বিজ্ঞাপন

শেষ দিনের বিপর্যয়ে বড় হার বাংলাদেশের

April 4, 2022 | 3:08 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

১০ ওভারে ৩২ রানের বিনিময়ে কেশভ মহারাজ তুলে নিলেন বাংলাদেশের ৭ উইকেট। এতেই বাংলাদেশ অলআউট ৫৩ রানে। আর দক্ষিণ আফ্রিকা পায় ২২০ রানের বিশাল জয়।

বিজ্ঞাপন

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। এর আগে ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৩ রানে অলআউট হওয়া ইনিংসটিই বাংলাদেশের দলীয় সর্বোনিম্ন স্কোর। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের সর্বোনিম্ন স্কোর। এর আগে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোনিম্ন দলীয় স্কোর ছিল ৯০।

বাংলাদেশের সামনে ২৭৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে কেশভ মহারাজ আর সাইমন হারমারের স্পিন বিষে নীল বাংলাদেশের ব্যাটাররা। মাত্র ৫৩ রানে অলআউট হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উপহার দেয় ২২০ রানের বিশাল জয়।

বিজ্ঞাপন

২৭৪ রানের লক্ষ্যে চতুর্থ দিনের শেষ দিকে এসে ব্যাট করতে নেমেছিল বাংলাদেশ। ১১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে চতুর্থ দিন শেষ করে বাংলাদেশ। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম আর নাজমুল হোসেন শান্তর কাঁধে ভর দিয়ে বাংলাদেশ লড়াইয়ের স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু পঞ্চম দিনের প্রথম ওভারেই কেশভ মহারাজের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরলেন মুশফিক। আর বাংলাদেশ ১২ রানেই হারাল চতুর্থ উইকেট। এরপরই ফেরেন লিটন দাসও।

ইনিংসের ৭ম ওভার আর ৫ম দিনের প্রথম ওভার। কেশভ মহারাজের প্রথম বলটি মিড অনে ড্রাইভ করে এক রান নিয়ে মুশফিককে স্ট্রাইক দিলেন শান্ত। পরের তিন বল দেখেশুনেই ডিফেন্স করলেন মুশি কিন্তু পঞ্চম বলটিতে এসেই খেই হারালেন তিনি।

পঞ্চম বলটিও ডিফেন্স করতে গিয়ে ব্যর্থ হন পুরোপুরি। বল সোজা গিয়ে লাগে মুশফিকুর রহিমের পায়ে, দক্ষিণ আফ্রিকার জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নিলেন মুশফিক। তবে রিভিউতে দেখা গেল বল ট্র্যাকিংয়ে মুশফিকের ব্যাটেই লাগেনি বল আর বলও লাগছে স্টাম্পে। থার্ড আম্পায়ারও আউট দিলেন।

বিজ্ঞাপন

মুশফিকুর রহিম ফিরলেন ৫ বলে কোনো রান না করেই। আর বাংলাদেশ ১২ রানে হারাল ৪ উইকেট। এরপর উইকেটে আসেন লিটন দাস। তবে তিনিও টিকতে পারেননি বেশি সময়। ৯ম ওভারের পঞ্চম বলে মহারাজের বলেই হারমারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন লিটনও। আউট হওয়ার আগে লীটন ৬ বলে ২ রান করেন। আর বাংলাদেশ ১৬ রানে ৫ম উইকেট হারায়।

এরপর ইনিংসের ৯ম ওভারে লিটন দাস ফিরলেন দলীয় ১৬ রানে। এরপর ১০ রান যোগ হতে ফিরে গেলেন ইয়াসির আলী রাব্বিও। এতেই বাংলাদেশের সামনে লজ্জার সেই রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছিল। এবার কি তবে ৪৩ রানের নিচেই থামতে হবে বাংলাদেশকে? নিজেদের ইতিহাসে টেস্টে সর্বোনিম্ন স্কোরেই থামবে বাংলাদেশ? কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই লজ্জা এড়িয়েছে বাংলাদেশ।

আটে ব্যাট করতে নামা তাসকিন আহমেদ ৬ বলে ১১ রান করলে বাংলাদেশ এড়ায় ৪৩ রানে অলআউটের শংকা। এছাড়া টপ অর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত ৫২ বলে ২৬ রান করেন। তবে সর্বোনিম্ন রানের লজ্জা এড়ালেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বোনিম্ন দলীয় স্কোরের লজ্জা এড়াতে পারার সম্ভাবনা ক্ষীণ। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোনিম্ন দলীয় সংগ্রহ ৯০। ২০১৭ সালে পচেফস্ট্রুমে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ৯০রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

স্পিন স্বর্গ বাংলাদেশের ব্যাটাররা কুপোকাত স্পিনেই। কেশভ মহারাজ আর সাইমন হারমারের স্পিন বিষে নীল বাংলাদেশের ব্যাটাররা। কেশভ ৮ ওভারে ২৯ রানে তুলে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট আর সাইমন হারমার ৮ ওভারে ২১ রানে নিয়েছেন তিনটি উইকেট। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এছাড়া জয় ৪, সাদমান ০, মুমিনুল ২, মুশফিকুর ০, লিটন ২, ইয়াসির আলী ৫ আর মেহেদি মিরাজ ফেরেন ০ রানে। শেষ দিকে এসে তাসকিন ১৭ বলে ১৪ রান করে ফিরলে বাংলাদেশ ৫৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। আর এতেই ২২০ রানের বড় হার দেখে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড

প্রথম ইনিংস

দক্ষিণ আফ্রিকা: ১২১ ওভার; ৩৬৭/১০; (এলগার ৬৭, আরউই ৪১, পিটারসেন ১৯, বাভুমা ৯৩, রিকেল্টন ২১, ভেরেইনা ২৮, মালদার ০, কেশভ ১৯, হারমার ৩৮*, উইলিয়ামস ১২, অলিভিয়ের ১২); (তাসকিন ২৩-৪-৬৯-০, ইবাদত ২৯-১০-৮৬-২, খালেদ ২৫-৩-৯২-৪, মিরাজ ৪০-৮-৯৪-৩, মুমিনুল ৪-০-১৭-০)।

বাংলাদেশ: ১১৫.৫ ওভার; ২৯৮/১০; (জয় ১৩৭, সাদমান ৯, শান্ত ৩৮, মুমিনুল ০, মুশফিক ৭, তাসকিন ১, লিটন ৪১, ইয়াসির ২২, মিরাজ ২৯, খালেদ -, এবাদত ০*); (অলিভিয়ের ১৫-৫-৩৬-১, উইলিয়ামস ১৮.৫-৩-৫৪-১, হারমার ৪০-১২-১০৩-৪, কেশভ মহারাজ ৩৭-১৫-৬৫-০, এলগার ১-০-৮-০, মালদার ৪-১-২৩-১)।

দ্বিতীয় ইনিংস

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৭৪ ওভার, ২০৪/১০, (আরউই ৮, এলগার ৬৪, পিটারসেন ৩৬, বাভুমা ৪, রিকেল্টন ৩৯*, ভেরিনা ৬, মালদার ১১, কেশভ ৫, হারমার ১১, উইলিয়ামস ০, অলিভিয়ের ০); (খালেদ ১৩-১-৩৩-০, মিরাজ ৩৫-৬-৮৫-৩, শান্ত ১-০-৩-০, এবাদত ১৩-১-৪০-৩, মুমিনুল ১-১-০-০, তাসকিন ১১-১-২৪-২)

বাংলাদেশ: ২০ ওভার; ৫৩/১০; (জয় ৪, সাদমান ০, শান্ত ২৬, মুমিনুল ২, মুশফিকুর ০, লিটন ২, ইয়াসির ৫, মিরাজ ০, তাসকিন ১৪, খালেদ ০, এবাদত ০*); (কেশভ ১০-০-৩২-৭, হারমার ৯-৩-২১-৩)।

ফলাফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ২২০ রানে জয়ী।

টস: বাংলাদেশ টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়।

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার সিরিজের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভি। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র‍্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে খেলা। অনলাইনে র‍্যাবিটহোলে খেলা দেখতে ব্রাউজ করুন https://www.rabbitholebd.com/

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন