বিজ্ঞাপন

‘বর্তমান সরকারকে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে তুলনা করা যায়’

August 16, 2022 | 6:44 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বর্তমান সরকারকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সঙ্গে তুলনা করা যায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিণের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার ৭৮তম জন্মদিন উপলক্ষে তার রোগমুক্তি ও আশু সুস্থতা কামনা এবং চলমান আন্দোলনে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে তুলনা করা যায় একমাত্র পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে। পাকহানাদার বাহিনী যেভাবে এদেশের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করে, হত্যা করে, খুন করে এদেশের মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে ধবংস করে দিতে চেয়েছিল, ঠিক একইভাবে আজকের অবৈধ অনির্বাচিত ফ্যাসিবাদী সরকার বাংলাদেশের মানুষের সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধূলিসাৎ করেছে, ধবংস করে দিয়েছে।’

বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার অবদান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনীতির ইতিহাস হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইতিহাস। বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। এটাকে আলাদা করা যাবে না। তিনি একজন গৃহবুধ ছিলেন। জাতির প্রয়োজনে, যুগের প্রয়োজনে, মানুষের প্রয়োজন সেই গৃহবধূ যখন গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবার জন্য সামনে এসে দাঁড়ালেন তখন থেকে তিনি সংগ্রাম শুরু করেছেন। সারাটা জীবন এই গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবার জন্য, গণতন্ত্র চর্চা করবার জন্য তিনি সংগ্রাম করেছেন। এখন তাকে গৃহে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

‘আমাদের প্রথম শর্ত হচ্ছে, গণতন্ত্রের মা যিনি গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছেন, যিনি গণতন্ত্র চর্চা করেছেন তাকে অবশ্যই নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। এই জন্মদিনে আমরা তার দীর্ঘ জীবন কামনা করছি, তিনি যেন সুস্থ শরীরে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন, আমাদেরকে নেতৃত্ব দেন’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন সাধারণ নেত্রী নন। তিনি একটি প্রতিষ্ঠান, একটা ইনস্টিটিউশন। তিনি সারাটা জীবন এই গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তার জীবনকে গড়ে তুলেছেন গণতান্ত্রিকভাবে। তার সংসার, তার পার্থিব জীবনের সমস্ত সুখ জলাঞ্জলি দিয়ে এদেশের মানুষকে একটা সমাজ উপহার দেওয়ার জন্য, মানুষকে মুক্ত করবার জন্য লড়াই করে চলছেন নিরবধি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে। যার কোনো ভিত্তি নেই। আমাদের নেতা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছে। আমাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, আমাদের ছয়শ’র উপরে নেতা-কর্মীকে গুম করেছে, সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। এই তো সেদিন ভোলাতে ছাত্রদল নেতা নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিম পয়েন্ট ব্যাংক রেঞ্জে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিদিন গ্রেফতার করা হচ্ছে, প্রতিদিন মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এসব কথা আর গোপন নেই।’

বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে গুম-খুনে তদন্ত দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নেত্র নিউজে এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পরে এ্যামিনেস্টি ইন্টারনেশনাল গতকালই স্ট্যাটমেন্ট দিয়েছে এই যে ভয়াবহ, ভয়ংকর মানবাধিকারের যে চিত্র, এই চিত্র অবশ্যই শুধু নিন্দা নয়, এটা জঘন্যতম একটা ঘটনা। এই ঘটনাগুলো ঘটছে এবং তারা বাংলাদেশে অবস্থারত জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কমিশনের যে হাইকমিশনার তাকে তারা বলেছেন যে, আপনি এটার নিন্দা করেন এবং এর সম্পর্কে নিরপেক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত করেন।’

তিনি বলেন, ‘এটাকে হালকা করে দেখার কোনো কারণ নেই। আমাদের বহু ভাই চলে গেছেন, আমরা তাদের ফেরত পাইনি, আমাদের বহু নেতা চলে গেছেন তাদের ফেরত পাইনি। আজকে ছয়‘শ উপরে নেতাকর্মীকে এভাবে গুম করা হয়েছে, অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে। এই মিলাদ মাহফিল থেকে আমি দাবি করছি যে, জাতিসংঘের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’

সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জানি এই সরকার সহজে যাবে না। তাদের পায়ের তলে মাটি নেই, মানুষ তাদের সঙ্গে নেই। সেজন্য আমরা জনগণকে সংগঠিত করে সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে সংগঠিত করে এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার নিয়ে আসতে চাই।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বিজ্ঞাপন

মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেনড়- বিএনপির খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল বারী ড্যানি, শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল খালেক, সাইফুল আলম নিরব, মহানগরের ইশরাক হোসেন, মোহাম্মদ মোহন, ইউনুস মৃধা, আবদুস সাত্তার, হারুনুর রশীদ, এজিএম শামসুল হক, হাবিবুর রশীদ হাবিব, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ‍ভুঁইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, ওলামা দলের শাহ নেসারুল হক, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন