বিজ্ঞাপন

মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাবির জহুরুল হক হলে হাতাহাতি

August 26, 2022 | 9:06 pm

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারিতে জড়িয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে মদ খাওয়ার আলামত পেলেও হল ছাত্রলীগের দাবি—উচ্চস্বরে গানবাজনাকে কেন্দ্র করে সিনিয়র-জুনিয়রদের মাঝে ‘কথা কাটাকাটি’ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) মধ্যরাতে হলের প্রধান ভবনের ছাদে এ ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রলীগকর্মী আবদুর রহিম শান্তসহ বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনের অনুসারি রাকিবুল হাসান রাহি ও তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মীসহ হলের ছাদে মাদক সেবন করছিল। পরে হল ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানার অনুসারী আসাদুজ্জামান ফরিদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাকিবুর রহমান সায়েম এবং লোক প্রশাসন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন সাগর তাদের গ্রুপের কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে মাদক গ্রহণ করতে যায়।

রাহি তাদের জুনিয়র হওয়ায় তাকে ছাদ থেকে চলে যেতে বলে ফরিদ। কিন্তু রাহি তার বন্ধুদের নিয়ে ছাদ থেকে না যাওয়ায় ফরিদের সঙ্গে রাহি ও তার বন্ধুদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ফরিদ রাহিকে চড় দেয়।

বিজ্ঞাপন

এর কিছুক্ষণ পর রাহি তার বন্ধুদের নিয়ে ছাদের পূর্বপাশে অবস্থান নেয় ও তার রাজনৈতিক বড় ভাইদের বিষয়টি জানায়। এক পর্যায়ে রাহির দলের বড় ভাই আবদুর রহিম শান্ত, হাসানুর রেজা সজনসহ কয়েকজন ছাদে যায়। একই সময়ে ফরিদরাও তাদের বন্ধুদের খবর দেয়। সে সময় ছাদে ও এর আশেপাশে দুই পক্ষের অন্তত দুই শতাধিক নেতাকর্মী জড়ো হয়।

সূত্র জানায়, এরপর শান্ত ও স্বজন ফরিদের কাছে তাদের ছোট ভাই রাহিকে মারধর করার কারণ জানতে চায়। এসময় তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয় যা এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়ায়। দুপক্ষের অন্তত ৭০-৮০ জন এ সময় হল শাখা সভাপতি কামাল উদ্দীন রানার উপস্থিতিতেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় কামাল উদ্দীন রানার শরীরেও আঘাত লাগে। পরে দু’গ্রুপই লাঠিসোটা জোগাড় করে মুখোমুখি অবস্থান নিলেও হলে অবস্থান করা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।

পরে হল সভাপতি কামাল উদ্দীন রানা ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসাইন তাদের নেতাকর্মীদের জোর করে সরিয়ে দেন ও জড়িত কয়েক জনকে নিয়ে হলের অতিথি কক্ষে বৈঠকে বসেন। সেখানে তারা নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মিমাংসা করেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকরা মাদক সেবনের আলামত খুঁজে পান। হলের ছাদে মাদকের কয়েকটি বোতল খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি সেখানে বেশ কিছু লাঠি ও পাইপও দেখা যায়। হাতাহাতির সময় অনেকের জুতা ছিড়ে যায়। এরকম অন্তত বিশ জোড়া জুতাও পড়ে ছিল ছাদে।

এদিকে মাদক সেবন নিয়ে মারামারির বিষয়টি অস্বীকার করে হল ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা বলেন, ‘হলের ছাদে উচ্চ স্বরে গান গাওয়াকে কেন্দ্র করে জুনিয়রদের সঙ্গে সিনিয়র কিছু শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটি এবং ঝামেলা হয়েছিল। পরে আমরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।’

হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনও কামাল উদ্দীনের সুরে কথা বলেন।

শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ ড. আবদুর রহিম বলেন বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের ছাদে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। এখন নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার করা হবে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আমরা তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরআইআর/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন