বিজ্ঞাপন

সারে ভর্তুকি দরকার আরও ৪ হাজার কোটি টাকা

April 12, 2022 | 2:30 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: একদিকে করোনাভাইরাসের প্রভাব, অন্যদিকে রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ; এই দুই ইস্যুতে বিশ্ববাজারে সারের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। যার প্রভাব পড়েছে দেশের কৃষি খাতে। কৃষিমন্ত্রী ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, গেল অর্থবছরে সারে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিলো তা দিয়ে আগামী জুন পর্যন্ত যেতে দরকার আরও চার হাজার কোটি টাকা। যা এর আগের অর্থ বছরের চেয়ে চার গুণ বেশি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সচিবালয়ে সার বিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ভর্তুকিতে লেগেছিল ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে বরাদ্দ দেওয়া হয় ২৭ হাজার কোটি টাকা। যা দিয়ে আগামী জুন পর্যন্ত চালিয়ে নিতে দরকার আরও অন্তত চার হাজার কোটি টাকা।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে চাহিদার বিপরীতে দেশে সব ধরনের সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। সারের কোনো সংকট নেই। বিএনপির শাসন আমলে সারসহ কৃষি উপকরণের চরম সংকট ছিল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও কৃষকরা সার পায় নি। সারের জন্য কৃষকদের জীবন দিতে হয়েছিল। সারের জন্য বিএনপি সরকার ১৯৯৫ সালে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছিল। বিপরীতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সারের উৎপাদন ও আমদানি অব্যাহত রেখেছে। গত ১৩ বছরে সারসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের কোনো সংকট হয়নি।

বিজ্ঞাপন

বর্তমান সময়ে খাদ্য নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, করোনা ও যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম অনেক বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলেছে, বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম মার্চ মাসে রেকর্ড সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা বিশ্বে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা আরও বেড়েছে। কানাডার মতো উন্নত দেশ যারা খাদ্য রফতানি করে, সেখানে মানুষ লাইনে ধরে রুটির প্যাকেট কিনছে। একজনকে ২ প্যাকেটের বেশি রুটি ও ৫ লিটারের বেশি ভোজ্যতেল দিচ্ছে না। পরিবারের সবাই ছেলে-মেয়ে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে রুটি-তেল কিনছে। এ অবস্থায় দেশে কৃষির উৎপাদন ও ফলন অব্যাহত রাখতে হবে। কোনোভাবেই খাদ্যের জন্য বিদেশের উপর নির্ভরশীল হওয়া যাবে না। খাদ্য নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

ড. রাজ্জাক আরও বলেন, বছরে সারে ৩০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া সারা বিশ্বের বিরল ঘটনা। পৃথিবীর কোনো দেশে এতো ভর্তুকি দেওয়ার উদাহরণ নেই। ভর্তুকি কমাতে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার চাপও রয়েছে। কিন্তু কৃষকদরদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকের স্বার্থে ও খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সংস্থার আপত্তি উপেক্ষা করে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছেন। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সারের দাম তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেলেও বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষক পর্যায়ে সারের মূল্য বৃদ্ধি করেনি। অব্যাহতভাবে ভর্তুকি দিয়ে সুলভমূল্যে সার সরবরাহের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনের ধারা বজায় রেখেছে।

এর আগে সভায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য মোট রাসায়নিক সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয় প্রায় ৬৭ লাখ টন। এর মধ্যে ইউরিয়া ২৬ লাখ টন, টিএসপি ৭ লাখ টন, ডিএপি ১৫ লাখ টন, এমওপি সাড়ে ৭ লাখ টন, জিপসাম সাড়ে ৫ লাখ টন, জিংক সালফেট ১ লাখ ৪১ হাজার টন এবং বাকীগুলো জিপসাম, বোরন প্রভৃতি।

বিজ্ঞাপন

এসময় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম মতিয়া চৌধুরী, জোয়াহেরুল ইসলাম এমপি, কৃষিসচিব সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বলাইকৃষ্ণ হাজরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন