মেয়েদের দিয়ে শুরু বাংলাদেশের ফুটসাল যাত্রা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: দেশে ফুটসালের অস্তিত্ব শুধু ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে’। জাতীয় পর্যায়ে ফুটসালের কোনও পুরুষ বা নারী দল নেই! তাই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ফুটবলের এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ কখনই অংশ নেয় নি। তবে, এবার এএফসি ফুটসাল চ্যাম্পিয়নশিপের মধ্য দিয়ে দেশের ফুটসাল যাত্রা শুরু হচ্ছে।

সেটা মেয়েদের হাত ধরেই। জাতীয় নারী সিনিয়র ফুটবল দল ও সাফ বয়সিভিত্তিক চ্যাম্পিয়ন দলের কয়েকজনকে নিয়ে ফাইফ-এ-সাইড ফুটবল টুর্নামেন্টের দল গঠন করা হয়েছে। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে মে থেকে ‍শুরু হওয়া এএফসি উইমেন ফুটসাল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিবে সাবিনা-কৃষ্ণা-মারিয়ারা।

দেশের পুরুষদেরই পৃথক কোনও ফুটসাল দল নেই। মেয়েদেরও নেই। যদিও বেশিরভাগ দেশের পুরুষ ও নারীদের পৃথক পৃথক ফুটসাল টিম আছে। বাংলাদেশের নেই। তারপরেও জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের নিয়েই ফুটসাল দল তৈরি ও অনুশীলন করানো হয়েছে চলতি মাসের ৭ তারিখ থেকে।

দেশের সেই অর্থে নেই কোনও ফুটসাল মাঠও। হ্যান্ডবল বা রোলারস্কেটিং বা বাস্কেটবল মাঠকেই ফুটসালের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে মেয়েরা গুলিস্তানস্ত শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী স্টেডিয়ামেই অনুশীলন করে যাচ্ছে ফুটসালে অনবিজ্ঞ বাংলাদেশ।

দলে ফুটসাল খেলার অভিজ্ঞতা আছে একমাত্র সাবিনার। এর আগে মালদ্বীপে ফুটসাল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিলেন জাতীয় দলের এই অধিনায়ক। তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দলগঠন ও অনুশীলন করানো হয়েছে।

এএফসির এই চ্যাম্পিয়নশিপে অভিজ্ঞতা নিতে আগামিকাল (সোমবার) বিকালে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবে ২০ জনের একটা দল। সেখানে ১৩জন নারী ফুটবলার।

ওমেন্স কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, জাতীয় দলের টিম ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু, ফুটসালের ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুন, জাতীয় দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলী থমাস সহ আরো অনেকে।

ওমেন্স কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, বাংলাদেশ কখনো ফুটসাল খেলেনি। আমরা খুব কম সময়ে প্রস্তুতি নিয়েছি। যেহেতু প্রথমবার তাই আমরা হয়তো বেশি কিছু প্রত্যাশা করতে পারি না। তবে আমরা ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো।

জাতীয় দলের কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন বলেন, ‘ফুটসাল নতুন খেলতে যাচ্ছি। আমাদের নতুন অভিজ্ঞতা হবে। অন্যান্য দলগুলো আগে থেকেই ফুটসাল খেলে। তাই আমরা অন্যান্য দেশের থেকে একটু পিছিয়েই থাকবো।’

আমাদের মহিলা ফুটবল এখন অনেক এগিয়ে গেছে। আশা করবো এই ফুটসালের মধ্যে দিয়ে আমাদের মেয়েরা আরোও এগিয়ে যাবো। আমাদের আগে ফুটসাল খেলার মতো তেমন কোন সুযোগ ছিল না। এখনকার সুযোগ কাজে লাগাতে পারবো বলে মনে করি। আমরা মুলত অভিজ্ঞতার জন্যই যাচ্ছি।

নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর ইচ্ছা সাবিনার, ‘আমরা এই টুর্নামেন্টে একেবারেই নতুন। আমরা প্রথমববার এমন টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছি। এবং আমরা জানি না যে আমাদের বিপক্ষ দলগুলো কেমন। তার পরেও আমরা দেশবাসীর মুখ উজ্জ্বল করার চেষ্টা করবো।’

চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপ বি-এ খেলছে বাংলাদেশ। এই গ্রুপে মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও চাইনিজ তাইপে আছে। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ২ মে প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। পরেরদিন ভিয়েতনামের বিপক্ষে। ৬ মে চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটি খেলবে বাংলাদেশ।

চারটি গ্রুপে ১৫ দল অংশ নিয়েছে এই টুর্নামেন্টে। প্রত্যেক গ্রুপের দুই দল শেষ আটে অংশ নিবে। বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সারাবাংলা/জেএইচ