বিজ্ঞাপন

রাজীবের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা মামলা চলবে

April 17, 2018 | 3:05 pm

।।আবদুল জাব্বার খান,স্টাফ করসেপন্ডন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘দুই বাসের রেষারেষিতে প্রথমে দেহ থেকে একটি হাত আলাদা হয়ে গেল। এর দুই সপ্তাহ পর দেহ থেকে চলে গেল প্রাণটুকুও,না ফেরার দেশে চলে গেলেন রাজীব। জীবন যুদ্ধে সংগ্রামী ছেলেটিকে এক নজর দেখতেও পারলাম না।’

মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) সুপ্রিমকোর্টে নিজের চেম্বারে সারাবাংলাকে এভাবেই বলছিলেন রাজবের ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে রিটকারি আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

তিনি জানান, রাজিবের দুর্ঘটনার পর দিনই ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হই, বিবেকের তাড়নায়। আদালতের আদেশের পরে রাজীবের খালা ফোন দিয়ে জানিয়েছিলেন,আইসিইউ থেকে বেডে আনা হলে  যেন তাকে দেখতে যাই। কিন্তু দুর্ভাগ্য রাজিবকে আর দেখা হলো না।

বিজ্ঞাপন

ব্যারিস্টার কাজল বলেন, গত ৪ এপ্রিল সকালে পত্রিকায় খবরটি দেখে আঁতকে উঠি। কি ভয়াবহ দৃশ্য! দুটি বাসের রেষারেষিতে একটি হাতের খন্ডিত অংশ বাসের সঙ্গে লেগে আছে! খবরটি বিবেককে নাড়া দেয়। তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত নেই বিষয়টি আদালতের নজরে আনার। অন্যান্য মামলা ফেলে সেদিন দ্রুত এ বিষয়টি  আদালতের নজরে আনি। আদালত আবেদন শুনে রাজিবকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সহ বেশ কিছু নির্দেশনা দেন।

রিটকারি আইনজীবী:ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল

বিজ্ঞাপন

আদালতের আদেশের পরই রাজিবের চিকিৎসা খরচসহ যাবতীয় ব্যবস্থা নেয় সরকার।

এখন এ মামলা চালিয়ে যাবেন কিনা জানতে চাইলে আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল জানান, রাজীবের মৃত্যুর কারণে এ মামলাটির বিষয়বস্তু শেষ হয়ে যাবে না। এ মামলা চালিয়ে যাবো। কারণ রাজীব তো প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া ঘটনার একটা নজির মাত্র। ঘটনা তো প্রতিদিন ঘটছে।

তিনি বলেন, রাজীবের মৃত্যুর কারণে এ রিটের সারবত্ত্বা আরও বেড়ে গেলো। এখন আমি আদালতের কাছে বলা যাবে, হাত হারানো রাজীবের জন্য এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলাম, যে ছেলের জীবন চলে গেলো, যার সম্ভাবনা সারাজীবনের জন্য ধুলিসাৎ হয়ে গেলো। আর তার ভাইদের দেখভাল করার কেউ নেই, তার ক্ষতিপূরণ তো অর্থ দিয়ে হবে না। তা সত্বেও আদালতের কাছে তার এ জীবন হানি, যেখানে রাজীবের  কোনো দোষে নেই, এর একটা যথাপোযুক্ত বিচার চাইব। ক্ষতিপূরণ চাইব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ মামলার রায় হলে পাবলিক যানবাহনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্দেশনা আসবে। সমাজে উপকার হবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলেও আশা রাখি।

বিজ্ঞাপন

গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে বিআরটিসি বাসের সঙ্গে স্বজন পরিবহনের বাস টক্কর দিতে গেলে বাস দুটির চিপায় পড়ে ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাজীবের। সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের এ ছাত্রকে তাৎক্ষণিক শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল(ঢামেকে) নেওয়া হয়। সেখানে সরকারের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলে।

এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর যুক্ত করে রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল।গত ৪ এপ্রিল ওই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রাজীব হোসেনকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ একই সঙ্গে তার চিকিৎসা ব্যয় ‘বিআরটিসি’ ও ‘স্বজন পরিবহন’র মালিকদের বহন করতে নির্দেশ দেন। এছাড়াও সাধারণের চলাচলে বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে কার্যকরে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চান আদালত। এছাড়া

ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনে আইন সংশোধন ও নতুন করে বিধিমালা প্রণয়নের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়।

সারাবাংলা/এজেডকে/জেডএফ

আরও পড়ুন

রাজীবকে বাঁচানো গেল না
রাজিবকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয় : হাইকোর্ট
রাজিবের দুর্ঘটনায় দুই বাসের চালক গ্রেফতার
রাজীবকে ডিএমসিএইচে নেওয়া হয়েছে
রাজীব জানে না তার হাত নেই!
রাজীবের চিকিৎসায় ৭ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড
রাজীবের হাতের ক্ষত অনেকটাই শুকিয়েছে
রাজীবের হাত কাটা পড়ার ঘটনায় দুই বাস চালক রিমান্ডে
রাজীবের হাত কাটা পড়ার ঘটনায় দুই বাস চালক কারাগারে

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook 

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন