বিজ্ঞাপন

তুষার-রাজ্জাকদের সঙ্গে নতুনের আবাহনও

April 28, 2018 | 2:28 pm

মোসতাকিম হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচে বেশ কয়েক বছর ধরেই একটা ব্যাপার নিয়মিত হয়ে গেছে। ব্যাটিংয়ে তুষার ইমরান আর বোলিংয়ে আবদুর রাজ্জাক, একদম ওপরের দিকে এই দুইটি নাম থাকবেই। এবারের বিসিএলেও সেটার ব্যতিক্রম হয়নি। সবচেয়ে বেশি রান লিটন দাসের হলেও ঠিক তার ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলেছেন তুষার। আর বোলিংয়ে রাজ্জাক সবার ধরাছোঁয়ার বাইরেই। তবে এবারের বিসিএল আশার আলো হতে পারে সম্ভাবনাময়দের নিজেদের সামর্থ্য জানান দেওয়ার উপলক্ষ হিসেবে। সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্তরা আভাস দিয়েছেন, তারা লম্বা রেসের ঘোড়া হতে পারেন।

এমনিতে এবারের বিসিএল ব্যাটসম্যানদের জন্য লাল গালিচা নিয়েই অপেক্ষা করছিল। চারটি দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের বেশির ভাগই সেঞ্চুরি পেয়েছেন। সবশুদ্ধ সেঞ্চুরি হয়েছে ৩৮টি, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চারটি তুষারের। তবে ২৭৪ রানের সর্বোচ্চ ইনিংস লিটনের, শেষ ম্যাচের এই ইনিংসে লিটন ছাড়িয়ে গেছেন তুষারকে। বিসিএলের ২০১৬-১৭ সালের আগের আসরে সেঞ্চুরি হয়েছিল ২৩টি, বোঝাই যাচ্ছে এবারের উইকেটে বোলারদের জন্য সাহায্য কমই ছিল।

তারপরও নতুন কয়েকজনের ধারাবাহিকতা নির্বাচকদের নজর কাড়তেই পারে। সাদমান ইসলাম বেশ কিছুদিন ধরেই নিয়মিত পারফর্ম করছেন। এইচপি দলের হয়ে আলো ছড়ানোর পর প্রিমিয়ার লিগ, বিসিএলেও ছিলেন উজ্জ্বল। ৬ ম্যাচে ৬২.৫০ গড়ে তার রান ঠিক ৫০০, তার চেয়ে বেশি রান আছে শুধু তুষার-লিটনের। বাঁহাতি এই ওপেনার নিজের দাবিটা জানিয়ে রেখেছেন ভালোমতোই।

বিজ্ঞাপন

সাদমানের সঙ্গে নিজের সামর্থ্য অনেক দিন ধরেই জানান দিয়ে যাচ্ছেন শান্তও। প্রিমিয়ার লিগে এবার সবচেয়ে বেশি রান ছিল তার। বিসিএলে সর্বশেষ চারটি ইনিংসের তিনটিতেই ফিফটি, বাকিটিতেও চল্লিশের ঘরে। তবে কোনো সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপটা থাকতেই পারে। সেজন্যই রান ৩৯০ এর বেশি হয়নি। তবে শান্ত জানান দিয়েছেন, তিনি ঠিক পথেই আছেন। বিসিএলের শীর্ষ দশে আছেন আরেক তরুণ জাকির হাসান। সর্বশেষ তিন ম্যাচে অবশ্য খেলা হয়নি। তবে প্রথম দিন ম্যাচেই একটি ডাবল সেঞ্চুরিসহ করে ফেলেছিলেন ৩৫৮ রান।

বোলারদের মধ্যে অবশ্য রাজ্জাকের আশেপাশেও কেউ নেই। ৪৩ উইকেট নিয়ে আরও একবার দেখালেন, সাদা পোশাকে এখনও তিনি তুলনারহিত। ২৯ উইকেট নিয়ে দুইয়ে আছেন সোহাগ গাজী, ১৮ উইকেট নিয়ে এর পরেই আছেন আবু জায়েদ। ১৪ উইকেট নিয়ে নিজের সামর্থ্য জানান দিয়েছেন তরুণ পেসার খালেদ আহমেদ। তবে শীর্ষ উইকেটশিকারীদের তালিকায় না থেকেও আরও কয়েকজন এর মধ্যেই নজর কেড়েছেন। ইয়াসিন আরাফাত ও শরিফুল ইসলাম, দুজনেই মিরপুরে আগুন ঝরিয়েছেন নর্থ জোনের হয়ে। মাত্র দুইটি ম্যাচ খেলেই শরিফুলের উইকেট ৯, একটি ম্যাচ খেলে ইয়াসিনের ৭। ইয়াসিন এখনো ২০ পেরুননি, শরিফুলের তো ১৭ও হয়নি। তবে দুজনেই আভাস দিয়েছেন, ঠিকমতো যত্ন নিলে কুঁড়ি একদিন ফুল হতে পারে।

সেই সৌরভ এবার ব্যাটে-বলে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছেন আরেকজন। আরিফুল হক অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশের ঘরোয়া লিগে নিয়মিত। তবে বল-ব্যাটে নিজের সত্যিকার অলরাউন্ড সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন এবার। ৬ ম্যাচে দুইটি সেঞ্চুরিসহ করেছেন ৩৫২ রান, আছেন আট নম্বরে। মিডিয়াম পেসে নিয়েছেন ১৬ উইকেট, বোলারদের মধ্যে আছেন চারে।

বিজ্ঞাপন

তবে বেশ কয়েকজন নিয়মিত মুখ এবার যেন একটু আড়াল হয়ে গেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্মার নাঈম ইসলাম এবারের বিসিএলে তেমন কিছু করতে পারেননি। অলক কাপালি ৬ ম্যাচ খেলেও করেছেন ২২০ রান, চার ম্যাচে ২১৪ রান করেছেন শাহরিয়ার নাফীস। তবে অভিজ্ঞ জুনাইদ সিদ্দিকী, মার্শাল আইয়ুবরা শীর্ষ দশেই আছেন, নিজেদের সামর্থ্যও প্রমাণ করেছেন।

রাজ্জাক ছাড়া ঘরোয়া লিগের বাকি পরীক্ষিত বোলাররা কমবেশি অনেকেই বিবর্ণ। বিশেষ করে বাঁহাতি স্পিনাররা একেবারেই হারিয়ে খুঁজেছেন নিজেদের। মোশাররফ হোসেন রুবেল, তাইজুল ইসলাম শীর্ষ দশে থাকলেও দুজনেরই গড় ৫০ এর ওপরে, সানজামুল ইসলাম তো ম্যাচই খেলার সুযোগ পেয়েছেন একটি। প্রথম ছয়ে রাজ্জাক ছাড়া নেই কোনো বাঁহাতি স্পিনার। সেই হিসেবে বরং শফিউল ইসলাম, ফরহাদ রেজা, আবু হায়দার রনিরা খারাপ করেননি। তবে বোলারদের গড় পারফরম্যান্স বলে দিচ্ছে, এখনো লম্বা দৈর্ঘ্যের ম্যাচে ব্যাটসম্যানদেরই রাজত্ব। সেটার কারণ উইকেট হোক বা অন্য কিছুই হোক।

 

সারাবাংলা/এএম/এমআরপি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন