বিজ্ঞাপন

ঋণ দিয়ে ইমেজ বাড়ানোর কৌশল আত্মঘাতী: রব

April 17, 2022 | 8:29 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশের নাগরিকদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া শ্রীলংকাকে ঋণ হিসেবে দিয়ে সরকারের ‘ইমেজ’ বৃদ্ধির কৌশলকে আত্মঘাতী এবং ‘ভয়ঙ্কর অন্যায়’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

বিজ্ঞাপন

সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলংকার অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেশটিকে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ প্রসঙ্গে রোবাবর (১৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। শ্রীলংকার পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিবৃতিতে আ স ম আবদুর রব বলেন, দেশের জনগণকে ১১ লাখ ৪৪ হাজার ২৯৭ কোটি টাকার বেশি ঋণে আবদ্ধ রেখে এবং পাঁচ কোটি জনগোষ্ঠীকে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে রেখে শ্রীলংকার জন্য রিজার্ভ থেকে ২৫ কোটি ডলার ধার দিয়ে সরকারের বাহবা কুড়ানোর মানসিকতা কোনো দূরদর্শিতার পরিচায়ক নয়।

তিনি বলেন, ঋণগ্রস্ত শ্রীলঙ্কার ঋণের পরিমাণ জিডিপির ১১৯ শতাংশ। দেশটির ঋণ ফেরত দেওয়ার সামর্থ্য নেই। এসব জেনেও শ্রীলংকার জন্য ঋণ বরাদ্দ করা বাংলাদেশের বাস্তবতায় কোনোভাবেই জরুরি তো বটেই, সামঞ্জস্যপূর্ণও নয়। যখন দেশের জন্য অপরিকল্পিত প্রকল্পের কারণে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ বাড়ছে এবং গৃহীত ঋণ-কিস্তি পরিশোধে ভবিষ্যতে দেশের পক্ষে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে, তখন শ্রীলংকার মতো দেউলিয়াত্বের দিকে ধাবমান একটি দেশকে বাংলাদেশের পক্ষে ঋণ দিয়ে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের ঋণ ফেরতের শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হয়েছে শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিয়ে ঋণ ফেরত না পাওয়ার আশঙ্কা সরকারের অপরিপক্ক ও অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের প্রতিফলন— মন্তব্য করেন রব।

শ্রীলংকার পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জেএসডি সভাপতি বলেন, শ্রীলংকার উদাহরণ থেকেই সাপ্লায়ার্স ক্রেডিটে বড় অবকাঠামোর প্রকল্প গ্রহণ, ঋণে বাস্তাবায়িত প্রকল্পের মান, অর্থ খরচের জবাবদিহিতা, প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় ও ব্যয় বৃদ্ধিসহ আত্মতুষ্টির অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণের প্রশ্নে বাংলাদেশের সতর্ক হওয়া উচিত। রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের দায় বেড়ে যাবে। স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশ থেকে বেরিয়ে গেলে বাণিজ্যের বিশেষ অগ্রাধিকার সুবিধা বাতিল হবে। তাই ভুল নীতি, ভুল প্রকল্প বাছাই প্রশ্নে বাংলাদেশের অনেক বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতেও সরকারের ‘বাহবা’ কুড়ানোর মনোভাব দেখা গেছে বলে মন্তব্য করেন আ স ম আবদুর রব। বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকারের বাহবা কুড়ানোর অপরিণামদর্শিতার কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুও জাতিকে দীর্ঘস্থায়ী সংকটে নিপতিত করেছে। রোহিঙ্গা ইস্যু ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের স্থিতিশীলতাকে চরম ঝুঁকিতে ফেলবে। কিন্তু সরকার এর কোনো দায় বহন করবে না।

বিজ্ঞাপন

“ভুল রাজনীতি থেকে অবশ্যই আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। সরকারের ‘ক্ষমতা ধরে রাখা’র সাময়িক সুবিধা গ্রহণ পরিণতিতে রাষ্ট্রকে সীমাহীন বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশকে অনেক বেশি দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে হবে,”— বলেন জেএসডি সভাপতি রব।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন