বিজ্ঞাপন

করদাতা সুরক্ষা পরিষদকে চসিক মেয়রের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান

September 25, 2022 | 9:33 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো : পুনঃমূল্যায়নের ভিত্তিতে বর্ধিত গৃহকর নিয়ে আন্দোলনে নেমে আলোচনায় আসা ‘চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদকে’ সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র আফরোজা কালাম। সংগঠনটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে নগরবাসীর মুখোমুখি দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ রেজাউলের অনুপস্থিতিতে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই কাউন্সিলরের।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ভারপ্রাপ্ত মেয়র আফরোজা কালাম এ বক্তব্য দেন। চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ‘চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি’ নুরুল আবছারের কটুক্তি, অশালীন ও অরুচিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করেন সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা।

মানববন্ধনে চসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আফরোজা কালাম বলেন, ‘আমরা যারা নগরীতে বসবাস করি, পৌরকর দিয়েই করি। ২০০৯ সালে কর পুনঃমূল্যায়ন করা হয়েছিল। সে সময় বিভিন্ন অভিযোগ আপিলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছিল। এরপর আর পৌরকর মূল্যায়ন হয়নি। ২০১৭ সালে সরকারি নির্দেশে পুনঃমূল্যায়ন শুরু হলেও পরবর্তী আদেশে তা স্থগিত করা হয়। এবারও সরকারি নির্দেশনার প্রেক্ষিতে পৌরকর পুনঃমূল্যায়ন করা হচ্ছে।’

‘মেয়র সাহেব নগর বাইশ মহল্লা কমিটি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন আবাসিক এলাকার প্রতিনিধিদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পুনঃমূল্যায়ন করতে গিয়ে কেউ যদি হয়রানি বা অনৈতিক অর্থ দাবি করে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এরপরও কোনো করদাতা যদি সন্তুষ্ট না হয় তিনি সরাসরি মেয়রের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ দাখিল করতে পারছেন। এরইমধ্যে অনেকে তাদের বকেয়া কর পরিশোধের জন্য আপিল করেছেন এবং সহনীয় পর্যায়ে কর দিতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

বিষয়টি যখন মিমাংসিত তখন ‘করদাতা সুরক্ষা পরিষদ’ ষড়যন্ত্র শুরু করেছে মন্তব্য করে আফরোজা কালাম বলেন, ‘কাজ করতে গেলে ভুলত্রুটি হতে পারে। সেটি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যায়। নগরকারী দ্বিমত জানাতেই পারেন, যুক্তিসঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার সবার আছে। কিন্তু করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি যে ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন, তা অশালীন ও অবমাননাকর। মেয়র ৬০ লাাখ জনগণের অভিভাবক প্রতিমন্ত্রী মর্যাদাপ্রাপ্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মেয়রকে উদ্দেশ্য করে এই বক্তব্যে নগরবাসীর মনে আঘাত লেগেছে।’

‘করদাতা সুরক্ষা পরিষদ গৃহকর নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর যে অপচেষ্টা চালাচ্ছে সেটি দুঃখজনক। একটি কুচক্রী মহল তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সিটি করপোরেশনকে নগরবাসীর মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। আমরা করদাতা সুরক্ষা পরিষদকে ষড়যন্ত্র প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি। মেয়রকে উদ্দেশ্য করে অবমাননাকর বক্তব্যের জন্য পরিষদের নেতাদের ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানাচ্ছি।’

মানববন্ধনে চসিকের প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর হাসান মহমুদ হাসনী, জহর লাল হাজারী, শৈবাল দাশ সুমন, আবুল হাসনাত বেলাল, গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, হুরে আরা বিউটি বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যান্য কাউন্সিলররাও উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য সম্প্রতি পুনঃমূল্যায়নের ভিত্তিতে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় শুরু হলে নগরবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। আন্দোলনে নামে ‘চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ’। ‘গলাকাটা হোল্ডিং ট্যাক্স আইন বাতিল করো/দৈর্ঘ্য-প্রস্থ গুণ করো তার ওপর কর ধরো।’— এই স্লোগান নিয়ে সংগঠনটি গত একমাস ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।

এর মধ্যে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে এক সমাবেশে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি নুরুল আবছার চৌধুরীর এক বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়। মেয়রের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. মোস্তফা কামাল চৌধুরী দুলাল গত ২০ সেপ্টেম্বর নুরুল আবছার চৌধুরীর বিরুদ্ধে নগরীর চান্দগাঁও থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। এরপর নুরুল আবছার ও হাসান মারুফ রুমীসহ কয়েকজন সংগঠনের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় একই অভিযোগে সাধারণ ডায়েরিও দায়ের হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন