‘গণতন্ত্র মঞ্চ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে আরেকটি অগ্রগতি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নতুন রাজনৈতিক জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর আত্মপ্রকাশকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের পথে আরেকটি অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) নয়াপল্টনে আয়োজিত এক মিলাদ মাহফিল শেষে জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সমন্বয়ের গঠিত নতুন রাজনৈতিক জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর আত্মপ্রকাশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাই। তারা যেসব দাবি তুলেছে, এই দাবিগুলো আমরাও দীর্ঘদিন যাবৎ করে আসছি। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে— তাদের এই সব দাবির সঙ্গে আমরা সম্পূর্ণ একমত।’

‘কাজেই আমরা মনে করি যে, আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের পক্ষে এটা (গণতন্ত্র মঞ্চ) আরেকটি অগ্রগতি’— বলেন নজরুল ইসলাম খান।

‘যে প্রক্রিয়ায় আপনারা আন্দোলন করছেন তাতে এই সরকারকে হঠানো বা দাবি আদায় সম্ভব হবে না। আরও কঠোর কর্মসূচি, হরতাল-অবরোধে যেতে হবে’— সোমবার (৮ আগস্ট) যুবদলের সমাবেশে স্থায়ী কমিটির দুই সদস্যের দেওয়া এমন বক্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, ২০১৪-১৫ সালের দিকে কী আন্দোলন হয়েছে? প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মুসা বলেছিলেন যে, এটা এখন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নয়, এটা গণপ্রজাতন্ত্রী ঢাকা সরকার। কারণ, গোটা বাংলাদেশের ওপর এই সরকারের আর কোনো প্রভাব নাই।’

‘তারপরও অনেক মন্ত্রী বলেন, আমরা নাকি আন্দোলন করতে পারি না। এখন তারা আন্দোলন বলতে যা বোঝেন এগুলো যদি সবাই বুঝতে চান তাহলে আমরা বিপদের মধ্যে আছি। আন্দোলন মানে হচ্ছে জনগণের সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ-প্রতিরোধ। সেটা হরতালের মাধ্যমে হতে পারে, আরও বিভিন্ন মাধ্যমে হতে পারে এবং মনে রাখতে হবে যে, আমরা শ্লোগান দিতে পারি না তা নয় কিন্তু যখন-তখন দেব কেন? আমরা হরতাল করি না বা করতে পারি না তা নয়, কিন্তু যখন তখন করব কেন? আমরা অবরোধ এর আগে করি নাই বা করতে পারি নাই তা নয়, কিন্তু যখন তখন করব কেন? যখন করার সিদ্ধান্ত হবে আপনারা জানতে পারবেন’— বলেন নজরুল ইসলাম খান।

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বিএনপির বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিক মানুষ আপনারা ভালো জানেন এটা। এই ব্যাপারগুলো আলোচনার মাধ্যমে হয় এবং এটা আগে থেকে বোঝা গেলে পরে এটা ব্যর্থ করে দেওয়ার লোক আছে। সেজন্য আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি এবং খুব শিগগিরই আপনারা জানতে পারবেন।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘যেসব কথা শুনছেন এগুলোর কোনো অর্থ নাই। মানুষ যখন ভয় পায়, অন্ধকারের মধ্যে রাত্রে হাটতে গেলে জোরে জোরে গান গায়। এটা এই কারণে যে, তারা ভয় পাচ্ছে। ওদের কথায় বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। বড় বিপদে আছে তারা।’

উলামা দলের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালুকদারের সভাপতিত্বে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন, শামীমুর রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, ধর্ম বিষয়ক সহ-সম্পাদক আবদুল বারী ড্যানি, ওলামা দলের যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা মাহমুদুল হাসান শামীম প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের রফিক হাওলাদার, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, শ্রমিক দলের সুমন ভুঁইয়াসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

সারাবাংলা/এজেড/এনএস