April 28, 2018 | 1:55 pm
সারাবাংলা ডেস্ক ।।
৬৭ বছর বয়সী পাকিস্তানের লাহোরে জন্ম নেওয়া ধনকুবের শাহিদ খান এক সময় হোটেলের প্লেট ধোয়ার কাজ করে পড়ার খরচ যুগিয়েছেন। কথিত আছে তিনি ১৯৬৮ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আমেরিকা গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি সে সময় প্লেট ধুয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১ ডলার ২০ সেন্ট করে আয় করতেন। আর এখন তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৭২০ কোটি ডলার। ফোর্বস ম্যাগাজিনের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে তিনি ২১৭তম।
নিজের জমানো টাকায় গাড়ি ব্যবসায় জড়িয়ে ১৯৭৮ সালে গাড়ির বাম্পার তৈরির কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন শাহিদ খান। ২০১২ সালের এক হিসেবে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রে দু-তৃতীয়াংশ গাড়ির বাম্পারই এখন তৈরি হয় শাহিদ খানের কারখানায়।
হঠাৎ করে কেন ফুটবল দুনিয়ায় এই শাহিদ খানের নাম চলে এলো? কারণটা, স্বাভাবিক। তিনিই হয়তো হয়ে যেতে পারেন ফুটবলের অন্যতম নামী স্টেডিয়াম লন্ডনের ওয়েম্বলির মালিক। ইংলিশ ফুটবলের ঐতিহ্যগত ‘হোম’ হচ্ছে এই ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম এই মৌসুমে আলোড়ন ছড়ানো টটেনহ্যাম হটস্পারের ‘হোম ভেন্যু’। যা কিনতে ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা এফএ-কে প্রস্তাব দিয়েছে সাড়া ফেলে দিয়েছেন পাকিস্তানি-আমেরিকান ধনকুবের শাহিদ খান। প্রায় ৯০০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে ফুটবলের অন্যতম বিখ্যাত স্টেডিয়াম লন্ডনের ওয়েম্বলিকে কিনে নিতে চান শাহিদ খান।
তবে, তার এই প্রস্তাব এখনো গ্রহণ করেনি ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা এফএ। এ ব্যাপারে তারা যেন মুখে কুলুপ এটে রেখেছে। তবে, মুখ খুলেছেন শাহিদ খান, ’আগামী আট থেকে বারো সপ্তাহের মধ্যেই দুই পক্ষের চুক্তি করা সম্ভব।’
ইংলিশ ফুটবলে শাহিদ খান অপরিচিত নন। ইংলিশ প্রিমিয়ারে খেলা ফুলহ্যাম ফুটবল ক্লাবের মালিক তিনি। ২০১৩ সালে তিনি মিশরীয় ধনকুবের মোহাম্মদ আল-ফায়েদের কাছ থেকে ক্লাবটি কিনে নেন। শুধু কি তাই, তারও আগে ২০১২ সালে ৭৬ কোটি ডলারে আমেরিকান ফুটবল দল জ্যাকসনভিল জাগুয়ার্সের মালিক হন তিনি। তিনিই প্রথম জাতিগত সংখ্যালঘু আমেরিকান হিসেবে একটি ফুটবল ক্লাবের মালিক হন।
এবার হাত বাড়িয়েছেন ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম কেনার। শাহিদ খান স্টেডিয়ামের পেছনে ৬০০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করতে রাজী। আর বাকি ৩০০ মিলিয়ন পাউন্ড স্টেডিয়ামের হসপিটালিটি বিজনেসের কথা চিন্তা করে ব্যয় করতে চান। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হোম ভেন্যু কিনে নেওয়ার ব্যাপারে শাহিদ খান জানান, ‘আমার পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক। আমি জাগুয়ার্স, ফুলহ্যামের পাশাপাশি ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের মালিক হতে চেয়েছি। এফএ-কে এই প্রস্তাব দিয়েছি। আশা করছি ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হোম ভেন্যুকে আমার কাছে দেওয়ার চুক্তিকে এফএ ইতিবাচক বিষয় হিসেবেই নেবে।’
শাহিদ খান আরও যোগ করেন, ‘আমি আশাবাদি এফএ ৯০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামটির জন্য ৯০০ মিলিয়ন পাউন্ড চিন্তা করে দেখবে। আমার আগ্রহ ভেবে দেখবে। স্টেডিয়ামটির ঐতিহ্য সম্পর্কে আমি অবগত, আর সেখানে নতুন কিছু সংস্করণ করাটাও জরুরি। স্টেডিয়ামের ইতিহাস আর আইকনিক ব্যাপারগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করব।’
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামটির ২০০৩ সালে তৈরির কাজ শুরু হলেও তা শেষ হয় ২০০৭ সালে। ২০০২ সালের ডিসেম্বরে সেটি ভেঙে নতুন করে তৈরির কাজ করা হয়। ২০০৭ সালের ৯ মার্চ এই স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করা হয়। ১১ বছর আগে তৈরি স্টেডিয়ামটি নির্মাণে খরচ হয়েছিল ৭৮৯ মিলিয়ন পাউন্ড। সেটাই শাহিদ খান কিনে নিতে চাচ্ছেন ৯০০ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে।
সারাবাংলা/এমআরপি