বিজ্ঞাপন

‘ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি সঠিক নয়, উৎসব সবার’

April 13, 2022 | 2:06 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধর্মের সঙ্গে অনেকেই সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি করতে চায়। এটা মোটেও সঠিক নয়। ধর্ম যার যার, উৎসব সকলের। কাজেই উৎসব আমরা সকলে এক হয়ে পালন করব।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৩ মার্চ) সকালে নবনির্মিত ৮টি জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কুষ্টিয়া, খুলনা, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রান্তে যুক্ত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি উপজেলায় কালচারাল কমপ্লেক্স গড়ে তুলব। প্রত্যেক উপজেলা থেকে যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা মেধাবিকাশের সুযোগ পায়, সেই ব্যবস্থাটাও আমরা নিতে চাচ্ছি।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে প্রায় ২১ বছর বাংলাদেশ একটা অন্ধকার যুগ কাটিয়েছি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আসার পরেই আবার আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান ফিরে পেয়েছি। ৭ মার্চের ভাষণ আজকে বিশ্ব প্রামাণ্য দলিলে স্থান পেয়েছে। যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে বিশ্বে উজ্জ্বল করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয় সেই বিজয়ের স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে সারাবিশ্ব জানতে পেরেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব যে একটা সংস্কৃতি রয়েছে সেটা আরও উজ্জীবিত হয়, বিকশিত হয় সেদিকেই লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের মানুষ সংস্কৃতি-মনা। নৌকার মাঝি নৌকা চালাতে চালাতে গান ধরে। একসময় তো গরুর গাড়ি চলত। সেই গরুর গাড়ির চালকদের গাওয়া ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’ গান এখনো মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। যদিও আধুনিক প্রযুক্তি এবং আধুনিক যুগে সেসব হারিয়ে যেতে বসেছে, তবুও এগুলো কিন্তু শিল্পীর তুলিতে এখনো উজ্জীবিত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আরেকটি কথা বলতে চাই। আমরা বাঙালি। আমাদের দেশে কিন্তু সকল ধর্মের মানুষ বাস করে। হিন্দু মুসলিম খ্রিস্টান বৌদ্ধ সবাই আছে। আমাদের এই যে সকল ধর্ম বর্ণ বিভিন্ন ছোট ছোট ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। তাদের নিজস্ব যে সংস্কৃতি অর্থাৎ আমাদের শুধু ধর্মাবলম্বী না, আমাদের যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী তাদেরও কিন্তু নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা আছে। সেগুলোও যাতে বিকশিত হয়, সেদিকে দৃষ্টি রেখেও প্রত্যেকটা এলাকায় সেভাবে তাদের এই সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ করে দিয়েছি।

বিজ্ঞাপন

যেগুলো আবহমানকাল থেকে চলে আসছে, সেগুলো যাতে বিকশিত হতে পারে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি হতে হবে বলেও অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কারণ এগুলো আমাদের ঐতিহ্য। এগুলো আমরা ভুলব না। কিন্তু আমরা সামনের দিকেও আবার এগিয়ে যাব। আধুনিক যুগের যত সংস্কৃতি সেটাও আমরা রপ্ত করব।

‘পহেলা বৈশাখ; যে পহেলা বৈশাখ পালন করতে গিয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। ১৪০০ সাল বরণ করতে যেয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছি। এটা হচ্ছে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এমনকি বটমূলে বোমা হামলা করেও মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। যাতে করে আমাদের সংস্কৃতি চর্চা বন্ধ হয়ে যায়।’-যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সবাইকে সতর্কভাবে নববর্ষ উদযাপনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সবাইকে একটু সতর্ক থাকতে বলব, আপনারা সকলে একটু সতর্কভাবে চলবেন। কারণ করোনাভাইরাস একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। আমরা নিয়ন্ত্রণ করেছি। একেবারে শেষ হয়ে যায়নি।

বাংলাদেশ ডিজিটাল যুগে পদার্পণ করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আটটি জেলার সকলের সঙ্গে একইসঙ্গে গণভবনে বসে কথা বলছি, যোগসূত্র করতে পারছি। এটা হল প্রযুক্তির উপহার। সেটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সংস্কৃতি চর্চাকেও আমরা আরও সমৃদ্ধশালী করতে পারি।

বিজ্ঞাপন

নবনির্মিত শিল্পকলা একাডেমির ভবনগুলো অত্যন্ত চমৎকার ও আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে জানিয়ে সেগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করার বিষয়ে সকলকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপির সভাপতিত্বে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বক্তব্য দেন।

সারাবাংলা/এনআর/এএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন