বিজ্ঞাপন

মাউশির মহাপরিচালককে আদালত অবমাননার নোটিশ

October 30, 2022 | 2:20 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: উচ্চ আদালতের রায় অমান্য করা, আদালত অবমানার মামলার নির্দেশ না মানা এবং অসৎ উদ্দেশ্যে রায়ের অপব্যাখ্যা করায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদকে আদালত অবমানার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আবুবকর সিদ্দিক (রাজন)।

বিজ্ঞাপন

নোটিশে তিন দিনের মধ্যে মহাপরিচালককে রায় বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

রোববার (৩০ অক্টোবর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে পাঠানো নোটিশে বলা হয়, তিন দিনের মধ্যে মহাপরিচালক রায় বাস্তবায়ন না করলে নতুন করে আদালত অবজ্ঞা করার কারণে মামলা দায়ের করা হবে। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে দায়ের করা অবমাননার মূলতবি মামলাটি চালু করার কথাও বলা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের গত ২ অক্টোবরের চিঠিতে আদালতের নির্দেশনা না মেনে ইচ্ছাকৃতভাবে রায় অমান্য করে সুপ্রিম কোর্টের কর্তৃত্ব, মর্যাদা ও মহিমাকে ক্ষুন্ন করা হয়েছে। জনসাধারণের বিশ্বাসে সুপ্রিম কোর্টকে অবনমিত করা হচ্ছে। বিবাদির আচরণ আদলত অবমানার জন্য চরমভাবে দায়ি। আইন অনুযায়ী এর মোকাবিলা করতে হবে, যা শাস্তিযোগ্য।

বিজ্ঞাপন

নোটিশে আদালতের রায় উল্লেখ করে বলা হয়, ‘আবেদনকারীরা এখনও কোনও এমপিও পাচ্ছেন না। তাই আমরা বিবাদীদের ২০০৮ সালের ১২ নভেম্বর থেকে এমপিও ছাড়ের নির্দেশ দিচ্ছি। কারণ এটি আইন অনুসারে এটি তাদের প্রাপ্য।’ অথচ গত ২ অক্টোবরের অবমাননাকর চিঠিতে ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে রায়কে ভিন্নপথে পরিচালনা করতে রায়ের অপব্যাখ্যা করেছেন যে ‘অর্থাৎ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’ কিন্তু আদালত ২০১৭ সালের ৩১ মে’র রায় ও আদেশে এমপিও ঠিক করার ক্ষমতা কর্তৃপক্ষকে দেননি বরং আদালত আপনাকে ২০০৮ সালের ১২ নভেম্বর থেকে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আলীপুর মডেল কলেজের এমপিও ছাড় করার নির্দেশ দিয়েছেন।

নোটিশে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক চিঠিতে বলেছেন, শিক্ষকদের এমপিও ছাড় করা হলে হাজার হাজার মামলা হবে। মহাপরিচালকের এই বক্তব্যকেও আদালত অবমাননা হিসেবে উল্লেখ করেছেন আইনজীবী। নোটিশে বলা হয়, যখন সুপ্রিম কোর্ট কোনও রায় দেন, তখন সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষ সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রিম কোর্টকে সাহায্য করতে বাধ্য। আদালতের এই রায়ের পর তা না মানা চরম অবমানকর। এই বিষয়ে আপনার সামগ্রিক আচরণ আদালতের আদেশের অবমাননাকর এবং আদালতের চরম অবমাননার জন্য আপনি আইন অনুসারে তা মোকাবিলা করতে বাধ্য।

আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আবুবকর সিদ্দিক বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক রায়ের অপব্যাখ্যা ব্যাখ্যা করেছেন। উচ্চ আদালত রায়ে ২০১৭ সালের ৩১ মে’র রায়ে ২০০৮ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ১১ বছর সাত মাস ১৯ দিনের এমপিও ছাড় করতে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন। রায়ের সেই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরকে দুই দফা চিঠি দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের আইন উপদেষ্টাও রায় বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছেন। এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের ৭ জুলাইয়ের এমপিও বৈঠকেও বয়েকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু মহাপরিচলক রায়কে অসৎ উদ্দেশ্যে ভিন্ন পথে পরিচালিত করতে এর অপব্যাখা করে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন, যা আইন পরিপন্থী।

রায়ে মন্ত্রণালয় বা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের আইন অনুযায়ী এমপিওছাড়ের কর্তৃত্ব দেওয়া হয়নি। রায়ে নির্দিষ্ট এমপিও ছাড়ের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/জেআর/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন