ্চের ব্যানার ও চেয়ার ভাঙচুর করেন। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিতে দুইজন আহত হয়েছেন।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।

বিজ্ঞাপন

মুকাব্বির খান গ্রুপের সম্মেলনে হামলার বিষয়ে দলটির স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আলতাফ হোসেন বলেন, প্রতিহিংসামূলক অতর্কিত হামলা করেছে। এটা খুবই দুঃখজনক।

তিনি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, গণফোরামের প্রতিষ্ঠা ড. কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে তারা (মহসীন মোস্তফা মন্টু গ্রুপ) একটি কমিটি করেছে। এটা কি কখনো সম্ভব?

অন্যদিকে মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমরা ড. কামাল হোসেনের অনুমতি নিয়ে স্বচ্ছ একটি সম্মেলন করেছি। কামাল হোসেন সম্মেলনে সম্মতি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। তিনি সম্মেলনের সফলতা কামনা করেছেন। হঠাৎ করে এই গ্রুপটি একটি অশুভ শক্তির ইঙ্গিতে এই জাতীয় সম্মেলন করছে। একই সময় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ছিল আমাদের। মোকাব্বির খান গ্রুপের কিছু কর্মী অহেতুক উস্কানি দিয়ে যাচ্ছিল আমাদের নেতাকর্মীদের। একপর্যায়ে তারা আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে এডভোকেট মহসিন রশিদসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতা আহত হয়েছেন। আমাদের অবস্থান ও সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা বিকেল চারটায় প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে তুলে ধরব।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: ড. কামালকে আইনি নোটিশ

বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ। বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সদস্যও ছিলেন তিনি। নব্বইয়ের দশকে মতবিভেদের জের ধরে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গিয়ে গণফোরাম গড়ে তোলেন ড. কামাল। সে সময় দলটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মোস্তফা মোহসীন মন্টু।

সময়ের পরিক্রমায় গণফোরামে বিভক্তি দেখা দেয়। ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল দলের বিশেষ কাউন্সিলের পর গণফোরামের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। ওই সময় মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে বাদ দিয়ে ড. রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করার পর গণফোরাম কার্যত দু’টি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এরপর দুই অংশের মধ্যে বহিষ্কার, পাল্টা বহিষ্কারের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে রেজা কিবরিয়া গণফোরাম থেকে সরে দাঁড়ালে সেই অংশের নেতৃত্বে উঠে আসেন মোকাব্বির খান। উভয় অংশই ড. কামালকে নিজেদের নেতা হিসেবে মেনে আসছেন।

এর মধ্যেই মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের অংশটি গত ৩ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে। সেখানে মন্টুকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট সুব্রতকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা হয়। গণফোরাম নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হওয়ায় নবনির্বাচিত কমিটির বিষয়টি তারা চিঠি দিয়ে জানায় কমিশনকে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি এই কমিটির সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই জানিয়ে ড. কামাল চিঠি দিলে গণফোরামের বিভক্তি নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দেয়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে মোকাব্বির খানের নেতৃত্বাধীন অংশ ১২ মার্চ কাউন্সিল ঘোষণা করলে ড. কামাল হোসেনকে আইনি নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন অংশের নেতারা জানিয়েছিলেন, আজকের সম্মেলন হলে এবং সেখানে ড. কামাল উপস্থিত হলে তারা আইনি ব্যবস্থা নেবেন। এর মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটল।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন