বিজ্ঞাপন

দুইবার পিছিয়ে পড়েও এমবাপের হ্যাটট্রিকে ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে

December 18, 2022 | 11:46 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফাইনালের রাতটাই আইকনিক। ৩৬ মিনিটে দুই গোল করে ম্যাচের ৮০ মিনিট পর্যন্ত লিড ধরে রাখে আর্জেন্টিনা। তবে ৯৭ সেকেন্ডের ব্যবধানে কিলিয়ান এমবাপের জোড়া গোলে ম্যাচ ২-২ গোলে সমতায় ফিরল ফ্রান্স। শেষ ১০ মিনিটে আর কোনো দল কোনো গোল করতে না পারায় নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় ২-২ গোলের সমতায়। আর তাতেই ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আর অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে লিওনেল মেসির দুর্দান্ত এক গোলে বিশ্বকাপ জয়ের এক ধাপ দূরে তখন আর্জেন্টিনা। তবে লুসাইলে তখনও নাটকের অনেক বাকি। ম্যাচের ১১৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে এমবাপে হ্যাটট্রিক পূরণ করে আবারও ফ্রান্সকে ৩-৩ গোলে সমতায় ফেরান।

বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত সময়ের আর কেউ কোনো গোল করতে না পারায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালে পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে এগিয়ে নেন লিওনেল মেসি। এরপর ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে দারুণ এক প্রতি আক্রমণ থেকে ডি মারিয়ার গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। আর লিড ধরে রেখে প্রথমার্ধ শেষ করে আলবেসিলেস্তেরা।

বিজ্ঞাপন

দুইবার পিছিয়ে পড়েও এমবাপের হ্যাটট্রিকে ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে শুরু করে আর্জেন্টিনা। তিন মিনিটের মাথায় বাঁ দিক থেকে ডি মারিয়া দারুণ এক আক্রমণ করেন। এরপর বল ক্রস করেন ডি পলের দিকে। এরপর ডি পল ও মেসির দারুণ যুগলবন্দিতে দারুণ এক আক্রমণ সাজায় আর্জেন্টিনা। ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে ফ্রান্সের রক্ষণভাগের ওপর দিয়ে বল আলভারেজকে পাস দেন মেসি। তবে তা সহজেই তালুবন্দি করেন হুগো লরিস। অবশ্য এর আগে অফসাইডে ছিলেন আলভারেজ।

বিজ্ঞাপন

দুইবার পিছিয়ে পড়েও এমবাপের হ্যাটট্রিকে ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে

মিনিট দুই পরে বাঁ দিক থেকে হুলিয়ান আলভারেজ দারুণ এক ব্যাকহিলে বল দেন ম্যাক অ্যালিস্টারকে। আর ২৫ গজ দূর থেকে দারুণ এক শট নেন ম্যাক অ্যালিস্টার তবে তা সহজেই বুকে আটকে নেন হুগো লরিস। ১৪তম মিনিটে কয়েকজন খেলোয়াড়কে ড্রিবল করে ফ্রান্সের ডি বক্সের দিকে এগিয়ে গিয়ে ডি মারিয়াকে দারুণ এক পাস দেন মেসি তবে বল রিসিভের আগেই অফসাইডে ছিলেন ডি মারিয়া। আর তাতেই দারুণ এক আক্রমণ নষ্ট হয় আর্জেন্টিনার।

বিজ্ঞাপন

এরপর দুই দলই বেশ কিছু আক্রমণে করেও গোল পায়নি। তবে গোলের জন্য আর বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি আর্জেন্টিনার। ২১তম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠেন ডি মারিয়া। আর তাকে আটকাতে যান ওসমান দেম্বেলে তবে ডি মারিয়াকে আটকাতে না পেরে পেছন থেকে ধাক্কা দেন তাকে। আর তাতেই রেফারি সরাসরি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। আর স্পটকিক থেকে হুগো লরিসকে ভুল দিকে পাঠিয়ে বল জালে জড়িয়ে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেন লিওনেল মেসি।

২৭তম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠেন থিও হার্নান্দেজকে ফাউল করায় ফ্রিকিক পায় ফ্রান্স। সেখান থেকে ডি বক্সের ভেতর হেড করলেও গোল পায়নি ফ্রান্স। এরপর ফ্রান্স কয়েকটি আক্রমণের চেষ্টা করলেও আর পেরে ওঠেনি।

বিজ্ঞাপন

দুইবার পিছিয়ে পড়েও এমবাপের হ্যাটট্রিকে ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে

উল্টো ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে ডান দিকে বল পান লিওনেল মেসির। আর বল পেয়ে দুই ফ্রেঞ্চ খেলোয়াড়ের মধ্য থেকে থ্রু বল দেন মেসি। এরপর বল পেয়ে যান ম্যাক অ্যালিস্টার। আর বল পেয়ে শট না নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা ডি মারিয়াকে বল পাস দেন। আর ঠান্ডা মাথায় দারুণ শটে বল জালে জড়িয়ে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে এগিয়ে নেন ডি মারিয়া।

দুই গোল হজমের পরেই ম্যাচের ৪০তম মিনিটে অলিভিয়ের জিরুড আর ওসমান দেম্বেলেকে তুলে নেন দিদিয়ের দেশাম্প। আর এই দুইজনের বদলি হিসেবে মার্কোস থুরাম আর র‍্যানডাল কোলো মুয়ানিকে মাঠে নামান। তবে তাতেও প্রথমার্ধে আসেনি ফ্রান্সের সুসংবাদ। ওই দুই গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় দুই দল।

দুইবার পিছিয়ে পড়েও এমবাপের হ্যাটট্রিকে ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে

বিশ্বকাপ শিরোপা থেকে আর মাত্র মিনিট দশেক দূরে দাঁড়িয়ে আর্জেন্টিনা। ঠিক সেই মুহূর্তে ৭৯তম মিনিটে আর্জেন্টিনার ডি বক্সে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন মুয়ানি। আর তাকে পেছন থেকে ফাউল করেন নিকোলাস ওটামেন্ডি। রেফারি সরাসরি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। আর স্পটকিক থেকে দারুণ এক গোলে ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরান কিলিয়ান এমবাপে।

গোল করে উজ্জাপন না করে বল নিয়ে মধ্যমাঠে কিলিয়ান এমবাপে। এরপর মাত্র ৯৭ সেকেন্ডের ব্যবধান। বাঁ দিক থেকে আক্রমণে উঠে মার্কোস থুরামের পাস থেকে দুর্দান্ত এক ফিনিশিংয়ে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান কিলিয়ান এমবাপে। এতেই ফ্রান্স ২-২ গোলে সমতায় ফেরে।

এরপর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে দুই দলের কেউই গোল করতে পারেনি। তবে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের ঠিক শেষ মুহূর্তে ফ্রান্সের গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল লক্ষ্যে শট করতে পারেননি লটারো মার্টিনেজ। আর তাতেই অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-২ গোলেই। তবে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে ফিরেই আর্জেন্টিনার আরও এক ঝলক।

১০৮তম মিনিটে ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠে আর্জেন্টিনা। ডান দিক দিয়ে জোরালো শট নেন লটারো মার্টিনেজ। তবে তা রুখে দেন ফ্রেঞ্চ গোলরক্ষক। আর ফিরতি বল গোলমুখে পেয়ে দারুণ শটে বল জালে জড়িয়ে আর্জেন্টিনাকে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে নেন লিওনেল মেসি।

ঠিক যখনই মনে হচ্ছিল শিরোপা উঠলো মেসির হাতে। ঠিক তখনই বিপত্তি ঘটলো। ম্যাচের ১১৬তম মিনিটে কিলিয়ান এমবাপের শট ডি বক্সের ভেতর মন্টিয়েল হাত দিয়ে রুখে দেন। আর তাতেই ফ্রান্স পায় ম্যাচের দ্বিতীয় পেনাল্টি। স্পটকিক থেকে কিলিয়ান এমবাপে গোল করে ফ্রান্সকে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো সময় ফেরান তিনি। আর বিশ্বকাপ ফাইনালের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিক করেন এমবাপে।

ম্যাচের বাকি সময়ে আর কেউই গোল করতে না পারলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।

সারাবাংলা/এসএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন