বিজ্ঞাপন

নির্বাচন ঘিরে নতুন ষড়যন্ত্রে মত্ত বিএনপি-জামায়াত

April 21, 2022 | 6:44 pm

তাজিন মাবুদ ইমন

রবিবার (১০ই এপ্রিল) এক অনুষ্টানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম দেশের রাজনীতিতে স্বস্তি ফেরাতে একটা ঘটনা ঘটাতে হবে বলে মন্তব্য করেন। তার এমন বক্তব্যতে দেশে নতুন করে ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে পৃথিবীর অন্যান্য বড় বড় দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যখন নিজেদের যোগ্যতার জানান দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত ঠিক সেই সময় নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি-জামায়াত।

বিজ্ঞাপন

বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংস ও সন্ত্রাসবাদের ইতিহাস বেশ পুরোনো। নিজেদের চিরাচরিত স্বভাব কখনোই এরা ত্যাগ করতে পারেনি। ২০০১ হতে ২০০৬ সাল বিএনপির শাসনামলের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ- দুর্নীতির কথা মনে করে আজও শিউরে ওঠেন সাধারণ জনগণ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ- দুর্নীতির সময় ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামল। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এস এম কিবরিয়াকে হত্যা করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। শুধুমাত্র উন্নত চিকিৎসা না পাওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে এমনটি জানিয়েছেন ডাক্তাররা। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ১৮ বারেরও বেশি হত্যার চেষ্টা করে। সর্বশেষ সেই সময় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর জনসভায় গ্রেনেড হামলা করে বিএনপি। সেই গ্রেনেড হামলায় সরাসরি জড়িত ছিল খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান। যা আদালতের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে। সারাদেশে একসাথে ৫০০ জায়গায় গ্রেনেড হামলা করে একই সময়ে বিএনপি।

সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অমানুষিক অত্যাচার, অনেক কেই বাধ্য করা দেশ ত্যাগে। সারা দেশে কয়েকশো হিন্দু মেয়ে সহ অনেক আওয়ামী ঘরানার মেয়ে ধর্ষিত নির্বাচনের প্রথম কয় মাসেই। এর মধ্যে রাজশাহী ছিল অন্যতম। বিএনপির আমলে ছয় শতাধিক সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য প্রাণ হারায়। বিএনপির আমলে আহত হয় ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিএনপির আমলে ১২ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ধর্ষন এর ঘটনা ঘটে ২০০২ সালে। ২০১৩-১৪ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ বন্ধ করার দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে মিলে সারা দেশে একটি ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল বিএনপি। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে। সে নির্বাচনের বিরোধিতা করেছিলো বিএনপি-জামায়াত জোট। খালেদা জিয়া ও বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে হাজার হাজার যানবাহন ভাঙচুর করে তাতে আগুন দেয় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। সেসময় তাদের পেট্রোল বোমা, হাতে তৈরি বোমা এবং অন্যান্য সহিংসতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২০ সদস্যসহ ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। সহিংসতার সময় রাস্তার পাশে থাকা হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা। এছাড়া, ছোট দোকান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতেও আগুন দেয় তারা। খালেদা গণতন্ত্র রক্ষার কথিত হাতিয়ার পেট্রোল বোমা ও অগ্নি-সন্ত্রাসের হাত থেকে রেহাই পায়নি পবিত্র কোরআন শরীফও! খালেদা জিয়ার নির্দেশে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জা ভাঙচুর এবং পবিত্র কুরআনের শত শত কপি জ্বালিয়ে দেয়। নির্বাচনের দিন একজন প্রিজাইডিং অফিসারসহ মোট ২৬ জনকে হত্যা করে এবং সারাদেশে ৫৮২টি স্কুলে ভোটকেন্দ্রে আগুন লাগায় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। ২০১৫ সালের ৪ঠা জানুয়ারি নির্বাচনের এক বছর পূর্তির দিন খালেদা জিয়ার নির্দেশে আবারও জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু করে বিএনপি-জামায়াত জোট। সে সময় ২৩১ জনকে হত্যা করে তারা। যাদের বেশিরভাগই পেট্রোল বোমা এবং আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যায়। ওই ঘটনায় আহত হন আরও ১ হাজার ১শ’ ৮০ জন। সে সময় ২ হাজার ৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেলগাড়ি এবং ৮টি যাত্রীবাহী নৌযানে আগুন লাগিয়ে হামলা চালায় তারা। ওই সময় হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় সরকারি অফিসগুলো। আর বিএনপি-জামায়াতের ভাঙচুর এবং আগুনে পুড়ে ৬টি ভূমি অফিসসহ ৭০টি সরকারি কার্যালয়ের দলিল-দস্তাবেজ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মতে, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল-অবরোধের প্রতিটি দিন দেশের ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা (অথবা ১৯২.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বা জিডিপি’র ০.২ শতাংশ ক্ষতি হয়। এর অর্থ ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধে দেশের ১.৫৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থক্ষয় হয়। তবে সহিংসতার ক্ষয়-ক্ষতি এতে অন্তর্ভুক্ত নয়। অংকের হিসেবে সেই অর্থের পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকারও বেশি।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির অতীত কর্মই সাক্ষী দেয়, তারা কতোটা নৃশংস ও প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি চর্চায় অভ্যস্ত। বিএনপি-জামায়াত জোটের ধ্বংসযজ্ঞ নতুন নয়। দলটির সৃষ্টিই হয়েছে অবৈধভাবে। নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে কিংবা দলীয় আখের গোছাতে এমন কোনো ক্যু নেই যা বিএনপি-জামায়াত জোট করেনি। জনগণের উচিৎ দেশের শান্তি রক্ষায় এদের বয়কট করা। কারণ তাদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়।

লেখক: ছাত্রনেতা

বিজ্ঞাপন
প্রিয় পাঠক, লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই ঠিকানায় -
sarabangla.muktomot@gmail.com

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব, এর সাথে সারাবাংলার সম্পাদকীয় নীতিমালা সম্পর্কিত নয়। সারাবাংলা ডটনেট সকল মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে মুক্তমতে প্রকাশিত লেখার দায় সারাবাংলার নয়।

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন