বিজ্ঞাপন

পাটুরিয়ায় ১০ মিনিটেই মিলছে ফেরি, নেই যানবাহন-যাত্রীর চাপ

June 27, 2022 | 5:12 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

মানিকগঞ্জ: যানবাহন এবং যাত্রীর চাপ না থাকায় পাল্টে গেছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটের চিরচেনা দৃশ্য। যেখানে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা যানজটে নাকাল থাকতো দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রধান প্রবেশপথ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট, সেখানে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই যানবাহন এবং যাত্রী পারাপার কমে আসে এই ঘাটে। এখন ভোগান্তি নেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে। ট্রাক টার্মিনালে সারিসারি ট্রাকের জট নেই। ছোটগাড়ি এবং যাত্রীবাহী যানবাহনের চাপ কমে গেছে অনেকাংশে। ঘাটে আসার ১০ মিনিটের মধ্যেই মিলছে পারাপারের ফেরি।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৭ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাটুরিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে অচেনা দৃশ্য। নেই বাসের লম্বা সারি, নেই ট্রাকের জট, ছোট গাড়ি অর্থাৎ প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের বিশাল বহর। আঠারোটি ফেরির মধ্যে বেশিরভাগ ফেরি ঘাটে অলস সময় পার করছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরপরই পাল্টে গেছে সেই চিরচেনা দৃশ্য।

তিন ঘাটের কোনো ঘাটেই যানবাহনের এবং যাত্রীর চাপ নেই সকাল থেকেই। বেলা এগারোটার পর কিছু যাত্রীবাহী বাসের দেখা মিলে পাটুরিয়া ঘাটে। পাটুরিয়া বাসের ট্রাকের টিকিট কাউন্টার থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত একেবারেই ফাঁকা। দুই-একটি করে গাড়ি আসছে আর সেই গাড়িগুলো অনায়াসেই ফেরিতে উঠে পদ্মা পাড়ি দিয়ে দৌলতদিয়া প্রান্তে যাচ্ছে। কোনো ধরনের দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি যাত্রী কিংবা যানবাহন চালকদের।

বাস চালক, যাত্রী এবং ট্রাক চালকরা জানান, ১৯৯২ সালে পাটুরিয়া ঘাট চালু হওয়ার পর থেকে দুর্ভোগ-ভোগান্তি মাথায় নিয়েই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে পাড়ি দিতে হয়েছে তাদের।

বিজ্ঞাপন

গোল্ডেন লাইন পরিবহনের যাত্রী রেহেনা আক্তার বলেন, ‘পরিবার নিয়ে বোয়ালমারী যাচ্ছি। পাটুরিয়া ঘাটে এসে মনে হচ্ছে যেন অচেনা ঘাটে এসে পৌঁছালাম। গাড়ির চাপ নেই। ঘাটে এসে ১০ মিনিটেই ফেরিতে উঠতে পেরেছি। পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে আজ শান্তিতে ফেরি উঠে বাড়ি যেতে পারছি।’

আরেক যাত্রী আমিনুর রহমান বলেন, ‘সপ্তাহে ২ বার পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ঢাকা আসা-যাওয়া করি। কি যে ভোগান্তি বলে বোঝানো যাবে না। পদ্মা সেতু এখন আমাদের স্বস্তি এনে দিয়েছে। দুর্ভোগ ছাড়াই পারাপার হতে পেরেছি।’

বিজ্ঞাপন

বাস চালকরা জানান, অনেকেই পদ্মা সেতু পার হয়ে যাতায়াত করছেন, যার কারণে পাটুরিয়ার ঘাটে যানবাহনের চাপ কমে গেছে। ঘাটে এসে ফেরির জন্য আগের মতো আর অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।

ট্রাকচালক কামরুল হাসান বলেন, ‘ফেরি পারাপার হতে গিয়ে জীবনে অনেক ভোগান্তি পেয়েছি। দীর্ঘদিন যাবৎ গাড়ি চালাই। আর এই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট দিয়েই আমাদের মূল যাতায়াত। জীবনের এই প্রথম কোনো ধরনের ভোগান্তির ছাড়াই নদী পার হতে পারছি না।’

ফেরির মাস্টাররা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটে যানবাহনের চাপ কমে যাওয়ায় ফেরিগুলোকে নিয়ে অলস সময় পার করতে হচ্ছে। তবে পদ্মায় স্রোত থাকার কারণে পারাপারে একটু সময় বেশি লাগছে।

বিআইডব্লিউটিসি’র ডিজিএম শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে ঠিকই কিন্তু আগামী সাতদিন না যাওয়া পর্যন্ত বোঝা যাবে না পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটে যানবাহন পারাপার কতটা কমবে কি বাড়বে। তবে ছোট গাড়ি অর্থাৎ প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসের চাপ অধিকাংশই কমে গেছে। তবে ২০ শতাংশ যাত্রীবাহী বাস এই রুটে আসছে না। তাছাড়া ট্রাক পারাপার আগের মতই আছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে মোট ২১টি ফেরির মধ্যে আঠারোটি ফেরি চলাচল করছে। তিনটি ফেরি রিজার্ভে রাখা হয়েছে।’ যানবাহনের চাপ কমে গেলেও ফেরি কমানোর সিদ্ধান্ত আপাতত নেই বলে তিনি জানান।

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন