বিজ্ঞাপন

মিঠামইনে শিক্ষিকাকে হুমকি: নন-এফআইআর প্রসিকিউশন আদালতে

May 6, 2022 | 9:33 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

ঢাকা: শিশু শিক্ষার্থীদের শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম চলাকালীন বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে শিক্ষিকাকে কটুক্তি ও উস্কানিমূলক কথাবার্তাসহ হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বিবাদী মোছা. মাহমুদা আক্তার মনির (৪৪) বিরুদ্ধে ‘নন-এফআইআর প্রসিকিউশন’ দাখিল করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৪ এ প্রতিবেদন দাখিল করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

ঘটনাটির উদ্ভব ঘটেছে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ১নং গোপদিঘী ইউনিয়নের ২নং বগাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ওপর বহিরাগত মোছা. মাহমুদা আক্তার মনি (৪৪) নামের এক নারীর হুমকিকে কেন্দ্র করে। শিক্ষক মোছাম্মদ মদিনা খাতুন (৪২) ও প্রধান শিক্ষকসহ সহকর্মী শিক্ষকেরা তখন বিদ্যালয়ে সরকারি দায়িত্ব পালন করছিলেন।

অভিযুক্ত মোছা. মাহমুদা আক্তার মনি (৪৪) একজন গৃহিণী। তিনি মিঠামইনের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক সরকারি কলেজের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মো. নূরুল হক ভূঞার (৫৪) স্ত্রী।

বিদ্যালয়ের পাশেই তার বাড়ি থাকায় শিক্ষকদের পেছনে লেগে থেকে শিশু শিক্ষার্থীদের সামনে তাদের হেয়প্রতিপন্ন করাসহ অনৈতিকভাবে নিন্দা প্রকার, কর্তৃত্ব ও জোরজবর খাটিয়ে আসছিলেন।

বিজ্ঞাপন

এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন গতবছরের ১৫ নভেম্বর সহকারী শিক্ষক মোছাম্মদ মদিনা খাতুনের ওপর চড়াও হয় এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়।

এ ছাড়া বিবাদী মো. মাহমুদা আক্তার মনি যখন-তখন কারণে-অকারণে বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে শিশু শিক্ষার্থীদের শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রমসহ অফিসিয়াল সরকারি কাজে ব্যাঘাত ঘটিয়ে আসছিলেন।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (এসএমসি) সভাপতি মো. আলী আজগর ভূঞা ন্যক্কারজনক এ ঘটনাটি নিষ্পত্তিতে অক্ষমতা প্রকাশ করলে এবং বিবাদীপক্ষের মাত্রা অতিরিক্ত একরোখা মনোভাবের কারণে দীর্ঘ দুমাস পর বিষয়টির ন্যায় বিচারের জন্য আইনে গড়ায়।

বিজ্ঞাপন

কিশোরগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যামিস্ট্রেট আদালতের জিআরও-৪ অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মিঠামইন থানায় ৬৫৩ নং সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পর বিবাদী মোছা. মাহমুদা আক্তার মনির (৪৪) হুমকি-ধমকি ও উৎপাত আরও বেড়ে যায়। এতে বাদী প্রাথমিক শিক্ষক মোছাম্মদ মদিনা খাতুন (৪১) চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ভয়ানক আতঙ্ক নিয়ে বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত ২৪ মার্চ বাদীর অভিযোগ ও তার অসহায়ত্বের কথা শোনে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কিশোরগঞ্জ আমলি আদালত-৪ এর বিজ্ঞ বিচারক রাশেদুল আমিন সাধারণ ডায়েরিটি (জিডি) আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ এপ্রিল একই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন মিঠামইন থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. নূরুল হুদা। প্রকাশ্য ও গোপনে দীর্ঘ তদন্তের পর ঘটনার সত্যতা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়ে সাধারণ ডায়েরির (জিডি) বিবাদী মোছা. মাহমুদা আক্তার মনিকে (৪৪) অভিযুক্ত করে ফৌজদারি কার্যবিধি ৫০৬ ধারায় ‘নন-এফআইআর প্রসিকিউশন’ দাখিল করা হয়। যার নং-০৩/২২।

ওই প্রসিকিউশনে উল্লেখ করা হয়, ‘বাদী-বিবাদী প্রতিবেশী পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করেন। বিভিন্ন সময়ে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫/১১/২০২২ সকাল সাড়ে ১১ টার সময় মহামারি কোভিড-১৯ সংক্রমণ কিছুটা নিম্নগামী হওয়ায় সরকারের নির্দেশিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বল্পপরিসরে খুলে দেওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদানের সময় বিবাদী বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে গিয়ে বাদীর সাথে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা-তর্কবিতর্কে লিপ্ত হয়। উপস্থিত শিক্ষকেরা বিবাদীকে ঘটনাস্থল হতে চলে যেতে বললে বিবাদী বাদীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়।’

বিজ্ঞাপন

প্রসিকিউশনের আলোকে আদালত তার সুবিধামতো সময়ে সমন জারির মাধ্যমে অভিযুক্ত মহিলা মোছা. মাহমুদা আক্তার মনিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেবেন বলেন জানায় জিআরও-৪ এর কার্যালয়।

সারাবাংলা/একে

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন