বিজ্ঞাপন

হেপাটাইটিসে আক্রান্তদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই জানেন না

July 25, 2022 | 12:09 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশের পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশ মানুষ হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের বাহক। একইভাবে দেশের দশমিক ছয় শতাংশ মানুষ হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের বাহক। এদের মাঝে অনেকেই দীর্ঘমেয়াদী ইনফেকশন নিয়ে, নানা জটিল লিভার রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসে আক্রান্ত।

বিজ্ঞাপন

আশঙ্কাজনক বিষয় হলো, দেশে প্রতি ১০ জনের মাঝে নয় জনই জানেন না যে, তার শরীরে হেপাটাইটিস ‘বি’ অথবা ‘সি’ ভাইরাস রয়েছে। একইভাবে দেশে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসে আক্রান্তের হার এক শতাংশেরও নিচে থাকলেও রোহিঙ্গাদের আক্রান্তের হার অনেক বেশি। আর তাই এই রোগ প্রতিরোধে ডি সেন্ট্রালাইজেশন করে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

রোববার (২৪ জুলাই) রাজধানীর বিজয়নগরে হোটেল অরনেটে লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।

লিভার বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল ডা. মো. রবিউল হোসেন বলেন, ‘আমরা জানি মোট পাঁচ রকমের হেপাটাইটিস ভাইরাস রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হলো বি এবং সি। বাকিগুলো এতটা মারাত্মক নয়। চিকিৎসায় সেগুলো ভালো হয়ে যায়।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে এক কোটি মানুষ হেপাটাইটিস বি এবং সিতে আক্রান্ত। এই ভাইরাস মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর, বিশেষ করে লিভারের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এই ভাইরাসের সঙ্গে আমাদর পরিচয় ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে। এর আগে একে আমরা জন্ডিস হিসেবেই জানতাম।’

লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, “মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ১৮ শতাংশই হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসে আক্রান্ত। বাংলাদেশে আক্রান্তের হার এক শতাংশের নিচে থাকলেও রোহিঙ্গাদের আক্রান্তের হার অনেক বেশি। এ জন্য ডি সেন্ট্রালাইজেশন করে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমরা চাই সাধারণ মানুষের কাছে খুব সহজেই সচেতনতা পৌঁছাতে।”

তিনি বলেন, ‘হেপাটাইটিস প্রতিরোধে সচেতনতা বড় বিষয়। বাংলাদেশের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ লোক গ্রামে বসবাস করেন। হেপাটাইটিস কী, কীভাবে ছড়ায়, বা এর চিকিৎসা কী- এসব ব্যাপারে গ্রামের মানুষের ধারণা নেই। তাই তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমরা গবেষণায় দেখেছি, রোহিঙ্গাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হেপাটাইটিস। প্রায় ১৮ শতাংশের মতো এই হার। তাদের নিয়েও আমাদের কাজ করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমকে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। এ ভাইরাসে আক্রান্তদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে নয় জনই জানেন না তারা এটি বহন করছেন। পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয় কমাতে হবে। একটা ভ্যাকসিনের দাম ৩০০-৪০০ টাকা। মাসে অন্যান্য চিকিৎসা বাবদ খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম বলেন, ‘ভাইরাসটি মা থেকে শিশুকে সংক্রমিত করে। এটির জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে যদি চিকিৎসা ও প্রাতিষ্ঠানিক সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘হেপাটাইটিস রোধে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। দেশে যত ব্লাড ব্যাংক আছে, সেখানে বিপুলসংখ্যক রক্ত সঞ্চালন হয়, সেখানে কী পরিমাণে ভাইরাসটি শনাক্ত হয় সেটি করতে পারলে প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে।’

উল্লেখ্য, আগামী ২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ওয়ার্ল্ড হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্সের আহ্বানে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হবে। দিবসটিকে কেন্দ্র করে ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, ভাইরাল হেপাটাইটিসের বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। ভাইরাল হেপাটাইটিস প্রতিরোধে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘হেপাটাইটিস, আর অপেক্ষা নয়’।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন