বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ

April 23, 2022 | 4:43 pm

কবিতা রাণী মৃধা

বঙ্গবন্ধু নাম শুনলেই আমার কাছে মনে হয় আমি শুনছি বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ দুটো আলাদা শব্দ কিন্তু আমি কখনো তাকে আলাদা করে ভাবতে পারি না। কারণ বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। আমার মনে হয় এই কথাটি শুধু আমার নয়, আমাদের পুরো জাতির। বঙ্গবন্ধু তাঁর মূল্যবান জীবনের বিনিময়ে আমাদেরকে একটি স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়ে গেছেন। তাঁর অবদান কোনোদিন আমরা পূরণ করতে পারবো না। বঙ্গবন্ধুর একমাত্র স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতিকে ‘মুক্ত করা’। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর আরো অনেক স্বপ্ন ছিল তাঁর দেশ বাংলাদেশকে নিয়ে। কিন্তু কিছু বিশ্বাসঘাতকের জন্য সেগুলো তিনি পূরণ করতে পারেন নি।

বিজ্ঞাপন

আচ্ছা বঙ্গবন্ধুতো আমাদের জন্য এতবড় অবদান রেখে গেছেন তাঁর জীবনের বিনিময়ে। আমরা কী কোনো মূল্য ছি দিচ্ছি এ অবদানকে? আমরা সবাই একটি বার ভেবে দেখিতো আমরা কতটা মূল্য দিচ্ছি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে এবং কতটা মূল্য দিচ্ছি তাঁর আদর্শকে?

‘বাংলাদেশ’ নামটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরাধীনতার শেকল থেকে এ দেশকে, এ জাতিকে মুক্ত করতে যিনি অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন, তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।বঙ্গবন্ধু না হলে হয়তো আজকের এ বাংলাদেশ সৃষ্টি হতো না। আমরা পেতাম না স্বাধীন বাংলার মুক্ত বাতাস, পেতাম না একটি স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। ১৯৫২ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রতিটি ধাপে অগ্রণী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।

যুগ যুগ ধরে এদেশে আক্রমণ করেছে বহু হানাদার বাহিনী। ইউরোপিয়ান বণিক, পর্তুগিজ, ইংরেজ থেকে শুরু করে বহু জাতি বহু বার এদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের লোভে পড়ে এদেশের মানুষকে শাসন ও শোষণ করেছে। সর্বশেষ তদানীন্তর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী এদেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নিলে স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার ব্রত গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিজয় অর্জিত হয়। তাই বাংলাদেশের কথা বললেই বলতে হয় বঙ্গবন্ধুর নাম।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল অসাম্প্রদায়িতার। তিনি এমন একটি বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিলেন যেখানে নারী-পুরুষ কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। এমন একটি বাংলাদেশ জাতির পিতা চেয়েছিলেন যেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে সমানভাবে নারীরও অংশগ্রহণ থাকবে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘নারীদেরও সমান অধিকার প্রদান করা হবে। তারা আর দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক থাকবে না।’

বঙ্গবন্ধু নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী ছিলেন। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য বঙ্গবন্ধুর সরকার ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভায়ও তিনি নারীদের মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ’৭২-এর সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদে নারী-পুরুষের সম অধিকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু নির্যাতিত নারীদের ‘বীরাঙ্গনা’ খেতাবে ভূষিত করেছিলেন। ‘বীরাঙ্গনা’ অর্থ ‘বীর নারী’। তিনি এভাবে নারীদের সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিলো ‘নারী পূনর্বাসন বোর্ড’। নির্যাতিত নারীদের পূনর্বাসন এবং আবাসনের জন্য এ বোর্ড গঠিত হয়েছিল।জাতির পিতার এই পদক্ষেপগুলো থেকেই প্রমাণ মেলে, যে তিনি সত্যিকার অর্থেই একটি নারী-পুরুষ ভেদাভেদমুক্ত দেশ চেয়েছিলেন। পঁচাত্তরের আগস্টে আমাদের দেশেরই কিছু কুলাংগার সেই স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ করতে চেয়েছিল। তারা কি পেরেছে সফল হতে?

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাঙালী সত্তা, বাঞ্ছালীর স্বাধীন রাষ্ট্র ও দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। বাংলাদেশকে ঘিরে তাঁর স্বপ্ন ছিল ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের কারণে তাঁর সেই স্বপ্ন তিনি পূরণ করে যেতে পারেননি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’র দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একই কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্ববাসীর কাছে আজ এক বড় বিশ্বস্ময়!

বিজ্ঞাপন

লেখক: শিক্ষার্থী

প্রিয় পাঠক, লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই ঠিকানায় -
sarabangla.muktomot@gmail.com

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব, এর সাথে সারাবাংলার সম্পাদকীয় নীতিমালা সম্পর্কিত নয়। সারাবাংলা ডটনেট সকল মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে মুক্তমতে প্রকাশিত লেখার দায় সারাবাংলার নয়।

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন