বিজ্ঞাপন

সড়ক নিরাপত্তা বাড়াতে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

March 29, 2022 | 8:31 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ ক্ষতি হয় বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে অনিরাপদ সড়ক অবকাঠামোকে। এ পরিস্থিতিতে সড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও প্রাণহানি কমিয়ে আনতে বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ৩৫ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৮ মার্চ) ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির পর্ষদ সভায় এই ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে দেওয়া সহজ শর্তে ঋণ ৩০ বছরের মধ্যে শোধ করতে হবে। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড থাকবে, যে সময়ে ঋণের কিস্তি বা আসল বা সুদ কিছুই পরিশোধ করতে হবে না।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্প’-এর আওতায় দেওয়া এই ঋণ বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক নিরাপত্তায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সহায়তা করবে।

বিশ্বব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাইলট প্রকল্পের আওতায় দু’টি জাতীয় মহাসড়ক গাজীপুর-এলেঙ্গা ও নাটোর থেকে নবাবগঞ্জ সড়কে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এতে উন্নত প্রকৌশল নকশা, প্রয়োজনীয় সড়ক চিহ্ন, পথচারীদের পারাপারের সুবিধা, গতিরোধকসহ অন্যান্য জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দু’টি মহাসড়কে বিদ্যমান ঝুঁকি ও দুর্ঘটনা ৩০ শতাংশ কমবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।

বিজ্ঞাপন

সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশে স্থায়ী প্রতিবন্ধকতার সবচেয়ে বড় কারণ। পাশাপাশি শিশুমৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। এতে দরিদ্র পরিবারগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের জন্য সড়ক নিরাপত্তা জোরদার করা খুবই জরুরি। দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বব্যাংকের সহায়তার এটি প্রথম সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্প।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রকল্পটি একটি দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় কর্মসূচি এবং একটি জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কৌশল উন্নয়নে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্তিশালী করবে। এর মাধ্যমে নির্বাচিত কিছু শহর এলাকা এবং জেলা সড়কগুলোর নিরাপত্তায় পাইলট কর্মসূচি নেওয়া হবে। একইসঙ্গে ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে টহলের সক্ষমতাও বাড়ানো হবে। পাশাপাশি যানবাহনের গতি যেন নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং উচ্চ গতির ঝুঁকিপূর্ণ চালকদের শনাক্ত করা যায়, এ জন্য স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যেমন— সিসিটিভি, ইলেকট্রনিক মেসেজিং, টহল যান বাড়ানো এবং দুর্ঘটনা-পরবর্তী উদ্ধারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করার সরঞ্জাম বাড়ানো হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে যারা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন, তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। এ জন্য একটি টোল-ফ্রি নম্বরের মাধ্যমে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে সড়ক মহাসড়কের পাশের নির্দিষ্ট জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে জরুরি চিকিৎসাসেবা বাড়ানো হবে, যেন দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু কমানো যায়। এ ছাড়া দুর্ঘটনা-পরবর্তী ট্রমা কাটিয়ে উঠতে আহতদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে দেওয়া সহজ শর্তে ঋণ ৩০ বছরের মধ্যে শোধ করতে হবে। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড থাকবে, যে সময়ে ঋণের কিস্তি বা আসল বা সুদ কিছুই পরিশোধ করতে হবে না।

সাম্প্রতিক একটি সড়ক দুর্ঘটনার ছবি

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন