বিজ্ঞাপন

সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা চান ফখরুল

October 12, 2022 | 6:53 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: শুধু র‌্যাবের ওপর নয়, সরকারের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমরা সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করে দিয়েছি। শেখ হাসিনাকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকের সমাবেশ প্রমাণ করে, ভয় দেখিয়ে চট্টগ্রামবাসীকে দমিয়ে রাখা যায়নি। চট্টগ্রাম থেকে সূচনা হয়েছে। এবার সারা বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠবে। বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে গদি থেকে নামিয়ে আনবে। আমাদের আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। আন্দোলনের মূল লক্ষ্য- শেখ হাসিনাকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনাকে জনগণ আর একদিনও ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এই আন্দোলন সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটাব।’

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার সকল রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ভোটের আয়োজন করবে। জনগণ ভোট দিয়ে একটি সংসদ নির্বাচিত করবে, যেটা হবে জনগণের সংসদ। জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার নির্বাচিত হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করুন। ডিসি-এসপিরা নির্বাচন কমিশনারকে মানে না। এরা কিভাবে নির্বাচন করবে? নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’

বিজ্ঞাপন

সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে তিনি বলেন, ‘এই সরকার পুলিশ, র‌্যাব, প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে। বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে। দেশে আজ কারও নিরাপত্তা নেই। দিনে-দুপুরে মা-বোনদের সম্ভ্রমহানি হচ্ছে। গুম, খুন, বিনা বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। জাতিসংঘ পরিষ্কার করে বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে- এদেশে কোনো মানবাধিকার নেই। র‌্যাব একটা প্রতিষ্ঠান, সেটাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা বলতে চাই, শুধু র‌্যাবকে নয়, শেখ হাসিনার সরকারকে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। এই সরকার অনির্বাচিত সরকার। এই সরকারের কোনো ম্যান্ডেট নেই। আগের রাতে ভোট নিয়ে ফলাফল ঘোষণা করেছে। এই সরকার বাংলাদেশকে শ্মশানে পরিণত করেছে।’

গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নেতাকর্মীদের ত্যাগ স্বীকারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য আমাদের পাঁচজন নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন। এরা সবাই সাধারণ মানুষ। কেউ অর্থবিত্তের মালিক নয়। এরা পুলিশের গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে বলেছে- গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য বুক পেতে দিয়েছি, গুলি কর। শহিদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। এই দেশকে আমরা মুক্ত করবই।’

বিজ্ঞাপন

লাখো নেতাকর্মী-সমর্থকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য। সেই গণতন্ত্রকে আওয়ামী লীগ নির্বাসনে পাঠিয়েছে। আমরা আবার যুদ্ধ করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। এ লড়াই বড় কঠিন লড়াই, বড় শক্ত লড়াই। এ লড়াইয়ে আমাদের জিততে হবে। আমরা যদি প্রতিরোধ করতে না পারি, তাহলে এদেশের মানুষ তাদের অধিকার, গণতন্ত্র ফিরে পাবে না। এটা বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।’

দুর্নীতি-অর্থপাচারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবকিছু লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। শেখ হাসিনা ১০ টাকায় চাল দেবে বলেছিল, এখন চালের দাম ৭০ টাকা। চাল, ডাল, তেল, নুন, মাছ, মাংস সবকিছুর দাম তিন থেকে পাঁচগুণ বেড়ে গেছে। গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের দাম কয়েক বার বাড়িয়েছে। এখন শুনতে পাচ্ছি, বিদ্যুতের দাম নাকি আবার বাড়াবে। বার বার দাম বাড়াতে হচ্ছে কেন? কারণ তারা টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। এখন আবার শেখ হাসিনা বলছেন, দুর্ভিক্ষ আসছে, আপনারা কম খান। আমরা বলি, দেশ চালাতে না পারলে ছেড়ে দিয়ে এখনই চলে যান।’

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়া আজ বন্দী। উনাকে রাজনৈতিক সাজা দেওয়া হয়েছে। তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা করে তাকে বিদেশে যেতে বাধ্য করেছে। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। তারেক রহমানকে সসম্মানে দেশে ফিরিয়ে আনব। আমাদের দেশ বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনব, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান দেখেছেন। আমরা ক্ষমতায় গেলে চাল-ডালসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাব। বিদ্যুতের দাম কমিয়ে আনব। বেকারদের চাকরির ব্যবস্থা করব। যত সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো সমাধান করব।’

বিজ্ঞাপন

সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

একই সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকার আমাদের নেতাকর্মীদের সমাবেশে আসতে পথে পথে বাধা দিয়েছে, হামলা করেছে, গাড়ি ভাংচুর করেছে। কিন্তু সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আজকের সমাবেশকে জনতা মহাসমাবেশে পরিণত করেছে। সরকারের প্রচেষ্টা সফল হয়নি। এই সরকার আমাদের ৩৭ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। গুম, খুন, বিনা বিচারে হত্যা করেছে। তারপরও একজন কর্মীও বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়নি। সরকার বিএনপিকে দমাতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদ করছি। এসব দাবি শুধু বিএনপির দাবি নয়, ১৮ কোটি মানুষের দাবি। পুলিশ ভাইদের বলব, আপনারা আমাদের বাধা দেন কেন? আপনারা তো প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আপনারা ভোটচোরদের স্বার্থরক্ষা করেন কেন? সরকারকে বলতে চাই, বার বার ভোটচুরি করে ক্ষমতায় আসা যাবে না।’

‘এই সমাবেশ থেকে শেখ হাসিনার পতনের সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এদেশে যতবার গণতন্ত্র সংকটের মুখে পড়েছে জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীরাই সেই সংকট থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছে। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়ে গিয়েছিলেন। নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আবার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘পুলিশ বলছে, লাঠি নিয়ে মিটিংয়ে আসা যাবে না। পুলিশকে এই অধিকার কে দিয়েছে ? সংবিধানে কোথায় লেখা আছে সভা-সমাবেশ করা যাবে না? পুলিশ জনগণের সেবক। জনগণের টাকায় পুলিশের বেতন হয়। পুলিশকে মনে রাখতে হবে, তারা শেখ হাসিনার কর্মচারী নয়। পুলিশকে বলব, আপনি বন্দুক নামিয়ে ফেলুন, আমাদের ছেলেরা লাঠি নামিয়ে ফেলবে।’

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের জন্য মানুষ আজ রাস্তায় নেমেছে। মানুষের পেটে ভাত দিতে পারে না, ক্ষমতায় থাকে কেন? শেখ হাসিনা জনগণের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হননি, তিনি বাংলাদেশের জনগণের প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি লুটেরা-দুর্নীতিবাজদের প্রধানমন্ত্রী। এই সরকারকে আর প্রহসনের নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। অবিলম্বে সংসদ বাতিল করতে হবে। এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না। কালকেই নির্বাচন কমিশনারগুলোকে বিদায় করেন। লুটপাট-অর্থপাচার অনেক হয়েছে, এবার বিদায় নেন। জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনার পতন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটাই স্লোগান, হঠাও মাফিয়া, বাঁচাও দেশ, টেক ব্যাক বাংলাদেশ।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমদু চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিদায়ের বার্তা এসে গেছে। চট্টগ্রামবাসী পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে, শেখ হাসিনা এখনই পদত্যাগ করুন, এখনই করুন, এখনই করুন। আগামীকাল নয়, পরশু নয়, আজই পদত্যাগ করুন, চট্টগ্রামবাসী রায় দিয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের আর একদিনও ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। আমাদের নেতাকর্মীরা জীবন দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে আছে। জীবন দেব, গণতন্ত্র আনব, শেখ হাসিনার পতন হবে, নিরপেক্ষ সরকার আসবে, সেই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, জনগণের ভোটে সরকার গঠন হবে। এইবার যখন নেমেছি, আর বাড়ি ফিরে যাব না। যেভাবেই হোক, বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানুষের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক-রাজনৈতিক-সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে আনব।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘সরকার খালি উন্নয়নের কথা বলে। এত উন্নয়ন উন্নয়ন করেন, এই উন্নয়ন তো এখন বাংলাদেশের মানুষের গলার ফাঁস হয়ে গেছে।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণের আহবায়ক আবু সুফিয়ান ও নগরের সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্বরের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য জয়নাল আবেদিন ফারুক, গোলাম আকবর খোন্দকার, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ভিপি জয়নাল আবেদীন ও এস এম ফজলুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ও শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী।

আরও বক্তৃতা করেন- কেন্দ্রীয় মৎসজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার ও ভিপি হারুনুর রশীদ, সহ-গ্রাম সরকার সম্পাদক বেলাল আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম মজনু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু ও সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, কৃষকদলের সভাপতি জাফিরুল ইসলাম তুহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, তাঁতীদলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাচিং প্রু জেরী, আলমগীর মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, নোয়াখালী জেলার সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, খাগড়াছড়ি জেলার সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, লক্ষ্মীপুর জেলার সদস্য সচিব শাহাবুদ্দীন সাবু, যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন, রাঙ্গামাটি জেলার সভাপতি দিপেন তালুকদার, ফেনী জেলার সাধারণ সম্পাদক আলাল উদ্দীন আলাল, খাগড়াছড়ি জেলার সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার, কেন্দ্রীয় জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক শাহানা আকতার শানু, ওলামা দলের নেসারুল হক, চট্টগ্রাম নগর বিএনপি নেতা এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, এনামুল হক এনাম, জসিম উদ্দিন শিকদার, খুরশীদ জামিল চৌধুরী, ইউনুস চৌধুরী, নুরুল আমিন, বেলায়েত হোসেন এবং কাজী সালাউদ্দিন।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পুলিশের গুলিতে ৫ নেতাকর্মী নিহত ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচির প্রথম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রামে। এই কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য-বিবৃতি নিয়ে কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ হয়েছে। যদিও সমাবেশে আসার পথে বিভিন্নস্থানে নেতাকর্মীদের বাধা, গাড়ি ভাংচুর ও পুলিশের হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা, কক্সবাজার, তিন পার্বত্য জেলা, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলা নেতাকর্মীরা এসেছিলেন সমাবেশে। সকাল থেকে নগরীর সিআরবি, কদমতলী, টাইগারপাস, লালখানবাজার, কাজির দেউড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীরা জড়ো হন। এরপর মিছিল নিয়ে যান সমাবেশে।

দীর্ঘদিন পর বড়ধরনের এই সমাবেশকে ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল। ঢোলবাদ্য বাজিয়ে, ব্যান্ডের তালে তালে নেচেগেয়ে, স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও কৃষকদলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগ দিয়েছেন সমাবেশে। কারও হাতে লাঠির মাথায় বাঁধা পতাকা, ব্যানার-ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড তো ছিলই। ডবলমুরিং থানা যুবদলের পক্ষ থেকে আনা একটি প্রতীকী ‘লাশের কফিন’ সবার নজর কাড়ে। এছাড়া সম্প্রতি নিহত বিএনপি কর্মীদের প্রতিকৃতিও বসানো হয় মঞ্চের একপাশে।

রোদ ও তীব্র গরম উপেক্ষা করে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা ঠাঁই দাঁড়িয়েছিলেন পলোগ্রাউন্ড ময়দানে। দুপুরের মধ্যেই পুরো ময়দান লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। হাজার, হাজার মানুষ সমাবেশস্থলে ঢুকতে না পেরে বাইরে সড়কে অবস্থান নেয়। এতে ওই এলাকা দিয়ে যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন