বিজ্ঞাপন

‘পাঠ্যপুস্তক নিয়ে সংসদে দেওয়া বক্তব্যের অপব্যবহার হচ্ছে’

July 6, 2022 | 7:21 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সম্প্রতি তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবই থেকে বেশ কিছু বিষয় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। যদিও সে বক্তব্যে ভুল স্বীকার করে তা প্রত্যাহারের অনুরোধও জানিয়েছেন। কিন্তু তার সে বক্তব্য ভাইরাল হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৬ জুলাই) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীর নজরে আনা হলে তিনি বলেন, ‘সমাজের একটি অংশ যারা সব সময়ই কিছুটা হলেও ধর্মের দোহাই দিয়ে নানাভাবে আমাদের এগিয়ে যাওয়াকে বন্ধ করার চেষ্টা করে। তারা ওই সংসদ সদস্যের বক্তব্যের ভিডিওটি ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।’

ওই সংসদ সদস্যের এমন কাণ্ডের সমালোচনা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে যেখানে থাকি না কেন, যে অবস্থানেই থাকি না কেন, সেটা জনপ্রতিনিধি হই বা অন্য কিছু। শিক্ষা ব্যবস্থা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এরসঙ্গে দেশের প্রতিটি মানুষকে ছুঁয়ে যায়। এটি প্রতিটি মানুষের সঙ্গে সম্পর্কিত। সেই বিষয়টির সঙ্গে কথা বলার সময় সবচেয়ে ভালো হয়, সঠিক তথ্যটি জেনে নিয়ে কথা বলা। আরেকজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির পক্ষে সেটা তাদের কাছ থেকে চাওয়াটা অনেক বেশি।’

‘আমি তাকে (সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম) সাধুবাদ জানাতে চাই যে, আগে তথ্য না দেখে নিলেও পরে যাচাই করে নিয়েছেন। ভুল স্বীকার করে নিয়ে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এটুকুর জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তবে তিনি বক্তব্য দেওয়ার আগে সারাদেশে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার আগে তথ্যটা সঠিক যাচাই করে তার কথা বলা উচিৎ ছিল। কারণ আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে কথা বলার আগে তথ্য যাচাই করতে হবে’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তার এই বক্তব্যের ভিডিওটি ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। সমাজের একটি অংশ যারা সবসময়ই কিছুটা হলেও ধর্মের দোহাই দিয়ে নানাভাবে আমাদের এগিয়ে যাওয়াকে একটা বন্ধ করার চেষ্টা করে তারা ওই সংসদ সদস্যের বক্তব্যের ভিডিওটি ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। তিনি যা বলেছেন, সেখানেই শেষ না, যেখানে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সেখানেই শেষ না। এভাবে বলে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটির ব্যাপক অপব্যবহার হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই বক্তব্য দেওয়ার কিছুদিন আগে থেকেই আমার নজরে এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক একটা প্রচারণা চলছিল। আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমে ধর্মশিক্ষা বাদ দেওয়া হয়েছে। যা অনেক বড় মিথ্যা। ধর্ম শিক্ষা ছিল এখনও আছে। বাদ দেওয়ার কোনো কারণ দেখছি না। কারণ আমরা বারবার বলছি জ্ঞান, দক্ষতা তা যেমন থাকবে তার পাশপাশি সঠিক মনোভাব ও তার মূল্যবোধের জায়গায়, নৈতিকতার জায়গায় ধর্ম শিক্ষা একটি আবশ্যিক বিষয়। কাজেই ধর্মশিক্ষা বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা বাদ দেইনি। বরং ধর্ম শিক্ষার বইগুলো এখন নতুন কারিকুলামে সবকিছুই যেমন আমরা করে করে শেখানো পদ্ধতিতেও যাচ্ছি, তেমনি ধর্ম শিক্ষার বইগুলোও কিন্তু আরও অনেক বেশি শিক্ষার্থীদের কাছে যেন তারা আরও ভালো করে সত্যিকারের বোধগুলোকে অনুধাবন করতে পারে, জীবনে যেন চর্চা করতে পারে সেভাবেই বইগুলো করা হয়েছে।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যারা ধর্ম শিক্ষা তুলে দেওয়া হয়েছে বলে ধোয়া তুলছেন, তাদের উদ্দেশ্য ধর্মকে রক্ষা করা না, তারা ধর্মকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে দেশকে অস্থিতিশীল করা। দেশের ধর্মভীরু মানুষকে অন্যায়ভাবে উস্কে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরনের পরিবেশ তৈরি করা এবং আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা।’

বিজ্ঞাপন

যারা এ ধরনের বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে, ধর্মের নামে মিথ্যাচার চালায় তাদের সকল অপপ্রচার চালায় তাদেরকে উপেক্ষা করতে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবই থেকে বেশ কিছু বিষয় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। যদিও তার সে তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এরপর তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকার বরাবর চিঠি লিখে ভুল স্বীকার করে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন।

সারাবাংলা/জেআর/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন