July 10, 2022 | 12:39 pm
আহমেদ জামান শিমুল
গত দুই বছর করোনার কারণে দর্শক হলে যাচ্ছিল না। আর আগের ঈদে দিই নাই, কারণ তখন সহকারীর ছবি (এম রাহিম পরিচালিত ‘শান’) মুক্তি পেয়েছিল।
আমি কিন্তু কখনই বলি নাই এটি রিফাত-মিন্নির ঘটনা নিয়ে নির্মাণ করেছি। আমার প্রত্যেকটা গল্পই কোন না কোন ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত। আমার যে গল্পটা বানানো উচিত বলে মনে হয়, সেটা বানাই। আপনি দেখবেন, শুরু থেকেই আমার প্রতিটা গল্পই কোনো না কোনো ইস্যু নিয়ে বানানো। ‘সাত নম্বর ফ্লোর’ও কিন্তু সত্য ঘটনা অবলম্বনে না। তবে অনুপ্রেরণা আছে। এটাও সেরকম। কোনো না কোন সত্য ঘটনা থেকে আমি অনুপ্রেরণা পেয়েছি।
না, এটা আমি বলতে পারবো না। এটা হলে সিনেমা দেখেই দর্শকদের বের করতে হবে। এটা হলে সিনেমা দেখে দর্শকদের বের করতে হবে। এটাকে আপনি ট্রু ইভেন্টও বলতে পারবেন না। কারণ তাহলে যেখান থেকেই আমি গল্প নিই না কেন আমাকে হুবহু সে গল্পই দেখাতে হবে। এটাকে আপনি ফিকশনাল বলতে পারেন। একটা মানুষ দুটা মানুষকে ভালোবাসে এরকম জায়গা থেকে গল্পটা আমি আমার মত করে লিখেছি।
না, না ওরকম না। ‘জানোয়ার’-এ কিন্তু আমরা কাইন্ড অব কীভাবে কীভাবে খুনগুলো হয়েছিল, তা দেখেছি। ‘পরাণ’ তো আমরা হুবহু ফলো করি নাই কোনো গল্প। আমরা যেকোন জায়গা থেকে অনেকগুলো গল্প নিয়ে এক জায়গায় দাঁড় করিয়েছি। আমরা গল্পটা বানানো।
শুরু থেকেই আমি চাচ্ছিলাম নতুন কাউকে নিয়ে ছবিটা করতে। তার ফ্রেশ অভিনয় মানুষ বিশ্বাস করবে। কারণ তখন তো আর ইচ্ছে ছিল না তিন বছর পর ছবিটি মুক্তি দেওয়ার। সেখান থেকে খুঁজতে খুঁজতে রাজকে পেয়ে গিয়েছিলাম। মূলত আমাদের একটা কমন ফ্রেন্ড সার্কেল রয়েছে। ওখানেই প্রথম ওর সঙ্গে পরিচয়। সিয়ামের খুব ভালো বন্ধু সে। তাছাড়া ও শুধু সিনেমায় করতে চায় বলে জানায় আমাকে। তারপর একদিন আমি ওকে ডেকে গল্পটা শোনাই। আমার কাছে মনে হয়েছে, এ চরিত্রের জন্য যতটুকু পাগলামি দরকার তা ওর ভিতরে রয়েছে। যে পাগলামিটা অনেকের চোখে থাকে না।
আর একদম ছোট থেকেই আমার ঝুঁকি নিতে ভালো লাগে। এতটুকু বলতে পারি, আমার এ ঝুঁকি নেওয়া স্বার্থক হয়েছে।
একদমই না। আমি তো জাজ থেকে ‘রাস্তা’ নামে একটা ছবি করছি। আর তারা হচ্ছে আমার বাবা-মা। যারা আমাকে জন্ম দিয়েছে ফিল্মে। আমি বাইরে কাজ করেছি, কারণ তাদের সাথে তো আমার কোন চুক্তি ছিল না। আর আমি সবসময় নিজের মতো করে কাজ করতে পছন্দ করি। এ জন্য সব সেক্টরেই কাজ করেছি। আমি চ্যানেল আই, শাপলা মিডিয়া, লাইভ, চরকি সবার সঙ্গেই কাজ করেছি। আমি কারো একার হতে চাই না।
এটা কিন্তু ঘটছে না, এটা যারা বলছে তারা পুরোটায় হিংসে থেকে বলছে। প্রথমত রায়হান রাফির মত এত তাড়াতাড়ি এত ছবি কেউ বানাতে পারে নাই। ২০১৮ সালে আমার প্রথম ছবি মুক্তি পেয়েছিল। এত বেশি ছবি মুক্তি ও ব্যবসাসফল এ সময়ের মধ্যে কোন পরিচালক বানাতে পারে নাই। আমার হাতে সবচেয়ে বেশি সিনেমা, প্রফার ফিল্ম। আমি এমন সিনেমা করি না যেখানে নায়ক-নায়িকা প্রযোজক। আমার প্রত্যেকটা সিনেমা প্রফেশনাল সিনেমা। এর মানে আমার ইচ্ছে মত নায়ক-নায়িকা নিই। এটা আমি অহংকার করছি না, বাংলাদেশের যে কোন প্রযোজক সিনেমা বানাতে আসলে প্রথমে আমার কাছে আসে। যখন আমাকে রিচ করতে পারে না এবং বলি এধরনের সিনেমা আমি করবো না। তখনই কাজটা অন্য মানুষের কাছে যায়। আমি ‘দামাল’, ‘নূর’ বানালাম। ‘দামাল’ বাংলাদেশে ‘কেজিএফ’-এর মত একটা ছবি।
এতে প্রচুর গ্রাফিক্স। এটা একটা চার বছরের সিনেমা। যেই বানাক এ সময় লাগবেই। অনেকের কাছে মনে হতে পারে ওটিটিতে কাজ করা সহজ। সহজ থাকলে করে দেখাক। বাংলাদেশের টপ ক্লাস পরিচালকরা এখানে কাজ করছে— মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, আদনান আল রাজীব, শিহাব শাহীন এর একের পর এক ভালো কাজ দিয়ে যাচ্ছে। অভিনয়েও কিন্তু আফরান নিশো, সিয়াম আহমেদ, জয়া আহসানদের মতো টপ ক্লাসরা কাজ করছে। যারা কাজ পাচ্ছে না তাদের আজীবনই বিভিন্ন রকম ঝামেলা থাকবে। এধরনের একটা গ্রুপ প্রথম থেকেই আমার ক্যারিয়ারে আছে। তবে এদের সম্পর্কে যত কম কথা বলা যায়, তত ভালো।
প্রযোজকের কারণে। টাকা দিতে না পারলে আমার কী করা উচিত? এখন লাইভ টেকনোলজিস সময় মতো ‘পরাণ’-এর টাকা দিয়ে দিছে বলে ঈদে দর্শকদের সামনে ছবিটা আনতে পেরেছি। এখন প্রযোজক যদি পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে ছবি বানাতে আসে, আমি তো জানবো না তার কাছে কত টাকা আছে। তখন যদি ছবি শেষ করতে না পারে, নায়িকা যদি মোটা হয়ে যায়, তার বাচ্চা হয়, আমার শিডিউল চলে যায়— তাহলে আমি সিনেমাটা কেনো বানাবো? প্রযোজক যদি আমার শিডিউল হারিয়ে ফেলেন, পেতে অনেক সময় লাগবে— এ রুলসটা আমি শুরু করেছি। এটা এতদিন এটা নায়কদের ছিল। পরিচালকরা বেকার ছিল। ভাবতো একটা সিনেমা বানিয়ে আরেকটা সিনেমার জন্য অসহায়ের মত প্রযোজকের পিছনে ঘুরবে। আমার শিডিউল কেউ যদি মিস করে তাহলে যখন ফাঁকা হবে তখন তার ছবিটি আমি করবো। এখন যদি ‘স্বপ্নবাজি’র প্রযোজক সিনেমা বানাতে চায় আমি তো পারবো না। কারণ আমি তো বুকড।
এ বছর পুরোটা আমি বুকড। নতুন ছবি নিলে তা আগামী বছরে করতে হবে।
অনেকগুলো সিনেমা। আমি ‘রাস্তা’ বানাচ্ছি। ওটিটির জন্য কাজ করবো। অনেক বড় একটা অ্যাকশন ছবির ঘোষণা দিব শিগগিরই। এতটুকু বলতে পারি বাংলাদেশের কোন একটা বাহিনির উপর বানাচ্ছি।
দুটো সিনেমা সেন্সর বোর্ডে জমা পড়েছে। ব্যাক টু ব্যাক এগুলো মুক্তি পাবে। সমালোচকরা খুব শিগগিরই জবাব পেয়ে যাবে। আগামী দু-তিন মাস শুধু আমার সিনেমাই দেখবে।
তমা মীর্জা ও সিয়াম আহমেদ ইন্ডাস্ট্রিতে আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। আর নতুন কারো সঙ্গেও গুঞ্জন আসার সম্ভাবনা নেই।
এটা কেউ বলতে পারে আগে থেকে?
হ্যাঁ, থাকুক না রহস্য।
সারাবাংলা/এজেডএস/এএসজি