বিজ্ঞাপন

হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী কমছেই না

April 29, 2022 | 1:31 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা কমছেই না। গত মার্চের শুরু থেকেই এখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা ভর্তি হতে শুরু করেছেন। এপ্রিলের শেষ ভাগে এসেও কমছে না রোগী। হাসপাতালটিতে শুক্রবারও (২৯ এপ্রিল) শতাধিক ডায়রিয়া রোগী ভর্তি ছিলেন। মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোর বারান্দায় রেখে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা চলছে।

বিজ্ঞাপন

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ওয়ার্ডের সামনে বারন্দায় বিছানা পেতে ডায়রিয়া রোগীরা শুয়ে আছেন। রোগীরা জানান, ইদের কারণে হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চাপ কমেছে। ওয়ার্ডে বেড ফাঁকা আছে। কিন্তু ডায়রিয়া রোগীদের বেড দেওয়া হচ্ছে না। ভেতরে মেঝেতেও ডায়রিয়া রোগীকে রাখা হচ্ছে না। ওয়ার্ডের বাইরে একেবারে বারান্দায় ডায়রিয়া রোগীদের রাখা হচ্ছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মার্চ মাসে এই হাসপাতালে এক হাজার ৬৩৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। সবশেষ শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ভর্তি ছিলেন ১২৬ জন রোগী। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় এখানে নতুন ৬১ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। ওই ২৪ ঘণ্টায় ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫৪ জন। পানিশূন্যতা দূর করতে নতুন রোগীদের সবাইকেই চারটি থেকে সাতটি পর্যন্ত স্যালাইন দিতে হচ্ছে।

হাসপাতালের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি মাসের ১৬ তারিখে হাসপাতালে সর্বোচ্চ ২০৭ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি ছিলেন। ২১ এপ্রিল রোগী কমে ১৩৭ জন হয়েছিল। কিন্তু ২৩ এপ্রিলেই রোগী বেড়ে ১৭৮ জন হয়। ২৬ এপ্রিল ভর্তি ছিলেন ১৪৭ জন। বৃহস্পতিবার ভর্তি ছিলেন ১১৯ জন। শুক্রবার রোগী বেড়ে হয় ১২৬ জন। হাসপাতালের বহির্বিভাগেও প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডায়রিয়া রোগী মাসুম আলী (২৬) বলেন, গত মঙ্গলবার রাত ২টায় তিনি ভর্তি হয়েছেন। এ পর্যন্ত ছয়টি স্যালাইন দিতে হয়েছে তাকে। সকাল থেকে তার শারীরীক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

নাসিমা বেগম (৪০) নামের এক রোগীর স্বজন ফেরদৌসি খাতুন বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় নাসিমাকে ভর্তি করা হয়েছে। স্যালাইনের স্ট্যান্ড ধরে একটু পর পর তাকে টয়লেটে নিয়ে যেতে হচ্ছে।

রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মাহাবুবুর রহমান বাদশা জানান, তীব্র গরমে দ্রুতই খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ইফতারে সেই খাবার খাওয়ার কারণে ডায়রিয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অনেকে আবার তৃষ্ণা মেটাতে বাইরে খোলামেলাভাবে বিক্রি করা আখের রস বা বিভিন্ন ধরনের শরবত পান করছেন। এসব কারণে অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে হাসপাতালে এলে তাদের সাধ্যমত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, মূলত তীব্র গরমের কারণেই ডায়রিয়া কমছে না। মাঝে একবার বৃষ্টি হলো, তখন দুয়েকদিনের জন্য ডায়রিয়া রোগী কমেছিল। আবার বেড়ে গেছে। রোজা শেষ হলে মানুষের ইফতারের সময় বাইরের খোলামেলা খাবার খাওয়া বন্ধ হবে। তখন পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

হাসপাতালের পরিচালক আরও বলেন, ডায়রিয়া রোগী বেশি হলেও চিকিৎসা দিতে সমস্যা হচ্ছে না। পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্স আছেন। রোগীরা বিনামূল্যে স্যালাইনও পাচ্ছেন। এই ঈদেও হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক-নার্স থাকবেন। ঈদের ছুটিতে অন্তত একদিন বহির্বিভাগ খুলে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানান তিনি।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন