বিজ্ঞাপন

‘বিরোধীদলে থাকলে বলা যাবে, সরকারে থাকলে কেন নয়?’

August 9, 2022 | 4:28 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাঙ্গামাটি: পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না বিধায় পাহাড়ে নানাবিধ সমস্যা হচ্ছে এমন মন্তব্য করে রাঙ্গামাটির সাবেক সংসদ সদস্য ও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার বলেছেন, ‘পাহাড়ের মানুষ নিরাপদে-নিবিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে না। এই জায়গায় চেক ওই জায়গায় চেক করা হয়, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মানুষ আজ চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছে। এভাবে যদি মানুষকে জিম্মি করে রাখা হয় তাহলে কী হবে?’

বিজ্ঞাপন

ঊষাতন বলেন, ‘আমি আদিবাসী দাবি হাজারবার করতে পারি, যতক্ষণ পর্যন্ত সংবিধানে স্বীকৃত না হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে আদিবাসী স্বীকৃতি দিয়ে বাণী পাঠিয়েছেন আদিবাসী দিবস উপলক্ষে। দীপু মনি (শিক্ষামন্ত্রী) কয়েকবার আমাদের মিছিলে ছিলেন। যখন বিরোধীদলে থাকা হবে তখন আদিবাসী বলা যাবে। আর যখন সরকারি দলে যাওয়া যাবে তখন আর আদিবাসী বলা যাবে না। এটা কোন বিবেক, কোন মানুষ, কোন আইন এটা?’

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) দুপুরে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঊষাতন বলেন, ‘কিছুদিন আগে নড়াইলে ঘরবাড়ি পুড়ে দেওয়া হল। নড়াইলের কয়েকজন ভুক্তভোগী আমাদের জানিয়েছে, যারা টাকা দিতে পেরেছে তাদের ঘরে আগুন দেয়নি। আর যারা টাকা দিতে পারেনি তাদের ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। সরকারের দায়িত্ব সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপদ দেওয়া। কিন্তু হিন্দুরা এখন ভারতে চলে যাচ্ছে। পাহাড়ের মানুষ এখন দুপাড়ে পা দিয়েছে।’

এদিন সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য মাধবীলতা চাকমা। উদ্বোধন শেষে একটি নৃত্য পরিবেশন করা হয়। উদ্বোধনের আগে দেশাত্মবোধক কবিতা, গান ও পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নিজেদের সংস্কৃতিকে তুলে করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখবেন- জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, এমএন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক ফোরামের সাবেক সভাপতি শিশির চাকমা ও সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি এডভোকেট ভবতোষ দেওয়ানসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা।

এসময় বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র আমাদের আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে না চাইলেও জাতিসংঘ আমাদের আদিবাসী স্বীকৃতি দিয়েছে। আমাদের নিজস্ব ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি থাকা শর্তেও আমাদের ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও উপজাতি বলা হচ্ছে। আমরা সংবিধানে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি চাই।

আলোচনা শেষে দুপুরে পৌরসভা প্রাঙ্গণ হতে র‍্যালি শুরু হয়ে জেলা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে গিয়ে শেষ হয়। র‍্যালি ও আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, পাংখোয়াসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ ও শিশুরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে নিজেদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন