বিজ্ঞাপন

ভারত বধের সম্ভবনা জেগেছে ঢাকা টেস্টে

December 24, 2022 | 5:01 pm

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট

দুই ইনিংস মিলিয়ে ঢাকা টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ১৪৫ রানের লিড দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ। টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে এই রান মোটেও বড় টার্গেট নয়। তবে এই পুঁজি নিয়েই ভারতকে ভড়কে দিয়েছে স্বাগতিকরা। আজ শেষ বিকেলে ভারত দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে নামলে ৩৭ রাানেই চার উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

তৃতীয় দিনের খেলা শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের স্কোর ৪৫/৪। অর্থাৎ ম্যাচ জিততে ভারতের আর পুরোপুরি ১০০ রান দরকার। হাতে ছয় উইকেট। ৩৭ রান তুলতে ফিরে গেছেন ভারতের প্রথম চার ব্যাটার লোাকেশ রাহুল, শুভমান গিল, চেতেশ্বর পুজারা ও বিরাট কোহলি। ফলে নিশ্চয় চাপে পরেছে সফরকারীরা।

তাছাড়া পিচে স্পিন ধরছে দারুণভাবে। বাংলাদেশি স্পিনার সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজ দারুণ টার্ন পাচ্ছেন। আজ ভারতের পতন হওয়া চার উইকেটের তিনটিই পেয়েছেন মিরাজ। ফলে ভারত বধের আশা করতেই পারেন বাংলাদেশি সমর্থকরা। ভারতের বিপক্ষে টেস্টে এখন পর্যন্ত জিততে পারেনি বাংলাদেশ।

শনিবার (২৪ অক্টোবর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে শুধু বাংলাদেশি স্পিনারদের রাজত্বই চলল। ১৪৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা ভারতের ইনিংসের প্রথম বলেই জোড়ালো আবেদন করেছিলেন সাকিব আল হাসান। আম্পায়ার আউট না দিলে পরে রিভিউও নেন বাংলাদেশি অধিনায়ক। উইকেট মিলেনি।

বিজ্ঞাপন

তবে সেই দফায় উইকেট না মিললেও সাকিব উইকেট পেয়েছেন এক ওভার পরেই। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে দারুণ এক টার্ন বলে লোকেশ রাহুলকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন সাকিব। বাকি গল্পটা মেহেদি হাসান মিরাজের। ছোট ছোট টার্নে ভারতীয় ব্যাটারদের নাকাল করে ছেড়েছেন বাংলাদেশি তরুণ স্পিনার।

দলীয় ১২ রানে মাথায় মিরাজের টার্নে পরাস্ত হন চেতেশ্বর পুজারা। সামনে পরা বল দ্রুত কুড়িয়ে নিয়ে স্ট্যাম্পিং করেছেন নুরুল হাসান সোহান। পরপর দুই উইকেট হারিয়ে লোয়ার অর্ডারের ব্যাটার অক্ষর প্যাটেলকে চার নম্বরে পাঠিয়ে দেয় ভারত। বাঁহাতি অক্ষর অবশ্য টিকেছেন। তবে অপরপ্রান্ত থেকে শুভমান গিল ও বিরাট কোহলিকে হারিয়েছে ভারত।

বিজ্ঞাপন

মিরাজের অফ স্পিন এগিয়ে আসা গিলের ব্যাটকে ফাঁকি দিলে সহজেই স্ট্যাম্পিং করেছেন নুরুল হাসান সোহান। ৩৫ বলে ৭ রান করে ফিরেছেন গিল। পাঁচে নেমে বিরাট কোহলি উইকেটে পরে থাকা চেষ্টা করেছেন। একের পর এক ডিফেন্স করে গেছেন ভারতীয় তারকা। সেটি করতেই গিয়েও মিরাজের বল সামলাতে পারেননি।

দলীয় ৩৭ রানের মাথায় মিরাজের দারুণ এক ডেলিভারি কোহলির ব্যাটের কানায় লাগে। শর্ট লেগে দাঁড়ানো মুমিনুল হক চিলের মতো ছোঁ দিয়ে ক্যাচ লুফে নেন। ২২ বল খেলে মাত্র ১ রান করে ফেরার পথে বাংলাদেশি ফিল্ডারদের দু’কথা শুনিয়েও গেছেন বিরাট কোহলি। সাকিব আল হাসানকে এগিয়ে গিয়ে কোহলিকে শান্ত করতে দেখা গেল।

তারপর আর কোনো ব্যাটারকে পাঠায়নি ভারত। শেষ বিকেলে পেসার জয়দেব উনাদকাটকে পাঠায় সফরকারীরা। আজ ৮ ওভার বোলিং করে ১২ রান খরচায় তিন উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। সাকিব ৬ ওভারে ২১ রান দিয়ে নিয়েছেন এক উইকেট।

এর আগে বিনা উইকেটে ৭ রানে দিনের খেলা শুরু করা বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস থেমেছে ২৩১ রানে। ওপেনার জাকির হাসানের ফিফটির পর শেষ দিকে ৭৩ রানের একটা ইনিংস খেলেছেন লিটন দাস।

বিজ্ঞাপন

আজ সকাল সকাল নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হককে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেছেন শান্ত। বল তার প্যাডে আঘাত হানলে পরে রিভিউ নিয়েও এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচতে পারেননি। ৩১ বলে ৫ রান করে ফেরেন।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার মুমিনুল হক সৌরভ ফেরেন তার খানিকক্ষণ পরই। মোহাম্মদ সিরাজের বলে ৫ রানে আউট হয়েছেন দলের ২৬ রানের মাথায়। ওপেনার জাকির অপর প্রান্তে অবিচল ছিলেন। সাকিবকে কিছুক্ষণ সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন জাকির। শুরুতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দে না থাকলেও উইকেটে সেট হয়ে বেশ ভালোই খেলছিলেন সাকিব।

কিন্তু ৩৬ বলে ১৩ রান করার পর হঠাৎ-ই ভুল করে বসলেন। জয়দেব উনাদকাটের স্লোয়ার বুঝতে পারেননি। শক্ত হাতে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্লোয়ার ডেলিভারি টাইমিং হয়নি। বল ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে বাতাসে ভেসে উঠে। ৫১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

প্রথম সেশনের শেষভাগে অক্ষার প্যাটেলে কাটা পরেছেন মুশফিকুর রহিমও। ব্যাক ফুটে খেলতে গিয়ে অক্ষারের স্পিন মিস করে ৯ রানের মাথায় এলবিডব্লিউ হয়েছেন মুশি। দলের রান তখন ৭০। শুরুতে একপ্রান্ত থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পরলেও অপরপ্রান্তে তরুণ জাকির হাসান অবশ্য দারুণ খেলছিলেন।

তামিম ইকবালের ইনজুরিতে সুযোগ পাওয়া জাকির চট্টগ্রাম টেস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। ‘আত্মঘাতি’ এক শট খেলে না ফিরলে ঢাকাতেও হয়তো সেঞ্চুরির দেখা পেতেন! ১৩৫ বল খেলে ৫টি চারের সাহায্যে ৫১ রান করে উমেশ যাদবের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল কাট করতে চেয়ে ক্যাচ তুলে দেন জাকির। মেহেদি হাসান মিরাজ ফিরেছেন খানিক বাদেই।

এরপর পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছিলেন লিটন দাস ও নুরুল হাসান সোহান। ভালো খেলতে থাকলেও দুজনের সপ্তম উইকেট জুটি বড় হয়নি। ২৯ বলে ২টি চার ১টি ছয়ের সাহায্যে ৩১ রান করা সোহান দৃষ্টিকটুভাবে স্ট্যাম্পিং হয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে।

তারপরই দ্বিতীয় ইনিংসের সেরা ৬০ রানের পার্টনারশিপটা গড়লেন লিটন-তাসকিন। তাসকিনের ব্যাটিং বেশ নজড় কেড়েছে। দলীয় ২১৯ রানের মাথায় মোহাম্মদ সিরাজের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন লিটন। তারপর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি বাংলাদেশ। ভারতের হয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন অক্ষর প্যাটেল। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

সারাবাংলা/এসএইচএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন