বিজ্ঞাপন

ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির প্রথম দিনেই বিড়ম্বনা

April 23, 2022 | 1:54 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সিদ্ধান্ত হয়েছে এবারের ইদে টিকিট সংগ্রহ করতে লাগবে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মসনদ। আর বিদেশিদের ক্ষেত্রে লাগবে পাসপোর্টের ফটোকপি। টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মোট টিকিটের অর্ধেক অনলাইনে এবং অর্ধেক কাউন্টারে বিক্রি করার কথা। কিন্তু, অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রির নতুন দায়িত্ব পাওয়া সহজ ডট কমের ওয়েবসাইটে ঢুকতে না পারার অভিযোগ জানিয়েছেন অধিকাংশ যাত্রী। আবার, রেলস্টেশন কাউন্টার থেকে সশরীরে টিকিট সংগ্রহ করাতেও রয়েছে বিপত্তি। সার্ভার জটিলতায় সকাল থেকে টিকিট কাটতে পারছিলেন না যাত্রীরা। ফলে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও টিকিট মেলেনি।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৩ এপ্রিল) ইদুল ফিতরকে সামনে রেখে সকাল আটটা থেকে রাজধানীর পাঁচ স্টেশনের কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত।

জানা গেছে, সকাল ৮টা থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকেটিং ওয়েবসাইটে ঢোকা যাচ্ছিল না। প্রবেশের চেষ্টাকালে ওয়েবসাইটে একটি বার্তা লিখে ধৈর্য্য ধরতে বলে কর্তৃপক্ষ। টানা দেড় ঘণ্টা পর সাড়ে নয়টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। টিকিট বিক্রিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজ ডট কমের ওয়েবসাইটেও ছিলো একই অবস্থা। সহজ ডট কমের ওয়েবসাইটে ঢুকলে ট্রেন লেখা গ্যালারিতে ক্লিক করলে রেলওয়ের ওয়েবপেজে গিয়ে একই বার্তা দেখা যায়। ইদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রথম দিনেই রেলওয়ের এমন সেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন টিকিট প্রত্যাশীরা।

দেশের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে স্টেশন কমলাপুর গিয়ে দেখা গেছে টিকিট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আশফাক আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, তিনি ২৮ এপ্রিল খুলনা যাওয়ার উদ্দেশ্যে টিকিট সংগ্রহ করতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সকাল সাতটা থেকে দাঁড়িয়ে থাকার পর নয়টার দিকে জানানো হয় সার্ভার কাজ করছে না। কখন স্বাভাবিক হবে তার ঠিক নেই।

বিজ্ঞাপন

যদিও সাড়ে নয়টার দিকে সার্ভার ঠিক হয়ে এগারোটা পর্যন্ত চলমান থাকার পর আবার স্লো হয়ে যায়। লাইনে থাকা রংপুর ভ্রমণের টিকিট প্রত্যাশী মুনির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, সেহরি খেয়ে কমলাপুরে লাইনে দাঁড়িয়েছি কিন্তু দশটা পর্যন্ত টিকিট পাওয়া যায়নি। লাইন এগোচ্ছে না। কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছাতে পৌঁছাতে টিকিট থাকবে কি না সন্দেহ।

যাত্রীদের শঙ্কা এবারও হয়তো কালোবাজারিদের হাতে টিকিট চলে গেছে। যে কারণে টিকিট পেতে এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। টিকিট প্রত্যাশী লালমনিরহাট যেতে ইচ্ছুক মনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি দুই বছর আগে টিকিট নিয়ে এমন ভোগান্তির পর দ্বিগুণ দাম দিয়ে দালালের মাধ্যমে টিকিট কিনেছেন।

পূর্ব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে রাজশাহীগামী ট্রেনের টিকিট প্রত্যাশী এক জন বলেন, টাকা বেশি দিলে কোনোরকম ভোগান্তি ছাড়াই টিকিট পাওয়া যায়। তিনি বলেন, টিকিট কালোবাজারি থামাতে সরকার এনআইডি নিয়ে টিকিট কাটতে বলেছে কিন্তু ভোগান্তির শেষ কোথায়?

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আমার তো মনে হয় টিকিট কালোবাজারির হাতেই চলে গেছে।

এ প্রসঙ্গে বিভাগীয় রেলওয়ে কর্মকর্তা শফিকুর রহমান জানান, ইদের সময় টার্গেট রয়েছে আন্তঃনগর ট্রেনের ২৭ হাজার আর এক্সট্রা কোচসহ বিশেষ ট্রেনের মিলিয়ে মোট ৩৫ হাজার টিকিট বিক্রি করা। এর মধ্যে অনলাইনে ৫০ আর অফলাইনে ৫০ শতাংশ। পশ্চিমাঞ্চলের সব টিকিট কমলাপুর থেকে দেওয়া হয়। টিকিট যাতে দ্রুত যাত্রীরা পেতে পারেন সেজন্য অতিরিক্ত কাউন্টার খোলা হয়েছে। নারীদের জন্য আলাদা দুইটি কাউন্টার রয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথম শ্রেণির টিকিটগুলো সীমিত থাকে তাই দ্রুত শেষ হয়ে যায়। যাত্রীরা এটা নিয়েই মনক্ষুণ্ণ হয়ে থাকেন।

অপরদিকে, ট্রেনের অনলাইন টিকিটিংয়ের সহযোগী সহজ ডট কমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

সকালে সার্ভার জটিলতার কারণে কমলাপুরে টিকিট কাউন্টার থেকে লাইন দীর্ঘ হয়ে বাইরে চলে যায়। লাইনের কারণে অন্যান্য যাত্রীদের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। যাত্রীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।

সারাবাংলা/জেআর/একেএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন