বিজ্ঞাপন

‘ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণেই বাংলাদেশ বদলে গেছে’

January 8, 2023 | 8:22 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ভারতের সঙ্গে গভীর সম্পর্কের কারণেই বাংলাদেশ বদলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে বাংলাদেশ সফরে আসা ভারতের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। কলকাতা থেকে ২৫ জন এবং আসাম ও গৌহাটি থেকে ৯ জন সাংবাদিক এ মতবিনিময়ে অংশ নেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশে এখন আকাশ থেকে কুঁড়েঘর দেখা যায় না। যে ছেলেটি ১৪ বছর আগে বিদেশে গেছে, সে ফিরে নিজের শহর চিনতে পারে না, নিজের গ্রাম চিনতে পারে না। মেঠোপথ এখন শুধু কবিতায় আছে, গ্রামে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বদলে গেছে। এই বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমাদের এই বদলে যাওয়ার পেছনে ভারতের সঙ্গে গত ১৪ বছর ধরে আমাদের যে সুসম্পর্ক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সম্পর্ক যে নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে, সেই গভীর সম্পর্ক আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে।’

কিন্তু বিরোধীদল বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সারা পৃথিবী আজ বাংলাদেশের প্রশংসা করে। কিন্তু আমাদের দেশের বিরোধীদলের রাজনীতিবিদরা দেখেও দেখে না, শোনেও শোনে না। তারা ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে গিয়ে বলে কোনো উন্নয়ন হয়নি। পদ্মাসেতু দিয়ে পার হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বলে কিছুই হয়নি। এই হচ্ছে আমাদের দুর্ভাগ্য।’

বিজ্ঞাপন

কাঁটাতারের বেড়া হৃদয়ের বন্ধনকে বিভক্ত করতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা দুই দেশের নাগরিক বটে, কিন্তু আমরা একই পাখির কলতান শুনি, একই নদীর অববাহিকায় আমাদের বেড়ে ওঠা, একই মেঘ বারি বর্ষণ করে। কাঁটাতারের বেড়া আমাদের এই বন্ধনকে বিভক্ত করতে পারেনি। কাঁটাতারের বেড়া আমাদের সংস্কৃতি ঐতিহ্য কৃষ্টি ভাষা, সবশেষে আমাদের ভালোবাসাকে বিভক্ত করতে পারেনি।’

‘আমাদের এই আত্মিক সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে একাত্ম হয়েছে ৭১ সালে। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ভারতের সেনাবাহিনীরও রক্ত ঝরেছে। আমাদের সঙ্গে ভারতের মানুষও কষ্ট স্বীকার করেছে। এক কোটির বেশি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। যতই কাঁটাতারের বেড়া দিক, রক্তের অক্ষরে লেখা হৃদয়ের এই বন্ধন কখনো বিভক্ত করা যাবে না।’

বাংলাদেশের বদলে যাওয়ার গল্প ভারতবাসীকে জানানোর জন্য দেশটির সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি সালাহউদ্দিন মোহাম্মদ রেজার সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় সভায় সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বশর মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশীষ সুর ও সাধারণ সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক, আসামের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনোজ কুমার গোস্বামী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস ও সিনিয়র সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

সফরের অনুভূতি প্রকাশ করে কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশীষ সুর বলেন, ‘অখণ্ড ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধে চট্টগ্রামের অবদান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে চট্টগ্রামের অবদান অনেক। আমরা বিষয়টি জানি। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামের সন্তান। তিনি ভারতের সাংবাদিকদের কাছেও অত্যন্ত প্রিয়জন। তিনি একজন বিদেশি রাষ্ট্রের তথ্যমন্ত্রী, এটা আমরা কখনোই ভাবি না। তিনি বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী হলেও উনার সঙ্গে আমাদের অন্তরের সম্পর্ক।’

আসামের সাংবাদিক প্রশান্ত রাজবণিক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো ছিল- দারিদ্র্য, সাম্প্রদায়িকতা, অশিক্ষা- সেগুলোকে তারা অতি কৃতিত্বের সঙ্গে কাটিয়ে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ আজ দারিদ্রের দেশ নয়, সাম্প্রদায়িক দেশ নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের যারা পক্ষ নিয়েছে তারাই দেশ শাসন করছে। বাংলাদেশ সুরক্ষিত থাকলে, ভারত সুরক্ষিত থাকবে, আসামও সুরক্ষিত থাকবে।’

এর আগে, সকালে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ভারতের সাংবাদিকদের নিয়ে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল ও ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আত্মাহুতির স্থান পাহাড়তলীর ইউরোপিয়ান ক্লাব পরিদর্শন করেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আইসি/আরডি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন