বিজ্ঞাপন

জাজিরা প্রান্তেও পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন প্রধানমন্ত্রীর

June 25, 2022 | 1:26 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-২ উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে টোল প্লাজা সংলগ্ন উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-২ উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি মোনাজাতে অংশ নেন।

উদ্বোধন শেষে মাদারীপুরের শিবচরে জনসভায় যোগ দিতে রওয়ানা হন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ১২টা ০৬ মিনিটে সেতু দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর জাজিরার অভিমুখে রওয়ানা হয়। এর আগে বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে নিজহাতে নির্ধারিত টোল দেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে মুন্সিগঞ্জের দোগাছি পদ্মা সেতু সার্ভিস এরিয়া-১ এ পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে পদ্মা সেতুর উত্তর থানা সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে উপস্থিত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। সমাবেশে অংশ নেন সাড়ে ৩ হাজার সুধীজন। যাদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, বিশিষ্ট নাগরিক ও সাংবাদিকরা। সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করেন। পরে মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।

এই পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার কোটি মানুষকে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত করবে।

১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর উদ্বোধনের পরপরই দাবি ওঠে পদ্মার বুকে সেতু নির্মাণের। তবে প্রমত্তা পদ্মাকে বাগে এনে এর বুকে ইস্পাত-কংক্রিটের কাঠামো নির্মাণ সহজ ছিল না। সেই প্রকৌশল দিক বাদ দিলেও পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়েও তৈরি হয় প্রতিবন্ধকতা।

বিজ্ঞাপন

১৯৯৮-৯৯ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর ২০০১ সালের ১২ জুলাই প্রথম পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্ব চার দলীয় জোট ক্ষমতায় এলে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি সেতু প্রকল্পের। ওয়ান-ইলেভেনখ্যাত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অবশ্য সেতুটির প্রথম প্রকল্প একনেকে পাস করা হয়। ২০০৯ সালে সেতুর নকশা প্রণয়নের প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরুর প্রস্তাব। প্রথম দফায় সংসদে সেতুর ব্যয় সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।

২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়। তবে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ঋণচুক্তি স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০১২ সালের ২৩ জুলাই তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। শর্তসাপেক্ষে এ প্রকল্পে আবার ফেরতও আসে বিশ্বব্যাংক। তবে ২০১৩ সালের ৪ মে বিশ্বব্যাংকের ঋণসহায়তা প্রত্যাখ্যান করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।

২০০১ সালের ১২ জুলাই প্রথম পদ্মা সেতু নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। এরপর দীর্ঘ চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের মূল পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। ২০১৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর স্প্যানে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো শুরু হয়। সড়কপথের জন্য স্ল্যাব বসানোর কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ।

বিজ্ঞাপন

২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর সবশেষ ৪১তম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যানে পূর্ণ ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট পদ্মা সেতুতে সবশেষ সড়ক স্ল্যাব স্থাপনের পর মূল সেতুতে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয় ১০ নভেম্বর।

২০২২ সালের ১৭ মে পদ্মা সেতুতে যানচলাচলের জন্য টোলের হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ‘পদ্মা সেতু’ নামকরণ করে সেতু বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় ২৯ মে।

শেখ হাসিনার হাত ধরে সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো এক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের যে সাহস দেখিয়েছিল বাংলাদেশ, সেই শেখ হাসিনার হাতে উদ্বোধনের মাধ্যমেই আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ পরিচয়কে বিশ্বের বুকে তুলে ধরার এক চক্র পূরণ হলো আজ।

সারাবাংলা/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন