বিজ্ঞাপন

দর্শনা রেলস্টেশন দিয়ে অবৈধভাবে পেঁয়াজ আমদানির অভিযোগ

May 13, 2022 | 12:29 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

চুয়াডাঙ্গা: সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা রেলস্টেশন দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে পেঁয়াজ আমদানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করার ব্যাপারে ৫ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পর কিভাবে ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে ৪০ ওয়াগন পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে তা নিয়ে আমদানিকারকদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সিএন্ডএফ এজেন্ট ফিজা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী রায়হান জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোয়ালপাড়ার ইমরান মার্কেটের মেসার্স সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মাসুদ আলম ভারত থেকে ৪০ ওয়াগন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলে। সেই পেঁয়াজ দুয়েকদিনের মধ্যেই ভারতের গেদে রেলস্টেশন হয়ে দর্শনা রেলস্টেশন দিয়ে দেশে ঢুকবে। যার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

দর্শনা রেলস্টেশনের সুপারেন্ডেন্ট মীর লিয়াকত আলী বলেন, ভারত থেকে কোন পণ্য আমদানি করা হয় তা আগেই আমাদের জানা সম্ভব হয় না। পণ্যবাহী ট্রেন দর্শনা রেলস্টেশনে পৌঁছানোর পর ওই ট্রেনের দায়িত্বরত ব্যক্তি আমাদের কাছে আমদানি করা পণ্যের কাগজপত্র হস্তান্তর করে। সেগুলো পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে আমরা ওই কাগজপত্র দাফতরিকভাবে দর্শনা কাস্টমসে পাঠাই। দর্শনা কাস্টমস থেকে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এসে ট্রেনের ওয়াগন খুলে সেগুলো নিরীক্ষা শেষে তবেই ছাড়পত্র দেয়। তারপর আমদানি পণ্যর ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এর ফলে আমদানি নিষিদ্ধ কোনো পণ্যই দেশে প্রবেশ সম্ভব নয়।

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কাস্টমস সুপার শুভাশীষ কুন্ডু জানান, পেঁয়াজ আমদানী বিধিনিষেধের কোনো দাফতরিক চিঠি আমাদের হাতে আসেনি। তবে পেঁয়াজ আমদানির ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিধিনিষেধের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরই মধ্যে ভারত থেকে কোন পেঁয়াজের চালান দেশের অভ্যন্তরে ঢোকেনি বলে তিনি জানান।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন আমদানিকারক জানান, পেঁয়াজ আমদানীর ক্ষেত্রে সরকারিভাবে আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) দেওয়া বন্ধ রয়েছে। আইপি না পেয়েও কিভাবে মেসার্স সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে তা আশ্চর্যের বিষয়। সরকারি বিধিনিষেধ না মানায় পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তারা।

তারা আরও বলেন, নির্দেশ উপেক্ষা করে এ ধরনের কাজ গর্হিত অপরাধের সামিল। তারা দাবি করেন, ঢাকার ফার্মগেট খামার বাড়ির উদ্ভিদ সংগনিরোধের পরিচালক রণজিৎ পালসহ সকলকে বিষয়টি অবগত করানো হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ভারত থেকে যে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে তা আমরা অবগত রয়েছি। পেঁয়াজের চালান পৌঁছানোর পর ভারতের উদ্ভিদ সংগনিরোধ প্রতিবেদন ও ইমপোর্ট পারমিট হাতে পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধের বিষয়টি মানা হবে।

বিজ্ঞাপন

আমদানীকারক মেসার্স সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মাসুদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি প্রথমে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়টি আমলে না নিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি জানলাম না, আর আপনি জেনে গেলেন যে, ভারতের গেদে রেলস্টেশনে পেঁয়াজের চালান দেশে ঢোকার অপেক্ষায় রয়েছে’। কথাগুলো বলে তিনি মোবাইল ফোন কল কেটে দেন। কিছুক্ষণ বাদে ফিরতি ফোন কলে তিনি জানান, ‘আমি একজন আন্তর্জাতিক আমদানিকারক। সে কারণে সমস্ত নিয়মনীতি মেনেই আমাকে পণ্য আমদানি করতে হয়। ভারত থেকে পেঁয়াজ যখন দেশে ঢুকবে তখন আপনাকে আমি দর্শনায় নিয়ে যাবো এবং দেখিয়ে দেবো সঠিকভাবেই আমি পেঁয়াজ আমদানি করছি। এটা নিয়ে এত মাতামাতির কারণ নেই।’

সারাবাংলা/এসএসএ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন