বিজ্ঞাপন

দূষণমুক্ত নদীর দাবিতে পরিবেশ দিবসে বুড়িগঙ্গায় গণগোসল

June 5, 2022 | 9:23 pm

স্টাফ করেস্পন্ডেন্ট

ঢাকা: ঢাকা ও নদীপাড়ের মানুষ বাঁচাতে বুড়িগঙ্গা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে ‘বুড়িগঙ্গায় গণগোসল’ কর্মসূচি পালন করেছেন পরিবেশ অধিকারকর্মীরা। বুড়িগঙ্গার পানিকে গোসলের উপযোগী করা, দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরি এবং বুড়িগঙ্গার নদীদূষণের শিকার ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এই আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয় মোহাম্মদপুরের বসিলা ব্রিজের নিচের খেয়া ঘাটে। সকাল সাড়ে ১০টায় বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে বুড়িগঙ্গায় গণগোসলে অংশ নেন অংশগ্রহণকারীরা। এসময় বুড়িগঙ্গার পানিতে গোসল করার পাশাপাশি ব্যানারে, প্ল্যাকার্ডে নদী বাঁচানোর বিভিন্ন বার্তা তুলে ধরেন তারা।

এই কর্মসূচির আয়োজক ছিল জেসিআই ঢাকা নর্থ, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার। আয়োজনে অংশীদার হিসেবে ছিল বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), ক্যাচ বাংলাদেশ, গ্রিন সেভার্স, কানেক্ট৩৬০, সবুজপাতা, রিভার বাংলা, নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেন্ডেশন, নদীযাত্রিক, নদীটিভি, বুড়িগঙ্গা রিভার কোয়ালিশন, জেন ল্যাব ও ঢাকা ইয়ুথ ক্লাব।

বিজ্ঞাপন

আলোচনায় বক্তারা বলেন, দূষণের কারণে বুড়িগঙ্গা নদী ও এর আশেপাশের পরিবেশ মারাত্মক হুমকিতে। ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে দূষণ বন্ধ করতেই হবে। এই নদীর পানি এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে, যেন মানুষ এতে গোসল করতে পারে। একইসঙ্গে এই নদীর পরিবেশগত ভারসম্য রক্ষা করতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজনের একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা দেন ‘বুড়িগঙ্গায় গণগোসল’-এর সমন্বয়ক মো. শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গা নদী ঢাকা শহরের ত্রাণকর্তা। এই নদীর তীরে ৫২ লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস, যারা দূষিত পানির কারণে অর্থনৈতিক, শারীরিকসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছেন। ভিন্নধর্মী এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধ ও এই নদীর পানি গোসলের উপযোগী করতে সবাইকে উৎসাহিত করতে চাই।

বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, ঢাকা শহরের উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বুড়িগঙ্গাকে ঘিরে পরিকল্পিত ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শহরের যতই উন্নয়ন হয়েছে, ততই বুড়িগঙ্গার অবস্থা খারাপ হয়েছে। ফলে নদী তার সৌন্দর্য হারিয়ে এখন দূষণে জর্জরিত। বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বুড়িগঙ্গাকে বাঁচানোর গুরুত্ব তুলে ধরে রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, কল-কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, গৃহস্থালির বর্জ্য, চিকিৎসা বর্জ্য, পয়ঃনিষ্কাশন, মৃত প্রাণী, প্লাস্টিক ও তেল বুড়িগঙ্গাকে প্রতিনিয়তই দূষণ করে যাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। বুড়িগঙ্গা নদী কার্যত প্রাণহীন হয়ে পড়েছে। বুড়িগঙ্গাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে ঢাকাকে বাঁচানোর জন্যই।

গণগোসলের সময় বছিলা এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া বলেন, একসময় নদীতে মাছ পাওয়া যেত। পানিতে দূষণ ছিল না। নদীতে স্নান করতাম আমরা। কিন্তু সেসব এখন দূর অতীতের বিষয়। দূষণের কারণে আমাদের জীবন-জীবিকার অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে। আমরা চাই বুড়িগঙ্গা বাঁচুক।

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বুড়িগঙ্গা বাঁচাতে বক্তব্য রাখেন নদী মোর্চার সদস্য অ্যাডভোকেট ইবনুল সাইদ রানা, নোঙ্গর’র সভাপতি সুমন শামস্, সবুজপাত’র সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ আহমেদ, রিভার বাংলা’র সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ, জেসিআই ঢাকা নর্থের প্রেসিডেন্ট সাখাওয়াত হোসেন, গ্রিন সেভার্সের প্রতিষ্ঠাতা আহসান রনি, ইএমকে সেন্টারের এডুকেশন অ্যাডভাইজর রাজন সিদ্দিকী তুহিন, যুব বাপা’র সেক্রেটারি রওমান স্মিতাসহ অন্যরা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন