বিজ্ঞাপন

রাহুলের হাতধরে কংগ্রেসে পরিবারতন্ত্র বহাল

December 16, 2017 | 8:06 pm

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

বিজ্ঞাপন

নেহরু-গান্ধী পরিবারের ষষ্ঠ সদস্য হিসাবে ভারতীয় কংগ্রেস পার্টির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন রাহুল গান্ধী। ভারতের স্বাধীনতার পর এ দলটি সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থেকেছে।

শনিবার নয়া দিল্লিতে দলের প্রধান কার্যালয়ে ৪৭ বছর বয়সী রাহুল তার মা সোনিয়া গান্ধীর কাছ থেকে সংগ্রেসের সভাপতির দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ সময় আতশবাজি ও হর্ষধ্বনিতে তাকে সংবর্ধনা জানানো হয়।

দায়িত্ব হস্তান্তরের পর সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘আজ থেকে ডানপন্থী সরকার নরেন্দ্র মোদিকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবে রাহুল।’

বিজ্ঞাপন

লম্বা সাদা রঙের কুর্তা পরে মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন রাহুল। বাবা ও দাদির মতো ভঙ্গীতে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে অভিবাদন জানিয়ে বলেন, ‘অত্যন্ত বিনয়ের সাথে আমি এই দায়িত্ব গ্রহণ করছি। মহান গান্ধী পরিবার থেকে যে শিক্ষা লাভ করেছি তা সারা জীবন আমার আদর্শ হয়ে থাকবে।’

অবশ্য এর কিছুক্ষণ পরেই তার বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) রাহুলের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে।

রাহুল তার বক্তব্যে বলেন, ‘ভারতের কংগ্রেস পার্টি আজ আমাদের একুশ শতকে পদার্পন করিয়েছে। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশকে অশান্ত করে তুলেছে। আমাদের মধ্যযুগে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা মানুষকে হত্যা করছে। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গেলে নির্যাতন করা হচ্ছে। গো মাংস খাওয়ার অপরাধে মুসলমানদের পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

কোন প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছাড়ায় রাহুল দলের সভাপতির দ্বায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

সোনিয়া গান্ধী ১৯৯৮ সাল থেকে কংগ্রেসের সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করে আসছে। যার নেতৃত্বে কংগ্রেস ২০০৪ ও ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে কিন্তু দলটি ২০১৪ সালের নির্বচনে বিজেপির কাছে পরাজিত হয়।

২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে দলটি ক্ষমতাশীল বিজেপিকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

রাহুল গান্ধী ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগের বছর কংগ্রেসের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু সে বছর নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির বিজেপির কাছে ব্যাপক ব্যবধানে পরাজিত হন। এর ফলে রাহুল বিরোধী দলের সমালোচনার শিকার হন।

বিজ্ঞাপন

সোনিয়া গান্ধী তার ভাষণে বলেন, ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ আমার ছেলেকে অনেক বেশি সাহসী করে তুলেছে। আমি নিশ্চিত সে দৃঢ়চিত্তে দলকে আগামীর জন্য নেতৃত্ব দিতে পারবে।’

সে সময় হাজারো কণ্ঠে জয়ধ্বনি করে ওঠে ’রাহুল দীর্ঘজীবী হোক’।

 

গুজরাটে রাহুলের প্রথম পরীক্ষা

মোদির জন্মস্থান গুজরাটের এ সপ্তায় বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল। কংগ্রেস সভাপতি রাহুলের জন্যে এটা প্রথম পরীক্ষা। সেখানে বিজেপি দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে ক্ষমতায় টিকে আছে।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাহুল সেখানে কয়েকটি এলাকার পক্ষে প্রচারণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যারা দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের চেয়ে অর্থনৈতিকভাবে অনেক পিছিয়ে আছে। আগামী সোমবার উভয় রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

তবে জরিপ বলছে হিমাচল প্রদেশের উত্তরাঞ্চলের চেয়ে গুজরাটে মোদির বিজেপি অনেক এগিয়ে রয়েছে।

রাহুল গান্ধী ১৩ বছর আগে উত্তর ভারতের আমেথি রাজ্যে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন এবং সে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। গান্ধী পরিবারে এ উত্তরাধিকারি প্রথমবার অনেকটা অনিচ্ছাকৃতভাবে রাজনীতিতে আসলেও এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী।

দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক গৌরপ্রীত মহাজন বলেন, ‘কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব রাহুলের জন্য এক কঠিন পরীক্ষা হবে।’

‘কিভাবে তিনি দল পরিচালনা করবেন, দলের তরুণ নেতৃত্বকে সামনে এনে, তার বিরুদ্ধে বিরোধী দলের সমালোচনার জবাব দেবেন সেটা রাহুলের জন্য অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ’ বলে জানান এএফপিকে।

রাহুল যদি দলকে তৃণমূল থেকে পরিবর্তন করে নতুন গতি সঞ্চার করতে পারে তাহলেই বিজেপির পুনরুত্থানকে প্রতিহত করতে পারবে।

সারাবাংলা/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন