বিজ্ঞাপন

রানা প্লাজার ৪৮ শতাংশ শ্রমিক কাজ করতে পারছেন না: অ্যাকশন এইড

April 17, 2018 | 10:37 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের ৪৮ শতাংশ কাজ করতে পারছেন না। শারীরিক ও মানসিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় তাদের এই অবস্থা। আবার ওই দুর্ঘটনার পর শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও পোশাক খাতের উন্নয়নে সরকার, মালিক ও ক্রেতারা যেসব উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পাঁচ বছর উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অ্যাকশন এইড তাদের এক গবেষণায় উঠে আসা এসব তথ্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে সরকার, মালিক, বিদেশী ক্রেতা, শ্রমিক সংগঠন এবং রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকসহ সব পক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

গবেষণায় দেখা যায়, জীবিত শ্রমিকদের মধ্যে ১২ শতাংশের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর ২২ শতাংশ শ্রমিক এখনো মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। গবেষণায় অংশ নেয়া ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ শ্রমিক এখনও কোন কাজ করতে পারছেন না। অন্যদিকে, ২১ দশমিক ৬ শতাংশ শ্রমিক পোশাক কারখানায় আবারো যুক্ত হতে পেরেছেন। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের ম্যানেজার নুজহাত জেবিন।

‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের শিল্প খাত: উদ্যোগ ও পরিবর্তন’ নামক বিশ্লেষণটি উপস্থাপন করেন ডেভেলপমেন্ট এনার্জি ইনস্টিটিউট-এর চেয়ারম্যান ড. জাকির হোসেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, “রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে কোন মানদণ্ড ঠিক করা হয়নি, নেই আইনী কাঠামোও।’

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকরা প্রথমদিকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দ্রুত কিছু টাকা পেলেও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি তারা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এই ধরনের দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দেয়ার প্রস্তাব করেছিলাম, কিন্তু আইনে মাত্র ১ লাখ টাকা দেয়ার কথা উল্লেখ আছে। যেটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য না। আর আইনের দোহাই দিয়ে মালিকরা ক্ষতিপূরণ দিতে চান না।”

বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান (অব:) বলেন, “সাভারের দুর্ঘটনার পরও আমাদের টনক নড়েনি। এখনো ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বিধিমালা মানা হচ্ছে না, যে যার মত করে ভবন তৈরি করছেন। আবার সাভার দুর্ঘটনার পর অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করা হলেও সেগুলো ভাঙ্গা হচ্ছে না।

ভবনের ঝুঁকিপূর্ণতার বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আরবান ও রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইশরাত ইসলাম বলেন, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া যে হয় না তার জলন্ত উদাহরণ রানা প্লাজা। অনুমোদন ছাড়াই পাঁচতলা ভবন নয় তলা হয়ে গেল। পৌরসভা যাচাই-বাছাই না করেই অনুমোদন দিয়ে দিলো।

অনুষ্ঠানে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, “রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর যে সংস্কার ও উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশেষ করে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন, নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, শ্রমিকরা যেন সম্মানজনক এবং প্রয়োজন অনুযায়ী মজুরী পায়, এজন্য সরকার, মালিক ও ক্রেতাদের দায়িত্ব নিতে হবে। একইসঙ্গে শ্রমিক অধিকার বিষয়ক যেসব আইন রয়েছে তার প্রয়োগের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেএ/এমআইএস

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন