বিজ্ঞাপন

জি-৭ এর বৈঠকে আলাপ হবে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে

April 21, 2018 | 11:50 am

।। এম এ কে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বিশ্বের সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রগুলোর জোট জি-৭ এর আগামী সম্মেলনে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করা হবে। চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট বৈশ্বিক শান্তি, প্রগতি এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য জি-৭ এর আগামী সম্মেলনের আলোচ্য বিষয়ে বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।

সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রগুলোর জোট জি-৭ এর ৪৪ তম সম্মেলনটি আগামী ৮ ও ৯ জুন কানাডায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘সামনের জি-৭ এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কটকে অর্ন্তভুক্ত করেছি। এই বিষয়টি এখন বৈশ্বিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগের।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে গত ১৬ এপ্রিল ব্রিটেনের এশিয়া বিষয়ক মন্ত্রী মার্ক ফিল্ড দেশটির জাতীয় সংসদে এমপিদের একাধিক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘চলমান রোহিঙ্গা বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। নিরাপদে এবং পূর্ণ নাগরিক অধিকার দিয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর এখনো অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। সঙ্কটটি নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগামী জি-৭ এর সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আলোচনা করবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি, জি-৭ এর বৈঠকে সম্মিলিতভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যাতে এই সঙ্কটের সমাধান হয়। পাশাপাশি এই সঙ্কটের জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শক্ত বার্তাও দেওয়া হবে।’

ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চল পরিদর্শন করেন। তিনি বাংলাদেশ সফর করেন। দেশটির পররাষ্ট্র এবং কমনওয়েথ কার্যালয় থেকে বরিস জনসনের রাখাইন অঞ্চল পরিদর্শন নিয়ে এক বার্তা প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ওই বার্তায় বরিস জনসন বলেন, ‘রাখাইনের ঘটনায় আমি হতবাক। অঞ্চলটিতে পুরোপুরি ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। শত শত ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের ঘরে ফেরার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। রাখাইনে যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা উদঘাটনে স্বাধীনভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তদন্ত করতে দিতে হবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমি দেশটির মন্ত্রী অং সান সুচির সঙ্গে আলাপ করেছি। কিন্তু সুচি ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানেন কিনা, এই বিষয়ে আমি সন্দিহান।’

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চলমান নির্যাতনের আরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বব রায়ে একাধিকবার বাংলাদেশ সফর করেন।

কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বব রায়ে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে তার প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তার প্রতিবেদনটি জি-৭ এর সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ সফর শেষে বব রায়ে গত ফেব্রুয়ারিতে কানাডায় ফিরে আন্তর্জাতিক এক সংবাদ সংস্থাকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বলেন, ‘রাখাইনে অমানবিক নির্যাতন চলছে। অনেক মানুষ মারা গেছে। এই বিষয়ে সকলের কথা বলা প্রয়োজন। আরও অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার বিষয়ও রয়েছে। অথচ মিয়ানমারের রাজনীতিক এবং সরকারের মন্ত্রী অং সাং সুকি এমন ভাব করছেন যেন রাখাইনে কিছুই হয়নি। কিন্তু এমন ভাবে কোনো সমাধান আসবে না।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, মিয়ানমার সরকার পশ্চিম আরাকান রাজ্যের মুসলমান রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোর নাম পরিবর্তন করেছে। এর আগে দেশটি মুসলমান রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে সমান করেছে। এই বিষয়গুলো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাধা দেবে।

গত বছরের আগস্ট থেকে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর নির্যাতন শুরু হলে সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে থাকে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বর্তমানে কক্সবাজারসহ দেশের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

সারাবাংলা/জেআইএল/এমএইচ/এমআই

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন