বিজ্ঞাপন

শুভ জন্মদিন ক্রিকেটের লিটল মাস্টার

April 24, 2018 | 11:14 am

সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

১৯৯৯ সালে ক্রিকেটের কিংবদন্তি স্যার ডন ব্র্যাডম্যান একজনের ব্যাটিংশৈলীর সঙ্গে নিজের ব্যাটিংয়ের মিল খুঁজে পেয়েছিলেন। সেই থেকে শুরু দুই মহাতারকা তুলনার। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে তুলনা হয়েছে ক্রিকেটের লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকারের। জল্পনা-কল্পনা হয়েছে তার শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে। ক্রিকেটের সব ক্ষেত্রেই নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন তিনি। নিজের নামটি ক্রিকেটের সঙ্গে এমন অঙ্গাঙ্গি জড়িয়ে ফেলেছেন যে অনেক ভক্ত-সমর্থকই কেবল নয়, ক্রিকেট ভালোবাসেন এমন অনেক মানুষই শচীন ছাড়া ক্রিকেট কল্পনাও করতে পারেন না। মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) ভারতের ক্রিকেট ঈশ্বর শচীনের জন্মদিন।

এই দিনে বিশ্বের অগণিত মানুষের সঙ্গে জন্মেছিলেন শচীন, যার জন্ম না হলে ক্রিকেট পেতোনা তার পূর্ণতা! যার আগমন না ঘটলে তার নামে পুজো করার সুযোগ হারাত দেড় শ’ কোটি ভারতীয়। ১৯৭৩ সালের আজকের এই দিনে বোম্বের (বর্তমান মুম্বাই) মহারাষ্ট্রে বিখ্যাত টেন্ডুলকার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ‘আধুনিক ক্রিকেটের ডন’। ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তির ৪৫তম জন্মদিন আজ। ৪৬ বছরে পা রাখলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

১৯৮৯ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করে ২০১৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত খেলেছেন। ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২০০টি টেস্ট ও ৪৬৩টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ (ওডিআই) রয়েছে তার ঝুঁলিতে। ২৪ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে খেলেছেন টি-টোয়েন্টিও। তবে, জাতীয় দলের জার্সিতে মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচই খেলেছেন। ক্রিকেটের সব ফরম্যাট মিলিয়ে ৩০ হাজারের বেশি রান এবং ২০০ এর বেশি উইকেট রয়েছে তার ঝুঁলিতে। ১৯৮৯ সালের ১৫ নভেম্বর করাচীতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে মাত্র ১৬ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব। বাকিটা ইতিহাস। ১৭ বছর বয়সে টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি। টেস্ট ও ওডিআইতে সবচেয়ে বেশি রান ও সেঞ্চুরির মালিক শচীন ৩৬ বছর বয়সে ওডিআইতে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান। ব্যাটিংটাকে শিল্পের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছিলেন কোঁকড়া চুলের মায়াময় চেহারার সুবোধ শচীন। হয়েছেন নায়ক থেকে মহানায়ক।

২০১৩ সালে শচীন তার জন্মস্থান মুম্বাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইতিহাসের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ২০০তম টেস্ট খেলে তুলে রাখেন প্রিয় ব্যাটটাকে। ১৯৮৯ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিলেন অভিষেক ওয়ানডে ম্যাচ। নিজের সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ঢাকার মাটিতে। ২০১২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে খেলেছেন ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি। দীর্ঘ ২৪ বছর ব্যাট হাতে প্রতিনিয়তই শচীন ছাড়িয়ে গেছেন কেবল নিজেকে, হাঁকিয়েছেন একের পর এক সেঞ্চুরি, গড়েছেন রেকর্ডের পর রেকর্ড।

বিজ্ঞাপন

ক্রিকেট মাঠে যতোক্ষণ ব্যাট করতেন ততোক্ষণ ভারতের আশা-ভরসা হয়ে থাকতেন শচীন। টেস্টে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৯২১ রান, ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৪২৬ রান, সর্বোচ্চ ২০০ টেস্ট ও ৪৬৩ ওয়ানডে ম্যাচের রেকর্ড, টেস্টে সর্বোচ্চ ৫১ সেঞ্চুরি, ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৪৯ সেঞ্চুরি, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ ৩৪ হাজার ৫৭ রান, শচীনের এ রেকর্ডগুলো অমর হয়ে থাকবে বলে মত ক্রিকেট বিশ্লেষকদের। ক্রিকেটকে তিনি ঋণী করে গেছেন। একজন ব্যাটসম্যানের পক্ষে যত ধরনের কৃতিত্ব দেখানো সম্ভব, তার সবই দেখিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের এই ‘ওয়ান্ডারবয়’। ক্রিকেটকে দিয়ে গেছেন এমন কিছু, যা নিয়ে ক্রিকেট গর্ব করতে পারবে অনন্তকাল।

মাঠ ও মাঠের বাইরে শচীন এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর দিনে অঝরে কেঁদেছিল ভারতবাসী, গোটা বিশ্ববাসীও। শচীনরা কি বারবার আবির্ভূত হন! শচীনের তুলনা কেবল শচীনই। তিনি সর্বকালের, সর্ব যুগের শ্রেষ্ঠতম ক্রিকেটার। অতিআবেগী বিশ্লেষণ না হলে ব্র্যাডম্যান বেঁচে থাকলে হয়তো এটাই বলতেন। হয়তো খুশি হয়েই বলতেন! শচীন তো কেবল ভারতেরই নয়, গোটা ক্রিকেট বিশ্বেরই গর্ব।

সারাবাংলা/এমআরপি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন