বিজ্ঞাপন

দক্ষিণের ২ হাজার লোহার ব্রিজ সংস্কারে প্রস্তাব উঠছে একনেকে

April 17, 2018 | 6:06 pm

।। জোসনা জামান, স্টাফ করসপনডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: আশির দশকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপকহারে নির্মাণ করা হয় লোহার ব্রিজ। সময়ের ব্যবধানে সেগুলো এখন অনেকটাই জরাজীর্ণ। কোথাও কোথাও সড়ক প্রশস্ত হওয়ায় যোগাযোগে বিঘ্নও সৃষ্টি করছে এ ব্রিজগুলো।

তবে এবার বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলার প্রায় দুই হাজার লোহার ব্রিজ সংস্কার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আয়রণ ব্রিজ পুন:নির্মাণ/পুনর্বাসন নামের একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের কাছে। কমিশন যাবতীয় প্রক্রিয়াকরণ শেষ করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সেটি উপস্থাপণের প্রস্তুতি নিয়েছে। কমিশন সূত্র জানায়, অনুমোদন পেলে আগামী ২০২৩ সালের মাঝামাঝি এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ.এন. সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মোট ১ হাজার ৯২৮টি লোহার ব্রিজ নিয়ে এ প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পুরাতন ও ঝুকিপূর্ণ আয়রন ব্রীজ পুন:নির্মাণ বা পুনর্বাসনের মাধ্যমে পল্লী সড়ক নেটওয়ার্ক শক্তিশালী হবে। এতে পরিবহন ব্যয় কমে যাবে, কৃষি ও অকৃষি পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষি পণ্য বাজারজাতকরণ সহজ হবে। তাছাড়া, গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী কর্মস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বিজ্ঞাপন

বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় লোহার ব্রিজ পুন:নির্মাণ করা হবে। উপজেলাগুলো হচ্ছে, বরিশাল জেলার বরিশাল সদর, আগৈলঝাড়া, বাবুগঞ্জ, বাকেরগঞ্জ, বানারীপাড়া, গৌরনদী, হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ, মূলাদী এবং উজিপুর। ঝালকাঠি জেলার ঝালকাঠি সদর,কাঠালিয়া, নলছিটি এবং রাজাপুর। ভোলার সদর, বোরহানুদ্দীন, চরফ্যাশন, দৌলতখান, লালমোহন, মনপুরা এবং তজুমুদ্দীন। পিরোজপুরের সদর, ভান্ডারিয়া, কাউখালি, মঠবাড়িয়া, নাজিরপুর, নেছারাবাদ এবং ইন্দুরকানি। বরগুনার  সদর, আমতলী, বামনা, পাথরঘাটা, বেতাগী এবং তালতলী। পটুয়াখালীর সদর, বাউফল, দশমিনা, দুমকি, গলাচিপা, কলাপড়া, মির্জাগঞ্জ এবং রাঙ্গাবালী উপজেলায় লোহার ব্রীজ পুনর্বাসন করা হবে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বরিশাল বিভাগের জেলাগুলিতে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের জন্য আশির দশকে অনেক লোহার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। সে সময় মূলত: পায়ে হাটার জন্য ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। এগুলোর বর্তমান অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। তাছাড়া, সড়কে যানবাহন চলাচল বেড়ে যাওয়ায় অধিক প্রশস্ততায় আরসিসি ব্রিজ নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ অঞ্চলের পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন হলে অধিকতর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, কৃষি পণ্য বাজারজাত বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে তা প্রভাবক হিসাবে কাজ করবে। এ বিভাগের বেশ কিছু গ্রাম নগরায়নে রুপ নিচ্ছে। ফলে সকল গ্রামীণ সড়কে অবস্থিত লোহার ব্রিজগুলো পুনঃ নির্মান করা প্রয়োজন। এ জন্য ১ হাজার ৮০০ কোটি প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৭ সালের জুলাই হতে ২০২২ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হলে ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের জুলাই হতে ২০২৩ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের মূল কার্যক্রমগুলো হচ্ছে,৩০৪টি লোহার ব্রীজ উপজেলা সড়কে ব্রিজ পুন:নির্মাণ, ৫৪৯ টি ইউনিয়ন সড়ক, ২৩৭টি ইউনিয়ন সড়কে লোহার ব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণ এবং ৮৩৮টি গ্রাম সড়কে লোহার ব্রিজ করা হবে।

 

সারাবাংলা/জেজে/এমএস

 

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন