বিজ্ঞাপন

ভবিষ্যতে আ.লীগের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন— জানতে চান মোশাররফ

May 21, 2022 | 6:53 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আগামীতে আওয়ামী লীগ আবারও রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সেক্ষেত্রে দলের (আওয়ামী লীগ) পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন— তা জানতে চেয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডয়েচে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না। চার বার তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি আসলে বুঝে গেছেন আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এ সরকার আর টিকে থাকতে পারবে না।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা তো ডয়েচে ভেলেকে বলেছেন, তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না। আমি ওবায়দুল কাদেরকে জিজ্ঞেস করতে চাই, ভবিষ্যতে যেদিনই আপনারা ক্ষমতায় আসেন, আপনাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। এটা জনগণকে জানান।

শনিবার (২১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুর সপ্তম মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এক মন্তব্যের জবাবে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বিএনপি আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবে। সেই নির্বাচনে আমাদের সঙ্গে যারা থাকবে, তাদের নিয়ে সরকার গঠন করা হবে। সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন খালেদা জিয়া।’

বিজ্ঞাপন

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপের প্রসঙ্গ টেনে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বাতিল করতে হবে। এরপর নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। সেই সরকার যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে, সেই কমিশনের সঙ্গে আমরা সংলাপ করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। অতএব, এই নির্বাচন কমিশন সংলাপের আহ্বান করলেই কী, আর না করলেই কী? বিএনপি এ বিষয়ে দু পয়সার দামও দেয় না।’

বিএনপির লক্ষ্য অর্জন বক্তব্য দিয়ে হবে না বলে মন্তব্য করে মোশাররফ বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, রাজপথে থাকতে হবে। সরকারকে সরাতে প্রোগ্রাম হবে, কর্মসূচি আসবে।’

বিজ্ঞাপন

পদ্মাসেতু ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় তারা ভালো নেই। তাদের ঘুম হয় না। ঘুম হয় না বলেই তাদের মুখে এ ধরনের অসংলগ্ন ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য আসে। আগের রাতে ঘুম হলে এ ধরনের বক্তব্য একজন মানুষ দিতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে পদ্মাসেতু থেকে টুস করে ফেলে দেওয়ার কথা বলেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশে কী প্রমাণিত হয়? খালেদা জিয়াকে পদ্মাসেতু থেকে টুস করে ফেলে দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন। আমরা অভিযোগ করতে চাই, খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকি তিনি দিয়েছেন।’

খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের জন্য দেশের জনগণের কাছে অনতিবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘ক্ষমা না চাইলে খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা হিসেবে, নির্দেশক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বিচার এদেশের জনগণ করবে।’

আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গে খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল ঘোষণা করেছে, এই বর্তমান সরকার, এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদ, এই শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সেই নির্বাচনে যাবে না। আমরা যে নির্বাচন চাই, সেই নির্বাচন হবে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সরকারি দলের লোকজন জনগণকে একটু বিভ্রান্ত করার জন্য বলেন— বিএনপি কী চায়, আমরা না কি তা বলতে পারি না। আমরাতো পরিষ্কার বলেছি। আজ আবার বলছি, বিএনপি চায় অনতিবিলম্বে এই শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ, বিএনপি চায় অনতিবিলম্বে এই অবৈধ সংসদ বাতিল, বিএনপি চায় একটি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার, আর সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন। সেই নির্বাচনে জনগণ যাদের ভোট দেবে, জনগণের প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠিত হবে। এটা বিএনপি চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলতে চাই জনগণকে ধোকা দেওয়া যায়, বারবার প্রতারণা করা যায়, বিএনপিকেও বার বার হয়তো টোপেও ফেলা যায়। এইবার বিএনপি সেই টোপে যাবে না। জনগণও সেই প্রতারণার স্বীকার ইনশাল্লাহ হবে না। আমাদের কথা পরিষ্কার।’

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এই ধরনের স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথেই ফয়সালা হবে। এই বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচারী এরশাদের পতন হয়েছে। সময় এসে গেছে আমরা যখন শ্রীলংকার কথা বলি, সরকার তখন কটাক্ষ করে। শ্রীলংকার মতো অবস্থা এদেশে হবে না। শ্রীলংবা বলতে, এখন যে রাস্তায় শ্রীলংকা আমরা সেই শ্রীলংকার কথা বলছি না। শ্রীলংকা বলতে— এক ভাই প্রেসিডেন্ট, এক ভাই প্রধানমন্ত্রী, দুইজন মন্ত্রী, একজন ভাইয়ের ছেলে মন্ত্রী। পরিবারতন্ত্র এবং স্বৈরশাসন ১৮ বছর চালিয়েছে। এই সময়ে অর্থনৈতিকভাবে শ্রীলংকা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেল। তখন মানুষ যখন রাস্তায় নেমেছে। দেশটির সেনাপ্রধান, পুলিশ প্রধান কিন্তু ওই রাজাপাকসের ভাইদের রক্ষা করতে পারেনি। আমরা বলছি, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে বাংলাদেশ শ্রীলংকার চেয়ে আজ খারাপ অবস্থায় রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের বোধদয় না হলে বাংলাদেশের জনগণ রাস্তায় নামবে এবং শ্রীলংকার চেয়েও বাংলাদেশে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। সেই দিনের জন্য আমাদের দল, সংগঠন, অঙ্গসংগঠন সংগঠিত হচ্ছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এই সরকারকে অতি দ্রুত হটানো জন্য কার্যকর প্রোগ্রাম হবে, কর্মসূচি আসবে। এবং যারা গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক শক্তি— ব্যক্তি, দল গোষ্ঠী সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান জানাব। ঐক্যবদ্ধভাবেই ইনশাল্লাহ আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করব।’

ছাত্রদল নেতা নাহিদুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল এবং নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুর ছোট বোন ফেরদৌসী আক্তার মিষ্টি প্রমুখ।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন