বিজ্ঞাপন

কপ-২৭ এর সপ্তম দিনে গুরুত্ব পেল অভিযোজন এবং কৃষি

November 12, 2022 | 10:22 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আজ ১২ নভেম্বর জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৭ এর সপ্তম দিনকে অভিযোজন এবং কৃষি দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এই বিষয়ে মোট বারোটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যেগুলোর আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে কৃষি ক্ষেত্রের অভিযোজন গুরুত্ব পায়।

বিজ্ঞাপন

মিশরে চলমান জলবায়ু সম্মেলন থেকে এ তথ্য জানিয়েছেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।

অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘প্রথম অধিবেশনে কপ-২৭ এর FAST উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ উদ্যোগটির লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কৃষি এবং খাদ্যের জন্য আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। দ্বিতীয় অধিবেশনে মাল্টিস্টেকহোল্ডার ও মাল্টিসেক্টরাল উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়। এই উদ্যোগটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানবস্বাস্থ্য ও পুষ্টিঝুঁকি কমাবে। তৃতীয় অধিবেশনে Climate Response for Sustaining Peace উদ্যেগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। চতুর্থ অধিবেশন হয় মন্ত্রী পর্যায়ে যেখানে মূলত জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন আরও কীভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। পঞ্চম অধিবেশনে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে খরা এবং বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য পূর্বাভাস প্রদানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও তথ্য বিশ্লেষণ কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়।

ষষ্ঠ অধিবেশনে কীভাবে আধুনিক প্রযুক্তি জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়। সপ্তম অধিবেশনে ২০১৪ সালে মালবো ডিক্লারেশন এর পর থেকে আফ্রিকা ও আরব দেশগুলো খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তার ওপর আলোচনা করা হয়। অষ্টম অধিবেশনে জলবায়ু স্মার্ট-কৃষি এবং খাদ্য উৎপাদনের জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ভূমিকা এবং এক্ষেত্রে বেসরকারি ও বহুজাতিক মোবাইল কোম্পানিগুলো কীভাবে বিনিয়োগ বাড়াতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়। নবম অধিবেশনে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি স্মার্ট-কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং গ্রামীণ ক্ষুদ্র কৃষকরা সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার উপায় নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। দশম অধিবেশনে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বর্তমান খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির অবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়। একাদশ অধিবেশনটিও ছিল মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক, যেখানে মন্ত্রীরা উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের আলোকে কীভাবে Koronivia Joint Work on agriculture বাস্তবায়ন করা যায় তার ওপর মতামত প্রদান করেন। দিনের শেষ অর্থাৎ বারোতম অধিবেশনে মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত কীভাবে কৃষি সেক্টর বাড়ানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সেটি নিয়ে আলোচনা হয়।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত ভবিষ্যতের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৫১৫ জন সংসদ সদস্য নিয়ে গ্লোবাল অ্যাসেম্বেলি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ পৃথিবীকে আরও উন্নত করার ক্ষেত্রে আমরা একটি বিশাল পার্থক্য তৈরি করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘দেখুন, মাত্র এক বছরে আমরা কতদূর এগিয়ে গেছি। আমরা এখন ৫১৫ জন সংসদ সদস্যের একটি নেটওয়ার্ক।’

তিনি সহকর্মী সংসদ সদস্যদের একটি জীবাশ্ম জ্বালানি মুক্ত ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

ইন্দোনেশিয়ার সংসদ সদস্য মার্সি ব্যারেন্ডস বলেন, ‘আমরা ক্লাইমেট অ্যাকশনে যত বেশি দেরি করব, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা তত বেশি ব্যয়বহুল হবে।’

তিনি জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত ভবিষ্যৎ অর্জনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য বাজেটের জরুরি বিতরণ এবং পুনর্বিন্যাসের গুরুত্বকে তুলে ধরেছেন।

মিশরের সংসদ সদস্য সাহার আলবাজার বলেন, ‘এখন যেহেতু আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির বিপদগুলো বুঝতে পারি, তাই এখন জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার এবং জরুরিভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে স্থানান্তরিত হওয়ার সময় এসে গেছে। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে একটি জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত ভবিষ্যত মানুষ এবং সম্প্রদায়ের কাছে তাদের প্রাপ্য সম্পদের ওপর ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করবে।’

ফিলিপাইনের সংসদ সদস্য রিজা হোনটিভেরোস বলেন, ‘ফিলিপাইন প্রতি বছর মারাত্মক টাইফুন এবং গরম গ্রীষ্মের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এটি আমাদের জন্য জীবন ও মৃত্যুর বিষয়। তাই তিনি জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত জ্বালানি অর্জনের জন্য এবং তাদের বিপদগুলোকে সম্মান জানানোর জন্য জলবায়ু সংকটের জন্য সবচেয়ে দায়বদ্ধ ব্যক্তিদের নৈতিক দায়িত্বের ওপর জোর দেন।’

বিজ্ঞাপন

পেরুর সংসদ সদস্য মালাগা বলেন, ‘আমাদের আইন ও নীতিকে বিজ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে। তেল ও গ্যাস এখনও জীবাশ্ম জ্বালানি। এই চ্যালেঞ্জের ওপর জোর দিয়েছেন যে জলবায়ু চুক্তির আহ্বান সত্ত্বেও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা এখনও কমছে না, এমনকি লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এখনও অব্যাহত রয়েছে।’

সারাবাংলা/আরএফ/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন