বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে নিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ

October 20, 2022 | 4:03 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক কীভাবে সবচেয়ে সুসংহত করতে পারে সে ব্যাপারে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বন্ধুপ্রতীম এই দুই রাষ্ট্র পারস্পারিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতায় বিশ্বাসী।’

বিজ্ঞাপন

‘বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক ও গণমাধ্যমের ভূমিকা: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন নিশ্চিতে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে দুই দেশের গণমাধ্যম আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আয়োজন করে জাতীয় প্রেসক্লাব। এতে দুই দেশের সাংবাদিকরা অংশ নেন।

স্পিকার বলেন, ‘গণতন্ত্র সুসহংত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিহার্য। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন এবং সত্যিকারভাবে সমাজ বিনির্মাণে মিডিয়ার ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমানে ইনফরমেশন টেকনোলজি, ইন্টারনেটের বিস্তার, ব্লু-ইকোনমি ইত্যাদি সবক্ষেত্রেই অর্থনৈতিক ও সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেখানে গণমাধ্যমের অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। যেকোন সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। এবং বন্ধুপ্রতীম দুই রাষ্ট্র সেটাই করছে। সে লক্ষ্যেই সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে এবং এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকাও অপরিহার্য।’

বিজ্ঞাপন

সেমিনারে বাংলাদেশের যে বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের যে সফলতা, লক্ষ্য অর্জনের যে প্রস্তুতি সব বিষয়গুলো আলোচিত হবে বলে আশা করেন স্পিকার। দু’দেশের গণমাধ্যমের বন্ধুত্বের সম্পর্কের মধ্য দিয়ে জনগণের যে সম্পর্ক যোগাযোগ, যেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি গীতার্থ পাঠক বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকার পরেও যেসব প্রতিকূলতা রয়ে গেছে সেগুলো চিহ্নিত করে সমস্যা সমাধান নির্ভর করছে দু’দেশের সরকারের স্বদিচ্ছা ও আমাদের অর্থাৎ সাংবাদিকদের ওপর। দুই দেশের সরকারকে তাদের ভুল ও সীমাবদ্ধতা দেখিয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। সরকারের প্রতিচ্ছবি না হয়ে স্বাধীন মতামত প্রকাশ করতে হবে ও যুক্তিসঙ্গত সমালোচনা করতে হবে।’

দুই দেশের গণমাধ্যমের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের সাংবাদিকদের মধ্যে পারস্পারিক যোগাযোগ কম।’

বিজ্ঞাপন

সাংবাদিক হিসেবে তিনি জাতীয়বাদকে আগে রাখবেন নাকি বৃহত্তর স্বার্থ আগে দেখবেন সারাবাংলা’র এমন প্রশ্নের জবাবে গীতার্থ বলেন, ‘প্রথমত আমরা সাংবাদিক, তারপর আমরা কোনো দেশের নাগরিক। যদি দেখি ভারত কোন কারণে অন্য কোনো রাষ্ট্রের প্রতি খারাপ কাজ করছে, সাংবাদিক হিসেবে আমার বলা উচিৎ ভারত ঠিক করেনি।’

ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ‘আমাদের ও ভারতের সম্পর্কের জটিলতা আছে কিন্তু ইতিহাসের কথা যেন না ভুলি। নদীর পানি বণ্টনে আমাদের চুক্তিতে আসতে হবে। কিন্তু তিস্তা পানি বণ্টন নিয়ে দু’দেশের লোকদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। এগারো বছর ধরে চুক্তিটি ঝুলে আছে। এটা নিয়ে কতদিন অপেক্ষা করবো। এটার স্বাক্ষর কবে হবে তা জানি না।’

তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে বৈসাদৃশ্য রয়েছে। আমরা ভারতের ৯ বিলিয়ন ডলারের মার্কেট, কিন্তু আমরা সেখানে ভারতের কাছে কতটুকু গুরুত্ব পাচ্ছি। এসব বিষয় তুলে ধরতে ও বৈষম্য দূরীকরণে সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখতে হবে। ভারতের মিডিয়া দেখলে বাংলাদেশ যে তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝা যায় না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কিছু পরিবর্তন এলেও তা সন্তোষজনক নয়।’

অন্য এক সেমিনারে সিনিয়র সাংবাদিক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক তৈরিতে দুই দেশের গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা থাকলেও অনেকেই দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক ভূমিকাও রাখে। অনেকসময়ই ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে নেতিবাচক খবর দেয়। সেখানে পরবর্তীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে হস্তক্ষেপ করতে হয়। রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক একরকম কিন্তু মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক আলাদা। এটি ঠিক রাখতে গণমাধ্যম ভূমিকা রাখতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

সেমিনারের জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, প্রেসক্লাবের আন্তর্জাতিক লিয়াঁজো উপ-কমিটির আহ্বায়ক আইয়ুব ভূঁইয়াসহ ভারত ও বাংলাদেশের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরএফ/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন