বিজ্ঞাপন

অবসরপ্রাপ্ত ইউপি সচিবদের বকেয়া আনুতোষিক দিতে হাইকোর্টের রুল

May 24, 2022 | 9:50 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) অবসরপ্রাপ্ত সচিবদের এককালীন শতভাগ আনুতোষিক ও নিয়মিত উৎসব ভাতা প্রদান না করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৪ মে) রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী মো. মাজেদুল কাদের।

এর আগে, কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. ইউসুফ ভূঁইয়াসহ ১৪৭ জন অবসরপ্রাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের প্রায় ১০ কোটি টাকা বকেয়া আনুতোষিক এবং তাদের বিধিমালা অনুযায়ী নিয়মিত উৎসব ভাতা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ৩০ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়।

তারও আগে, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। নোটিশ পাওয়ার পরও এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত ২১ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

বিজ্ঞাপন

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের সচিববেরা অবসর গ্রহণকালে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গ্রস পেনশনের ৫০ শতাংশ বাধ্যতামূলক সমর্পণ করে তার বিপরীতে আনুতোষিক পেয়েছেন। কিন্তু গ্রস পেনশনের বাকি ৫০ শতাংশ সমর্পণ করা সত্ত্বেও কোনোধরনের আনুতোষিক পাননি। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সমর্পিত বাকি ৫০ শতাংশের বিপরীতে তারা ওই টাকার অর্ধেক হারে এককালীন আনুতোষিক প্রাপ্য হবেন। কিন্তু কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই তাদের বাকি আনুতোষিক আটকে দিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যা শুধু বেআইনি নয়, বরং অবসরপ্রাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং বৈষম্যমূলক।

রিটে আরও বলা হয়, ২০১১ সালের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) কর্মচারী চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিবরা পরিষদের নিজস্ব কর্মচারী। বিধিমালা অনুযায়ী যেহেতু তারা অন্যান্য সরকারি কর্মচারীর ন্যায় মাসিক পেনশনের আওতাভুক্ত নয়, সেহেতু গ্রস পেনশনের সমস্ত টাকা সরকারের নিকট সমর্পণ করে গ্রস পেনশনের সমুদয় পরিমাণ থেকে মোট ৭৫ শতাংশ এককালীন আনুতোষিক পাওয়ার বিধান রয়েছে।

এছাড়া ২০১১ সালের বিধিমালা অনুযায়ী তাদের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন-ভাতা প্রদান এবং উৎসব ভাতা দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণ আনুতোষিক প্রদানে অস্বীকৃতি এবং কোনো ধরনের উৎসব ভাতা না দেওয়া আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও ১৯৯৪ সালের ইউনিয়ন পরিষদ কর্মচারী (ভবিষ্য তহবিল এবং আনুতোষিক) বিধিমালা অনুযায়ী সচিবরা সরকারি কর্মচারীদের মতোপেনশন, আনুতোষিক এবং উৎসব ভাতা পাওয়ার হকদার। আইনের সুস্পষ্ট বিধান থাকার পরও অবসরপ্রাপ্ত সচিবদের সম্পূর্ণ আনুতোষিক এবং কোনো প্রকার উৎসব ভাতা প্রদান না করা বেআইনি, নিপীড়নমূলক এবং অযৌক্তিক।

আনুতোষিক এবং উৎসব ভাতা প্রাপ্তি একজন সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারির ন্যায্য অধিকার। যা থেকে কোনোভাবেই তাকে বঞ্চিত করা যাবে না। অথচ সারাদেশে হাজার হাজার অবসরপ্রাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদের সচিবদের তাদের আইনানুগ অবসরকালীন সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এসব আইনি যুক্তি তুলে ধরে আদালতে রিট দায়ের করা হয়েছিল। আজ শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন